বরাক ও ত্রিপুরায় ভোট মিটল নির্বিঘ্নেই

নির্বাচনী প্রচারে বরাক উপত্যকায় সাধারণ মানুষের যতটা অনীহা দেখা গিয়েছিল, ততটাই আগ্রহ দেখা গেল আজ, ভোটের দিনে। সকাল থেকে বুথগুলিতে দীর্ঘ লাইন নজরে পড়ে। দুপুরে ৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্রায় অধিকাংশ বুথ ফাঁকা পড়ে থাকলেও বেলা পড়তেই ফের ভিড় বাড়ে বুথে বুথে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর ও আগরতলা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪০
Share:

ভোটের লাইনে জঙ্গিরা। সংঘর্ষ বিরতিতে থাকা কার্বি জঙ্গিদের একটি গোষ্ঠীর সদস্যরা এই প্রথম ভারতীয় গণতন্ত্রের ভোট যজ্ঞে সামিল হলেন। অসমের দিফুতে উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।

নির্বাচনী প্রচারে বরাক উপত্যকায় সাধারণ মানুষের যতটা অনীহা দেখা গিয়েছিল, ততটাই আগ্রহ দেখা গেল আজ, ভোটের দিনে। সকাল থেকে বুথগুলিতে দীর্ঘ লাইন নজরে পড়ে। দুপুরে ৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্রায় অধিকাংশ বুথ ফাঁকা পড়ে থাকলেও বেলা পড়তেই ফের ভিড় বাড়ে বুথে বুথে। বেশ কিছু ভোটকেন্দ্রে বিকেল পাঁচটার পরও ছিল ভোটারদের লম্বা লাইন। করিমগঞ্জ, শিলচর ও দিফু লোকসভা আসনে গড়ে ভোট পড়েছে ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ। তবে বামশাসিত ত্রিপুরার পূর্ব আসনটিতে রাজ্যের ঐতিহ্য মেনেই ভোট পড়েছে ৮২ থেকে ৮৩ শতাংশ। সেই হারও কাল চূড়ান্ত হিসেব পাওয়ার পর আরও কয়েক শতাংশ বাড়বে বলে নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের আশা।

Advertisement

ত্রিপুরার মুখ্য নির্বাচনী অফিসার আশুতোষ জিন্দাল বলেন, ‘‘সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পাওয়া হিসেবে ভোট পড়েছে ৮২-৮৩ শতাংশ। ২০০৯ লোকসভা বা গত বিধানসভার তুলনায় এই হার কিছুটা কম। আজকের ভোটও শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়েছে।’’ যুগ্ম মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দেবাশিস মোদক বলেন, ‘‘১৮টি অতি স্পর্শকাতর ভোটগ্রহণ কেন্দ্রেও নির্বিঘ্নে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা। উপস্থিতিও ভাল ছিল।’’ কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে কয়েকটি বুথে মোট ৪-৫টি ইভিএম যন্ত্র বিকল হয়ে যায়। কিন্তু সেগুলি সময় মতো পাল্টে দেওয়া হয়। ভোটগ্রহণে কোনও অসুবিধা হয়নি। দ্বিতীয় দফার ভোটকে কেন্দ্র করে রাজ্য নির্বাচন দফতরে কোনও অভিযোগও জমা পড়েনি বলে দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন। ত্রিপুরায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর বলেন, ‘‘আজকের ভোটও অবাধ ও নির্বিঘ্নে হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় আমরা অসন্তুষ্ট নই।’’ পূর্ব ত্রিপুরা আসনে কংগ্রেস প্রার্থী সচিত্র দেববর্মা জানান, ‘‘আজকের ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হয়েছে। অশান্তির খবর শুনিনি।’’ যদিও রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান রতন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া অন্য রকম। তিনি বলেন, ‘‘শহরে আধা-সেনাবাহিনীর বাহিনীর জওয়ান আর গ্রামাঞ্চলে রাজ্য পুলিশ দিয়ে বুথ সামলেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের এই ভূমিকায় সন্তুষ্ট নই। শাসক দলের সন্ত্রাসে ভীত মানুষ শ্মশানে, শান্তির পরিবেশে ভোট দিয়েছেন।’’

এ দিন শিলচরে ছ’টি এবং করিমগঞ্জ লোকসভা আসনের দু’টি বুথে ভোট বয়কট করেছেন ভোটাররা। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থার প্রতিবাদে সেখানকার ভোটাররা ভোট বয়কট করেন। এ ছাড়াও, ইভিএম গোলযোগের দরুন করিমগঞ্জের চারটি বুথে ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখতে হয়। তবে দিফু লোকসভা আসনে ভোটারদের মধ্যে শুরুতে তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি। গত কাল বিকেলে জঙ্গিরা অনির্দিষ্টকালের বন্ধ প্রত্যাহার করলেও মানুষ শঙ্কামুক্ত হতে পারেননি। তবে কোনও হিংসাত্মক ঘটনা না ঘটায় বেলা গড়াতেই ভোটারদের লাইন দীর্ঘ হতে থাকে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন