বারাণসীতে আজ দ্বিতীয় পরীক্ষায় বসছেন মোদী

ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনের চিত্রনাট্যে অন্তিম ব্লকবাস্টারটির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে প্রাচীন জনপদ বারাণসী। আগামী কাল শেষ রাউন্ডের যুদ্ধে প্রবল মেরুকরণের আবহে বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর ‘শেষ যুদ্ধ’। উত্তেজনা, নিরাপত্তা এবং কমিশনের চোখ এড়িয়ে মেরুকরণের প্রচেষ্টাসবই তুঙ্গে। লড়াইটা অবশ্যই ত্রিপাক্ষিক। সাম্প্রতিক দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে হই চই ফেলে দেওয়া আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল এবং এখানকার ভূমিপুত্র কংগ্রেসের অজয় রাই লড়ছেন বারাণসী থেকেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৪ ০৩:২৩
Share:

ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনের চিত্রনাট্যে অন্তিম ব্লকবাস্টারটির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে প্রাচীন জনপদ বারাণসী। আগামী কাল শেষ রাউন্ডের যুদ্ধে প্রবল মেরুকরণের আবহে বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর ‘শেষ যুদ্ধ’। উত্তেজনা, নিরাপত্তা এবং কমিশনের চোখ এড়িয়ে মেরুকরণের প্রচেষ্টাসবই তুঙ্গে।

Advertisement

লড়াইটা অবশ্যই ত্রিপাক্ষিক। সাম্প্রতিক দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে হই চই ফেলে দেওয়া আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল এবং এখানকার ভূমিপুত্র কংগ্রেসের অজয় রাই লড়ছেন বারাণসী থেকেই। কিন্তু সম্প্রতি গোটা কাশী জুড়ে যে মোদী-ঝড় দেখা গিয়েছে, তা কতটা ভোটে রূপান্তরিত হয়, সে দিকেই নজর রাখছেন রাজনৈতিক শিবির তথা বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বও। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, এই লড়াই তাঁদের কাছে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা, মোদীর দিল্লি জয়ের জন্য উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের মতো গোবলয়ে আসন বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উত্তরপ্রদেশে ৫০টি বা তারও বেশি আসন বিজেপি পাবে কিনা, তা নির্ভর করছে এই শেষ রাউন্ডের ভোটে। ব্যক্তিগত ভাবে মোদী বারাণসীতে কত ভোট পেলেন, সেটিও তাঁর রাজনৈতিক আধিপত্যের উপর একটি সিলমোহর লাগাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

মেরুকরণ এবং নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করা নিয়ে পারস্পরিক দোষারোপ এবং চাপানউতোর চলছেই। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আপ ধারাবাহিক ভাবে অভিযোগ চালিয়ে আসছে যে ভোটারদের মন জয়ের জন্য বিজেপি নেতৃত্ব অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি টাকা এবং মদ সরবরাহ করছেন মানুষের মধ্যে। আপের দাবি, তারা অন্তত ৩০০টি স্পাই ক্যামেরা লাগিয়ে রেখেছে গোটা শহরে, যাতে ভোটের দিন কোনও বেআইনি কাজ করা না হয়। আপের অভিযোগের উপর ভিত্তিতে আজ স্থানীয় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অফিসারেরা বিজেপি-র বারাণসীর দলীয় অফিস তল্লাশিও করেছে। কমিশনের এক কর্তা সায়েক সিংহের বক্তব্য, “আমাদের কাছে খবর রয়েছে যে নির্বাচনী প্রচার শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বিজেপি-র তরফ থেকে ব্যাজ, প্যামফ্লেট, মোদীর ছবিওয়ালা টি শার্ট বিলি করা হবে।” বারাণসী কেন্দ্রটিতে কমিশনের সঙ্গে মোদীর দ্বৈরথ নতুন নয়। এর আগেও তাঁর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে--এমন কারণ দেখিয়ে সেখানে জনসভা করার অনুমতি পাননি মোদী। পাননি রোড শো করার ছাড়পত্রও। কিন্তু বিএইচইউ হেলিপ্যাড থেকে বারাণসী শহরের দলীয় দফতরে যাওয়ার পথটিকে মোদী রোড-শোতে পরিণত করে ছাড়েন। শহর সে দিন ভেসে গিয়েছিল মোদী আবেগে।

Advertisement

কালকের ভোটে যাতে কোনও আবেগই বাড়াবাড়ির পর্যায়ে না যায় সে জন্যও সতর্ক প্রশাসন ও কমিশন। ৪৫ হাজার নিরাপত্তা কর্মী দিয়ে ঘেরা বারাণসী এখন কার্যত দুর্গ। ঘটনা হল, ধর্ম এবং জাতপাতের জিগির তুলে বিজেপি তথা মোদীর যে হাওয়া চলছে বারাণসী তথা উত্তরপ্রদেশ জুড়ে, ঠিক বিপরীতে মুলায়ম এবং মায়াবতীও মুসলিম ভোটকে সংগঠিত করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন তাঁদের প্রচার জুড়ে। সে রাজ্যের রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, মোদীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এই ধর্মীয় মেরুকরণের ফায়দা মায়াবতীর থেকে কিছুটা বেশিই তুলতে পেরেছেন মুলায়ম। তবে শেষ হিসাবে কী হবে, তা এখনও অনিশ্চিত।

তবে এই প্রবল মেরুকরণের ভোটে কোনও অশান্তি যাতে ভোটের মধ্যে না ছড়ায় সেই আশঙ্কায় আজ রাত ভোর হচ্ছে বারাণসীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন