লগ্নিতে পথ দেখাক সরকার, চায় শিল্পমহল

নতুন বিনিয়োগ করার জন্য এত দিন শিল্পমহলের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজ শিল্পমহলই পাল্টা দাবি তুলল সরকারই বরং নতুন লগ্নি করে পথ দেখাক। আগামী মাসেই মোদী সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট। তার আগে বিভিন্ন বণিকসভার সঙ্গে আজ বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জেটলি। সেখানেই শিল্পপতিরা বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির মধ্যে শুধুমাত্র ‘নবরত্ন’ সংস্থাগুলি (ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড, ভারত পেট্রোলিয়াম, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন ইত্যাদি) ২ লক্ষ কোটি টাকা নগদ হাতে নিয়ে বসে আছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৪
Share:

নতুন বিনিয়োগ করার জন্য এত দিন শিল্পমহলের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজ শিল্পমহলই পাল্টা দাবি তুলল সরকারই বরং নতুন লগ্নি করে পথ দেখাক।

Advertisement

আগামী মাসেই মোদী সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট। তার আগে বিভিন্ন বণিকসভার সঙ্গে আজ বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জেটলি। সেখানেই শিল্পপতিরা বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির মধ্যে শুধুমাত্র ‘নবরত্ন’ সংস্থাগুলি (ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড, ভারত পেট্রোলিয়াম, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন ইত্যাদি) ২ লক্ষ কোটি টাকা নগদ হাতে নিয়ে বসে আছে। সেই অর্থ লগ্নি হলে পরিকাঠামোর উন্নতি হবে। আর্থিক বৃদ্ধির হারও বাড়বে। বণিকসভা সিআইআই-এর সভাপতি অজয় শ্রীরাম বলেন, “আমরা বলছি না শুধু সরকারি লগ্নিই হোক। সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ, দু’টোই দরকার।” অ্যাসোচ্যামের সভাপতি রানা কপূরেরও যুক্তি, বেসরকারি সংস্থাগুলির ব্যালান্স-শিটের অবস্থা ভাল নয়। কাজেই সরকারের উচিত নবরত্ন সংস্থাগুলির হাতে যে অর্থ রয়েছে, তা লগ্নি করা। ঘটনাচক্রে, দিন কয়েক আগে একই যুক্তি দিয়েছিলেন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম। তিনি বলেছিলেন, বেসরকারি সংস্থার জন্য বসে না থেকে সরকারকেই লগ্নি শুরু করতে হবে। দিল্লির মসনদে সাত মাস কেটে যাওয়ার পরেও মোদী-জেটলির সবথেকে বড় দুশ্চিন্তা হল, নতুন লগ্নির বাজারে খরা। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদের চড়া হার অবশ্যই একটা বড় কারণ। তবে এর পাশাপাশি কর ব্যবস্থা নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে শিল্পমহলের। ক্ষমতায় আসার পর অন্তর্বর্তী বাজেটে রাজস্ব আয় বা রাজকোষ ঘাটতির যে লক্ষ্যমাত্রা জেটলি স্থির করেছিলেন, তা পূরণ করা এখন যথেষ্টই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে আগ্রাসী হয়ে কর আদায়ে নামতে হচ্ছে রাজস্ব দফতরকে। এ প্রসঙ্গে ফিকি-সভানেত্রী জ্যোৎস্না সুরির বক্তব্য, “আয়কর অফিসারদের রাজস্ব আদায়ের এমন উঁচু লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয় যে, তাঁরা অযৌক্তিক ভাবে করের দাবি তোলেন। শিল্পের উন্নতির জন্য অনুকূল কর প্রশাসন প্রয়োজন।”

‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে ইতিমধ্যেই দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলিকে ভারতেই কারখানা তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে সিআইআই-সভাপতির দাবি, কারখানায় উৎপাদন বাড়াতে হলে ‘ম্যাট’ (মিনিমাম অল্টারনেটিভ ট্যাক্স)-এর হার ১০ শতাংশেই বেঁধে রাখতে হবে। রফতানি বাড়ানোর জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলির উপর থেকে অবিলম্বে ম্যাট ও ডিডিটি (ডিভিডেন্ট ডিস্ট্রিবিউশন ট্যাক্স) তুলে দেওয়ার দাবি তুলেছেন রফতানিকারীদের সংগঠনের সভাপতি এম রফিক আহমেদ। আয়কর ও কর্পোরেট করের হার কমানোর দাবিও উঠেছে।

Advertisement

জেটলির যুক্তি, জিএসটি বা পণ্য-পরিষেবা কর চালু হলে কর ব্যবস্থায় অনেক স্বচ্ছতা আসবে। তবে কতকটা স্বীকারোক্তির মতোই তিনি বলেছেন, “আরও অনেক পথ হাঁটতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন