লক্ষ্য অভিষেক, মমতাকে জোড়া চাপ বিজেপির

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতিস্বীকারের চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে জোড়া চাপ দেওয়ার কাজ শুরু করল বিজেপি।লালবাহাদুর শাস্ত্রী সম্পর্কে কল্যাণ ঠিক যে মন্তব্য করেছিলেন, দলের যুব সংগঠনের সভায় ঠিক একই কথা বলেছিলেন মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত কাল চাপের মুখে কল্যাণ দুঃখপ্রকাশ করায় এ বার অভিষেককে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলল বিজেপি। আবার আজই পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘুদের উপরে তৃণমূলের আক্রমণের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সংখ্যালঘু কমিশন ও মানবাধিকার কমিশনকেও এই বিষয়ে সক্রিয় করতে চাইছে কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:১৪
Share:

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতিস্বীকারের চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে জোড়া চাপ দেওয়ার কাজ শুরু করল বিজেপি।

Advertisement

লালবাহাদুর শাস্ত্রী সম্পর্কে কল্যাণ ঠিক যে মন্তব্য করেছিলেন, দলের যুব সংগঠনের সভায় ঠিক একই কথা বলেছিলেন মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত কাল চাপের মুখে কল্যাণ দুঃখপ্রকাশ করায় এ বার অভিষেককে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলল বিজেপি। আবার আজই পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘুদের উপরে তৃণমূলের আক্রমণের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সংখ্যালঘু কমিশন ও মানবাধিকার কমিশনকেও এই বিষয়ে সক্রিয় করতে চাইছে কেন্দ্র।

কলকাতায় অমিত শাহের জনসভার এক দিন পরে শহিদ মিনার ময়দানে সমাবেশ করে তৃণমূল। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহকে আক্রমণ করেন তৃণমূলের যুব নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বলেন, “আমার বলতে লজ্জা হয়, সিদ্ধার্থনাথ লালবাহাদুর শাস্ত্রীর নাতি। লালবাহাদুর শাস্ত্রী যদি ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারতেন, তিনি যদি জানতেন, যে ৬০-৬৫ বছর পরে তাঁর পরিবারে এমন বংশধর জন্মাবেন, দায়িত্ব নিয়ে বলে গেলাম, লালবাহাদুর শাস্ত্রী বিয়ে করতেন না, অবিবাহিত থাকতে পছন্দ করতেন।” তার আগেও ভাঙড়ে একটি সভায় সিদ্ধার্থনাথকে একই ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন অভিষেক। কল্যাণ গতকাল দুঃখপ্রকাশ করার পরেও সর্বভারতীয় তৃণমূলের ওয়েবসাইটে অভিষেকের এই মন্তব্যটি এখনও দিব্যি রয়েছে। ওয়েবসাইটে আছে অভিষেকের ভিডিওটিও।

Advertisement

এর প্রেক্ষিতেই আজ সিদ্ধার্থনাথ বলেন, “যখন তৃণমূলের এক সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর করা মন্তব্যের জন্য সংসদে দুঃখপ্রকাশ করেছেন, তখন অভিষেকেরও উচিত ক্ষমা চেয়ে নেওয়া। তা না হলে দলের সাংসদরা এই বিষয়টি নিয়েও সংসদে সরব হবেন।”

বিজেপি সূত্রের মতে, কল্যাণ ক্ষমা না চাইলে তাঁকে আরও চাপ দিতে যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত বেঙ্কাইয়া নায়ডু, সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ারা লোকসভার ভিডিওগুলি দেখে রাখেন। যদি কল্যাণের বিরুদ্ধে অভিযোগ সংসদীয় কমিটির কাছে যেত, তাহলে সেখানে কল্যাণের কুকথার প্রমাণ পেশ করা হত। বিজেপির এক নেতার মতে, কল্যাণকে শায়েস্তা করে আসলে মমতাকেই বার্তা দিতে চাওয়া হয়েছে। কারণ, মমতাই তাঁর দলের এই নেতাদের পথপ্রদর্শক। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কোনও অপশব্দ বরদাস্ত করা

হবে না।

রক্তের স্বাদ পাওয়া বিজেপি মমতাকে অন্য পথেও চাপে রাখতে চাইছে। আজ সংসদ ভবনে বিজেপির সংসদীয় দলের ঘরেই সংখ্যালঘু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভির সঙ্গে দেখা করেন সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, বাবুল সুপ্রিয়, সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া ও শিশির বাজোরিয়া। বিজেপি নেতারা অভিযোগ করেন, এ বছরের ১৬ জুলাই থেকে পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার বাড়তে শুরু করেছে। শাসক তৃণমূলের ‘গুন্ডারা’ বেছে বেছে বিজেপির সদস্য বা সমর্থক সংখ্যালঘুদের উপরে হামলা করছে। তাতে মদত দিচ্ছে পুলিশও।

বিজেপি নেতারা দাবি করেন, মেদিনীপুর, হুগলি, বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনা, বীরভূমের মতো জেলাগুলি তৃণমূলের সন্ত্রাসের কবলে পড়েছে। অনেক গ্রামে ত্রাণ ও উন্নয়ন পৌঁছানোর জন্যও বিজেপি কর্মীদের ঢুকতে দিচ্ছে না পুলিশ। শুধু বীরভূমেই গত পাঁচ মাসে বিজেপির পাঁচ জন সংখ্যালঘু সদস্য খুন হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ১০০ জনেরও বেশি। ৫০টি পরিবার ঘরছাড়া।

এই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি দল পাঠানোর জন্য নকভির কাছে আর্জি জানান বিজেপি নেতারা। সেই আর্জি মেনে নিয়ে মন্ত্রী জানিয়েছেন, শীঘ্রই একটি দল পাঠানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন