‘ফিরতে চাই’, আইএস ডেরা থেকে বাড়িতে ফোন আজমগড়ের ছেলের

‘‘আর পারছি না! আমাকে যে ভাবেই হোক, যত তাড়াতাড়ি হোক, দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাও। হাঁফিয়ে উঠেছি। খুব বোমা পড়ছে। এ দিক ও দিক থেকে ছুটে আসছে ক্ষেপণাস্ত্র। আর কিছু দিন এখানে থাকলে, হয়তো মরেই যাব!’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৫ ১৩:২৭
Share:

-ফাইল চিত্র।

‘‘আর পারছি না! আমাকে যে ভাবেই হোক, যত তাড়াতাড়ি হোক, দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাও। হাঁফিয়ে উঠেছি। খুব বোমা পড়ছে। এ দিক ও দিক থেকে ছুটে আসছে ক্ষেপণাস্ত্র। আর কিছু দিন এখানে থাকলে, হয়তো মরেই যাব!’’

Advertisement

দিন দু’য়েক আগেও সিরিয়া থেকে এই টেলিফোনটি এসেছিল উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে পরিবারের লোকজনের কাছে। গত এক সপ্তাহে সিরিয়ার নানা জায়গা থেকে অন্তত বার চারেক এমন টেলিফোন এসেছে ওই পরিবারের কাছে।

সিরিয়া থেকে বারে বারে তার বাবা-মাকে এমন টেলিফোন যে করে চলেছে, ২৮ বছরের সেই যুবক ছ’মাস আগে প্রচুর অর্থ আর ‘বিলাসবহুল জীবনে’র হাতছানিতে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গি হতে পৌঁছে গিয়েছিল তুরস্কে। সেখান থেকে সে চলে যায় সিরিয়ায়। রাক্কায় গিয়ে সে দিন দশেক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। বমি করে, মাথা ঘুরে গিয়ে বিছানায় পড়েছিল বেশ কিছু দিন।

Advertisement

মোটা মাইনে। বিলাসবহুল জীবন। এখানে ওখানে নিখরচায় বিমান যাত্রা। মিলবে সুন্দরী ইরাকি, সিরিয় বা, তুর্কি যুবতী। আর, দেশে ফেলে আসা পরিবারের লোকজনের জন্য প্রচুর দিনার। এই সবের হাতছানিতেই আজমগড় থেকে তুরস্কে পাড়ি দিয়েছিল ওই যুবক। দিল্লি থেকে ইস্তানবুল আর ইস্তানবুল থেকে রাক্কায় যাওয়ার বিমান-ভাড়ার টাকাটা বন্ধু-বান্ধব আর প্রতিবেশিদের কাছ থেকে ধার করে জোগাড় করেছিল সে। গিয়েছিল আইএস জঙ্গি হতে। ‘যোদ্ধা’ হতে। ইরাক, সিরিয়া ও তুরস্কের বিভিন্ন রণাঙ্গনে যুদ্ধ করতে।

কিন্তু, ছ’মাসেই ‘স্বপ্ন’ ছুটে গিয়েছে আজমগড়ের উচ্চমাধ্যমিক স্তর পেরনো যুবকের! মরে যাওয়ার ভয়ে এখন সে দেশে ফিরে আসতে পারলেই বেঁচে যায়! কিন্তু, পালিয়ে আসতে পারছে না। তাকে নজরে নজরে রেখেছে আইএসের মেজর, কর্নেল, কমান্ডাররা।

পড়ুন: আইএসের ব্যক্তি ঘাতকদের বিপদ রুখতে সমাজই ভরসা

ছেলেকে যে ভাবেই হোক, দেশে ফি্রিয়ে আনতে এখন তার বাড়ির লোকজন পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। গোয়েন্দা এজেন্সিগুলির কাছে দৌড়চ্ছেন। সরকারি কর্তাব্যক্তিদের ধরাধরি করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

কী ভাবে আইএসের রিক্রুট ম্যানেজারদের খপ্পরে পড়ল ওই যুবক?

লখনউয়ের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) দলজিত সিং চৌধুরী বলেছেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রায় বছরখানেক আগে, ওই যুবককে আইএসের ওয়েবসাইট সার্ফ করতে দেখে, তার সঙ্গে ফেসবুক ও ফোনে যোগাযোগ করে আইএসের রিক্রুট ম্যানেজাররা। ওই যুবককে প্রচুর অর্থের লোভ দেখানো হয়। উত্তরপ্রদেশ থেকে ওই যুবকই আইএসের ‘প্রথম রিক্রুট’। মূলত, তার জন্যই উচ্চমাধ্যমিকের পর আর লেখাপড়া করতে না পারা ওই যুবক তুরস্কে যেতে রাজি হয়ে যায়। যদিও, স্থানীয় স্তরে আগে তার কোনও ‘ক্রিমিনাল রেকর্ড’ ছিল না। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন বা, অন্য কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গেও তার কোনও দিনই কোনও সংশ্রব ছিল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন