গত বছরের শেষটা যেমন হয়েছিল, নতুন বছরের শুরুটাও ঠিক সে ভাবেই হল। গত কয়েক দিনের মতো আজও জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে ফের সংঘর্ষ-বিরতি লঙ্ঘন করল পাকিস্তান। পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতও। তবে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সূত্রে খবর, আজকের হামলায় কোনও পক্ষেই হতাহতের খবর মেলেনি।
গত তিন দিনে এই নিয়ে তৃতীয় বার সংঘর্ষ-বিরতি লঙ্ঘন করল পাকিস্তান। গত কালই পাক রেঞ্জার্সের ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল এক বিএসএফ জওয়ানের। আহত হয়েছিলেন অপর এক জওয়ান। তার পর ভারতীয় বাহিনীর পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় চার জন পাক জওয়ানের। কিন্তু তার পরও আক্রমণের রাস্তা থেকে সরে দাঁড়ায়নি পাকিস্তান। কাল সন্ধ্যার পরে ভারতীয় জওয়ানরা কিছু ক্ষণের জন্য গুলি বর্ষণ বন্ধ করেছিল। কারণ সীমান্তের ওপার থেকে সাদা পতাকা নাড়িয়ে গুলি বন্ধের সঙ্কেত দিয়েছিলেন পাক জওয়ানরা। কিন্তু রাত থেকে ফের গুলি চালাতে শুরু করে পাক রেঞ্জার্স বাহিনী।
বিএসএফের আইজি রাকেশ শর্মা আজ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সাম্বা সেক্টরের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর প্রায় ১৩টি পোস্ট লক্ষ করে কাল সারা রাত গুলি চালিয়েছে পাক রেঞ্জার্স বাহিনী। চুপ করে থাকেনি বিএসএফও। রাকেশ শর্মা জানান, আজ ভোর ছ’টা পর্যন্ত গোলাগুলি চলে। দুপুর থেকে ফের হামলা শুরু করে পাকিস্তান।
আজ খানিকটা হুমকির সুরেই রাকেশ বলেছেন, “ওরা আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। আমরা কিন্তু কড়া প্রত্যাঘাত করব। ওরা গুলি চালালে আমরাও বসে থাকব না। তাতে সীমান্তের ও-পারে ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। তার জন্য পড়শি দেশেরও প্রস্তুত থাকা দরকার।”
শর্মা জানান, সীমান্তের ও-পার থেকে প্রায় ৬০ জন জঙ্গি এ দেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। প্রতি বছরই শীতের মরসুমে তুষারপাতের সুযোগে এ দেশে জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। ইতিমধ্যেই কাশ্মীর উপত্যকার নানা এলাকায় বরফ পড়তে শুরু করেছে। তবে তাঁরা যে কোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত বলে জানান বিএসএফের আইজি। তাঁর কথায়, “ওরা যে কোনও মূল্যে সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢুকতে চাইছে। যে কোনও বড় ধরনের নাশকতা ঘটাতে ওরা প্রস্তুত। সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।” সুর চড়ান কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরও। আজ বেঙ্গালুরুতে তিনি বলেছেন, “বছরের প্রথম দিনেও শান্ত থাকতে পছন্দ করল না পাকিস্তান। তারা আজ দুপুরেও গুলি চালিয়েছে। ওদের কোনও শিক্ষা হবে বলে মনে হয় না।” আজ এক ধাপ এগিয়ে চিনের প্রসঙ্গও টেনেছেন তিনি। বলেছেন, “উত্তরে এমন দুই পড়শি পেয়েছি যারা কখনওই আমাদের সঙ্গে স্বচ্ছন্দ নয়।”