মোদী-জমানায় দাঙ্গায় আক্রান্তদের জন্য ছাড়

গুজরাতে গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের জন্য গোয়েন্দা ব্যুরো ও কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর (সিআইএসএফ) চাকরিতে বিশেষ ছাড় দিল কেন্দ্র। এই পরিবারগুলির জন্য বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৫ বছর বাড়ানো হয়েছে। দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের সন্তান, তাঁদের উপরে নির্ভরশীল স্ত্রী বা স্বামী এই সুযোগ পাবেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৪ ০৯:০৪
Share:

গুজরাতে গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের জন্য গোয়েন্দা ব্যুরো ও কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর (সিআইএসএফ) চাকরিতে বিশেষ ছাড় দিল কেন্দ্র।

Advertisement

এই পরিবারগুলির জন্য বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৫ বছর বাড়ানো হয়েছে। দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের সন্তান, তাঁদের উপরে নির্ভরশীল স্ত্রী বা স্বামী এই সুযোগ পাবেন। অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে এই সুযোগ পাবেন তাঁদের উপরে নির্ভরশীল ভাই বা বোন। লোকসভা ভোটের আগে এই সিদ্ধান্তে প্রত্যাশিত ভাবেই মেরুকরণের রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছে বিজেপি।

সম্প্রতি গোয়েন্দা ব্যুরোর ৫১৪ জন সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ও সিআইএসএফের ১২৩ জন কনস্টেবল নেওয়ার জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। তাতেই ২০০২ সালের গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এই ছাড়ের কথা ঘোষণা করা হয়। সিআইএসএফে আবার এই সুযোগ দেওয়া হয়েছিল ১৯৮৪ সালের শিখ-বিরোধী দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকেও।

Advertisement

লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ২০০২ সালের দাঙ্গার জন্য তাঁকেই বার বার দায়ী করেছে কংগ্রেস। সেই মোদী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ায় এমনিতেই দেশে মেরুকরণের রাজনীতি শুরু হয়েছে বলে মনে করে সব দলই। তবে বিজেপি মেরুকরণ ছাপিয়ে গুজরাতে মোদী-জমানার উন্নয়নকে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ থেকে শুরু করে কংগ্রেসের প্রায় সব শীর্ষ নেতাই ২০০২ সালে মোদীর ভূমিকা নিয়ে সরব। এই বিজ্ঞাপনে কংগ্রেস সেই মেরুকরণের রাজনীতিকেই উস্কে দিতে চেয়েছে বলে মনে করছে বিজেপি।

শিখ ভাবাবেগ নিয়েও চিন্তায় আছে কংগ্রেস। ১৯৮৪ সালের শিখ-বিরোধী দাঙ্গা নিয়ে সম্প্রতি রাহুল গাঁধীর মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছিল তারা। অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরে সেনা অভিযানের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সাহায্যের কথা ফাঁস হওয়ায় সেই অস্বস্তি আরও বেড়েছিল। সিআইএসএফে চাকরির বিজ্ঞাপনে শিখদেরও কিছুটা তুষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।

বিজেপির এক নেতার বক্তব্য, “ওই ঘটনাগুলিতে ক্ষতিগ্রস্তদের কথা এত দিন পরে কেন্দ্রের মনে পড়ল কেন? আর মুজফ্ফরনগরে গোষ্ঠী সংঘর্ষের শিকার পরিবারগুলি কী দোষ করল?”

তাঁর কথায়, “দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যদি বিশেষ ছাড় দেওয়াই হয় তবে সব ক্ষেত্রেই সেই নিয়ম চালু করা উচিত।”

ওই নেতার মতে, স্পষ্টতই গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গা নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে কংগ্রেস। এটা কোনও ভাবেই স্বাস্থ্যকর নয়। তার উপরে গোয়েন্দা ব্যুরো ও সিআইএসএফ নিরাপত্তা রক্ষার কাজ করে। দাঙ্গার শিকার হিসেবে চিহ্নিত করে কাউকে সেখানে চাকরি দিলে প্রতিষ্ঠানগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না তা ভাবা প্রয়োজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন