নতুন করে ময়না-তদন্ত করা হবে বদায়ূঁতে গণধর্ষিতা দুই কিশোরীর। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, তদন্তের প্রয়োজনেই দুই বোনের দেহ কবর থেকে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
বাড়িতে শৌচাগার না থাকায় গত ২৭ মে রাতে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিল বদায়ূঁর কাটরা সাদাতগঞ্জ গ্রামের দুই তুতো বোন। বড় জন ১৫ বছরের আর বোনের বয়স তার থেকে এক বছর কম। পরের দিন সকালে গাছ থেকে দু’জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তার পর থেকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ, রাজনৈতিক তরজা, বিতর্কিত মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্যের ঝড় কম দেখেনি দেশবাসী। ভারতে যে হারে নারী নির্যাতন বাড়ছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। এই পরিস্থিতির মধ্যেই বদায়ূঁ গণধর্ষণ-কাণ্ডের তদন্তভার নেয় সিবিআই।
ধৃত পাঁচ জনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা ওই দুই কিশোরীর বাড়ির চার জনেরও লাই ডিটেক্টর পরীক্ষা করান। তখনই প্রশ্ন ওঠে, তবে কি সিবিআইয়ের চোখে কোনও অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি এ এল বন্দ্যোপাধ্যায়ও খুনের পিছনে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের ইঙ্গিত করেছিলেন।
সিবিআইয়ের এক শীর্ষ কর্তা মঙ্গলবার জানান, ওই দুই বোনের পরিবারের লোকেদের কথা তাঁরা অবিশ্বাস করছেন না। কিন্তু ঘটনার বিবরণে বিস্তর ফাঁক থেকে গিয়েছে। কখন থেকে দুই বোনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তাদের ফোনগুলো কোথায় গেল, বাবা-মায়েরাই বা কখন ঘটনার কথা জানতে পারলেন এই প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি বাড়ির লোকজন।
সিবিআইয়ের গোয়েন্দাদের আরও অভিযোগ, দেহ উদ্ধারের পর প্রাথমিক ময়না-তদন্তের সময় কোনও নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করা হয়নি। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সূর্যাস্তের পর সুরতহাল করাই হয় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ময়না-তদন্ত করা হয়েছিল রাতে। রিপোর্টে ধর্ষণের কথা বললেও, জোরদার প্রমাণের উল্লেখ ছিল না তাতে।
এ সব কারণেই দেহগুলি তুলে নতুন করে ময়না-তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিবিআই। এর জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গড়ে স্থানীয় আদালতে আর্জি জানাবে তারা। অন্য দিকে একটি জনস্বার্থ মামলায় তদন্ত কত দূর এগোল, তার রিপোর্ট দিয়ে সিবিআইকে জানাতে বলে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। এ দিন মুখবন্ধ খামে তা জমা দেন গোয়েন্দারা।
বদায়ূঁ নিয়ে নতুন করে হইচইয়ের মধ্যেই ফের গণধর্ষণের ঘটনা সামনে এল উত্তরপ্রদেশে। ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় রবিবার তিন দলিত নাবালিকাকে সাত জন মিলে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। তিন অভিযুক্ত ধরা পড়লেও বাকিরা পলাতক। কাটরা গ্রামের মতোই এ ক্ষেত্রেও পুলিশ অপরাধীদের আড়াল করছে, অভিযোগ পরিবারের।