লড়াই জোরদার, নয়াদিল্লি সংলগ্ন অঞ্চলেও পুজোর প্রস্তুতি তুঙ্গে

আকাশে পেঁজা তুলোর আনাগোনা! বাইরের রোদ্দুরে পুজো পুজো গন্ধ। হাতে গোনা মাত্র কয়েকটা দিন। তোড়জোড় চলছে সর্বত্র। প্রবাসী বাঙালিরাও পিছিয়ে নেই। তবে প্রবাসের উৎসবের আবহটা কলকাতার থেকে একদমই আলাদা।

Advertisement

বর্ণালী চন্দ

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৫ ২০:২৪
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

আকাশে পেঁজা তুলোর আনাগোনা! বাইরের রোদ্দুরে পুজো পুজো গন্ধ। হাতে গোনা মাত্র কয়েকটা দিন।

Advertisement

তোড়জোড় চলছে সর্বত্র। প্রবাসী বাঙালিরাও পিছিয়ে নেই। তবে প্রবাসের উৎসবের আবহটা কলকাতার থেকে একদমই আলাদা। এখানে পুজো মানে রাত জেগে, মাইলের পর মাইল হেঁটে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে প্রতিমা দর্শনের উৎসাহ নেই। নিজেদের মণ্ডপে বসেই বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখাটাই বেশি পছন্দের প্রবাসী বাঙালিদের। সকাল থেকেই চলে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, তার সঙ্গেই চলে পুজোর অনুষ্ঠান। দুপুরে খাওয়া-দাওয়া, তার পর সামান্য বিরতি। আবার সন্ধ্যা হতে না হতেই শুরু হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, তাতে যেমন কলকাতা-মুম্বই-দিল্লির বড় শিল্পীরা থাকেন তেমনই থাকে স্থানীয় শিশু-মহিলা বা সদস্যদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান। আর তার জেরেই ব্যস্ত বৈশালী, বসুন্ধরা, ইন্দিরাপুরম, নয়ডা, ফরিদাবাদের মতো দিল্লি সংলগ্ন এলাকাগুলির (ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন বা এনসিআর-ভুক্ত এলাকা) সদস্যেরা।

দিল্লির বাঙালিরা আজ ছড়িয়ে পড়েছে গাজিয়াবাদ, নয়়ডা, ফরিদাবাদ, গুরগাঁওতেও। দিল্লির মতো বিরাট আকারে পুজো না হলেও এ সব অঞ্চলেও বেশ জাঁকজমকের পুজো হয়। কৌলিন্যের দিক থেকে সেই সব পুজো কোনও ভাবেই রাজধানীর পুজোর থেকে কম নয়। নিখুঁত আনন্দলাভ এবং একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার জন্য নিজেদের সেরাটাই দিতে চান সবাই। বাইরের শিল্পীদের অনুষ্ঠানও যেমন হয় তেমনই থাকে সদস্যদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান।

Advertisement

পুজো এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে বিজ্ঞাপনের একটা নিবিড় সম্পর্ক। চাঁদা তুলে বা মেম্বারশিপের টাকায় পুজোর পাঁচ দিনের বিশাল খরচ সামলানো সম্ভব নয়। তাই প্রয়োজন হয় বিজ্ঞাপনের। কিন্তু, আজকাল আর্থিক মন্দার জেরে কর্পোরেট হাউসগুলো এই ধরনের বিজ্ঞাপন কমিয়ে দেওয়ায় বেশ অসুবিধায় পড়েছে পুজো কমিটিগুলো। বড় পুজোগুলো কৌলিন্যের জোরে বিজ্ঞাপন জোগাড় করতে পারলেও সমস্যায় পড়েছে ছোট পুজোগুলি। ফলে তারা পুজোর বাজেট কমানোর দিকে নজর দিয়েছে। বাইরের বড় শিল্পীদের নিয়ে আসার পরিবর্তে স্থানীয় সদস্যদের নিয়েই অনুষ্ঠানের ওপর জোর দিয়েছে।

গাজিয়াবাদ, নয়ডা, ফরিদাবাদের কমিটিগুলি পুজোর পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানে নিজেদের সেরাটাই দিতে চায়। তাই চলছে জোরকদমে রির্হাসাল। ‘‘এ বার আমরা ইন-হাউস অনুষ্ঠানের উপর জোর দিয়েছি। তাই প্রতি বছরের মতো বাইরের নামকরা শিল্পী না এনে, নিজেরাই বিভিন্ন অনুষ্ঠান করছি। বাচ্চাদের অনুষ্ঠানের উপর জোর দিচ্ছি বেশি’’, জানালেন বসুন্ধরা কালীবাড়ির সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য। অন্য দিকে, ফরিদাবাদ কালীবাড়ির দুর্গাপুজো এ বার তিরিশ বছরে পড়ল। তাই তাদের জাঁকজমকও অনেক বেশি। স্থানীয় সদস্যদের অনুষ্ঠানের সঙ্গে রয়েছে কলকাতার নামী-দামি শিল্পীদের অনুষ্ঠানও। ফরিদাবাদ কালীবাড়ির তরুণ ভট্টাচার্য জানালেন, এ বারে কলকাতা থেকে ভূমি-র সুরজিৎ ছাড়াও লোপামুদ্রা মিত্র এবং রাঘব চট্টোপাধ্যায় আসছেন। ইন্দিরাপুরমের প্রান্তিক পুজো কমিটির প্রস্তুতিও তুঙ্গে। পঞ্চমীতে আনন্দমেলা দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু। প্রতি দিনই ঠাসা অনুষ্ঠান। বিনোদ রাঠৌর, কার্তিক দাস বাউল, দীপান্বিতা চৌধুরী, পাপড়ি মহাজনের মতো কলকাতা ও মুম্বইয়ের শিল্পীদের সঙ্গে রয়েছে স্থানীয় সদস্যদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান।

প্রস্তুতি তুঙ্গে, কারওরই আর ঘরে মন টিকছে না। বেশির ভাগ সময়ই কাটছে ক্লাবঘরে বা রিহার্সাল রুমে। অফিস বা ঘরের কাজ করতে হয় তাই করা, নয় তো মন পড়ে আছে নাটক বা গানের রিহার্সালে। এখন শুধু অপেক্ষা বোধনের!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন