রাহুলের নীতিকে দুষছেন অনেকে

আভাস আগে থেকেই ছিল। তাই ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বড় অংশ অন্তত তেমন বিষ্মিত নন। তবে ফল প্রকাশের পরে রাহুল গাঁধীর জোট-বিরোধী ‘আত্মঘাতী পথকে’ ফের কাঠগড়ায় তুলতে শুরু করলেন কংগ্রেস নেতাদের একাংশ। ঝাড়খণ্ড ভোটের মনোনয়ন পেশ হওয়ার মাত্র চার দিন আগে সেখানে শিবু সোরেন তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-র সঙ্গে জোট ভেঙে দেয় কংগ্রেস। একলা চলার সিদ্ধান্ত নেন রাহুল গাঁধী। এমনকী সনিয়া-রাহুলকে বোঝাতে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন দিল্লি এসেও খালি হাতে ফিরে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৫
Share:

আভাস আগে থেকেই ছিল। তাই ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বড় অংশ অন্তত তেমন বিষ্মিত নন। তবে ফল প্রকাশের পরে রাহুল গাঁধীর জোট-বিরোধী ‘আত্মঘাতী পথকে’ ফের কাঠগড়ায় তুলতে শুরু করলেন কংগ্রেস নেতাদের একাংশ।

Advertisement

ঝাড়খণ্ড ভোটের মনোনয়ন পেশ হওয়ার মাত্র চার দিন আগে সেখানে শিবু সোরেন তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-র সঙ্গে জোট ভেঙে দেয় কংগ্রেস। একলা চলার সিদ্ধান্ত নেন রাহুল গাঁধী। এমনকী সনিয়া-রাহুলকে বোঝাতে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন দিল্লি এসেও খালি হাতে ফিরে যান। কংগ্রেস সহ-সভাপতির সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তখনই সমালোচনা হয়েছিল দলে। আর আজ দলের ওয়ার্কিং কমিটির একাধিক নেতা বলেন, আত্মহত্যারই সামিল ছিল সেই সিদ্ধান্ত। অথচ ভোটের ফলাফলেই স্পষ্ট যে জেএমএম-এর সঙ্গে জোট অটুট থাকলে আদিবাসী অধ্যুষিত এই রাজ্যে বিজেপির জয় এতো মসৃণ হত না। জবর লড়াই হতো দুই শিবিরে।

ঝাড়খণ্ড ভোটে এ বার ১৯টি আসন পেয়েছে জেএমএম। যা আগের বারের থেকে একটি বেশি। আর ৬টি আসন পেয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতাদের মতে, এর থেকেই স্পষ্ট, জোট থাকলে উভয়েরই আসন সংখ্যা বাড়ত। দলের এক ওয়ার্কিং কমিটির নেতার কথায়, ঝাড়খণ্ডে জোট থাকলেও কংগ্রেস-জেএমএম হয়তো এ বার সরকার গঠনের মতো আসন পেত না। সেটা বড় কথা নয়। আসল কথা হল, সে ক্ষেত্রে বিজেপি হয়তো নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারত না। জাতীয় রাজনীতিতে ‘মোদী রথের’ গতি শ্লথ হওয়ার একটা বার্তা অন্তত যেত। কিন্তু রাহুল বা তাঁর পরামর্শদাতাদের মাথায় তা ঢোকেনি।

Advertisement

যদিও রাহুল অনুগামীরা বলছেন, কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাজ্য নেতাদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিয়েছেন মাত্র। তাঁকে এ জন্য দায়ী করাটা ভুল হবে। দায়ী করা উচিত রাজ্য নেতাদের। রাহুল-ঘনিষ্ঠ এক নেতা বলেন, ঝাড়খণ্ডে জোট অটুট রাখারই পক্ষে ছিলেন রাহুল। কিন্তু ভোটের ঠিক আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুখদেব ভগত, প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ বালমুচু-সহ রাজ্য কংগ্রেসের নেতারা রাহুলের কাছে এসে জোট ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান। সেই দাবি মেনে নেন রাহুল।

তবে কংগ্রেস নেতাদের অনেকের মতে, রাজ্যে রাজ্যে হয়তো সুচিন্তিত ভাবেই একলা চলার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন রাহুল গাঁধী। কারণ, রাহুল মনে করেন রাজ্যস্তরে জোটে থাকার ফলে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে কংগ্রেসের সংগঠন দুর্বল হয়েছে। আর সেই কারণেই একলা চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তাঁর লক্ষ্য দীর্ঘমেয়াদে রাজ্যস্তরে কংগ্রেসের সংগঠনকে শক্তিশালী করা। তাই জোট ভাঙার সিদ্ধান্ত আপাত ভাবে আত্মঘাতী মনে হলেও রাহুলের এই কৌশলও একেবারেই যুক্তিহীন নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন