যোজনা কমিশনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া। ছবি: পিটিআই।
যাওয়ার আগে নতুন সরকারের জন্য কিছু পরামর্শও দিয়ে রাখলেন মনমোহন সিংহ। আজ যোজনা কমিশনের শেষ বৈঠকে তাঁর সুপারিশ কেন্দ্রীয় অনুদানে চলা প্রকল্পগুলি ঢেলে সাজা হোক। খুঁটিনাটি বিষয়ে নাক গলানো থেকে সরে আসুক কেন্দ্র। এবং অসংখ্য ছোট ছোট প্রকল্পের বদলে নির্দিষ্ট কিছু বড় মাপের প্রকল্প নিক কেন্দ্র।
রাজীব গাঁধীর আমলে তিনি ছিলেন যোজনা কমিশনের উপাধ্যক্ষ। তার আগে কমিশনের সদস্য-সচিব হিসেবেও কাজ করেছেন। আজ অধ্যক্ষ হিসেবে শেষ বারের মতো যোজনা কমিশনে গিয়ে এই সংস্থার ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তিনি বলেন, নতুন সরকারে যোজনা কমিশনের উচিত অভিনব কিছু ভূমিকা নেওয়া। মনমোহন প্রশ্ন তোলেন, দুলিয়া বদলে গেলেও যোজনা কমিশন এখনও পুরনো পদ্ধতিতেই কাজ করে যাচ্ছে না তো?
অর্থনীতিতে মন্দার জন্য তাঁর সরকার পরিচালনার দিকেই অভিযোগ উঠেছে। তিনি কেন সেই ভাবে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে যাচ্ছেন না, তা নিয়েও কংগ্রেস নেতাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। আজ যোজনা কমিশনের বৈঠকে মনমোহন নিজেই স্বীকার করেছেন, আর্থিক সমৃদ্ধির পথে ফেরার কাজ এখনও চলছে। তবে এখনও অনেক কাজ বাকি। যোজনা কমিশনের সদস্যরা আজ প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার বা কারখানার উত্পাদন তেমন হারে বাড়ছে না। এই মরসুমে বৃষ্টি কম হওয়ার পূর্বাভাস থাকায় ফের খাদ্যশস্য-শাকসব্জির দাম বাড়তে পারে। যার ফলে আর এক দফা মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কাও রয়েছে। যোজনা কমিশনের পূর্বাভাস ছিল, দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী যোজনার পাঁচ বছরে গড় বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ ছোঁবে। এখন কমিশনের সদস্যরাই মনে করছেন, ওই হার ৬ শতাংশের ওপরে যাওয়া সম্ভব নয়।
যোজনা কমিশনের বিদায়ী উপাধ্যক্ষ মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া আজ জানিয়েছেন, বৃদ্ধির হার কোন দিকে যাবে, তা নতুন সরকারের নীতির ওপরই নির্ভর করবে। কিন্তু কমিশন এখনও পুরনো পদ্ধতিতেই কাজ করে চলেছে এ কথা মানতে চাননি তিনি। গত দশ বছরে তাঁর নেতৃত্বে যোজনা কমিশন কী কী কাজ করছে, সাত দিনের মধ্যে তার বিস্তারিত রিপোর্ট তিনি প্রধানমন্ত্রীকে দেবেন বলে জানিয়েছেন মন্টেক।