ভোট-প্রচারের আগেই ফেরার উপাচার্য ধৃত

প্রতারণায় অভিযুক্ত উপার্চাযকে ধরতে বিহারে গিয়ে তাজ্জব হয়ে গেলেন মেঘালয়ের সিআইডি অফিসাররা। তাঁরা জানতে পারেন, জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানার তোয়াক্কা না-করেই লোকসভা ভোটের প্রার্থী হয়ে গিয়েছেন চন্দ্রমোহন ঝা!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:১৫
Share:

প্রতারণায় অভিযুক্ত উপার্চাযকে ধরতে বিহারে গিয়ে তাজ্জব হয়ে গেলেন মেঘালয়ের সিআইডি অফিসাররা।

Advertisement

তাঁরা জানতে পারেন, জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানার তোয়াক্কা না-করেই লোকসভা ভোটের প্রার্থী হয়ে গিয়েছেন চন্দ্রমোহন ঝা!

শেষে বিহার পুলিশের সাহায্য নিয়ে প্রচার-সভায় যাওয়ার আগে তাঁকে পাকরাও করল মেঘালয়ের অফিসাররা। ‘ট্রানজিট রিমান্ডের’ অনুমতি নিতে আজই ধৃতকে আদালতে পেশ করা হয়। আগামীকাল চন্দ্রমোহনকে নিয়ে শিলং পৌঁছবেন সিআইডি অফিসাররা।

Advertisement

ডক্টরেট ডিগ্রি ‘বিক্রির’ অভিযোগে ২০১৩ সালের এপ্রিলে মেঘালয়ের চন্দ্রমোহন ঝা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন রাজ্যের তৎকালীন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভিজিটর’ রঞ্জিৎ শেখর মুশাহারি। তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তদন্তকারীরা জানান, ২০০৯ সালে স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে উত্তর-পূর্বের ৪৩২ জন ছাত্রছাত্রীকে ডক্টরেট ডিগ্রি দেয়। ডিগ্রি ‘কিনতে’ ৭০ হাজার থেকে দেড় লক্ষ টাকা দিতে হয়েছে। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ৪৯০ জনের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। অভিযোগ ওঠে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম না-মেনে ঢালাও ডক্টরেট ডিগ্রি দিচ্ছে সিএমজে বিশ্ববিদ্যালয়। মেঘালয় এবং অসমে এ নিয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। রাজ্যপাল নির্দেশ দেন, সিএমজে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রদত্ত ডক্টরেট ডিগ্রি যেন প্রত্যাহার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভুয়ো ডিগ্রি দেওয়ার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজির্স্ট্রার ও ডেপুটি রেজির্স্ট্রারকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

উপাচার্য তথা প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রমোহন ঝা গত বছর সেপ্টেম্বরে শিলংয়ের সদর থানায় আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু জামিন পেয়ে তিনি উধাও হয়ে যান। অন্তর্বতীকালীন জামিনের আবেদন করলেও, প্রথমে হাইকোর্ট এবং পরে সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করে।

গত ১০ এপ্রিল ঝায়ের বিরুদ্ধে ফের জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। তাঁকে গ্রেফতার করতে দু’দিন আগে শিলং থেকে সিআইডি অফিসাররা বিহারের মধুবনিতে যান। তাঁরা জানতে পারেন, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি ঝঞ্ঝারপুর লোকসভা কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। সেখানে ভোট হবে ৩০ এপ্রিল। তিনি নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত। স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নিয়ে গত কাল বিকেলে গোধনপুর চক থেকে ঝাকে গ্রেফতার করে মেঘালয়ের সিআইডি। তখন তিনি জনসভায় ভাষণ দিতে যাচ্ছিলেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, হলফনামায় চন্দ্রমোহন জানিয়েছেন, সিআইডি-র ওই মামলা ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে পটনার সিজেএম আদালত, পটনার আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত বিশেষ আদালত এবং শিলং-এ সিবিআইয়ের একটি মামলা ঝুলছে। তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন