মঙ্গলবার পর্যন্ত তিহাড়েই সুব্রত রায়

সর্বোচ্চ আদালতে ফের খারিজ সহারার প্রস্তাব

সুদে-আসলে সব মিলিয়ে ফেরত দেওয়ার কথা প্রায় ৩৪,০০০ কোটি টাকা। অথচ ১৬ মাসের মধ্যে লগ্নিকারীদের টাকা ফেরানোর যে নতুন প্রস্তাব শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে পেশ করল সহারা, তার হিসেব দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৭,৪০০ কোটির। বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির আইনজীবীর মুখে এই অভিযোগ শোনামাত্র এ দিন টাকা ফেরতের নয়া পরিকল্পনা পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৪ ০৩:৫৫
Share:

সুদে-আসলে সব মিলিয়ে ফেরত দেওয়ার কথা প্রায় ৩৪,০০০ কোটি টাকা। অথচ ১৬ মাসের মধ্যে লগ্নিকারীদের টাকা ফেরানোর যে নতুন প্রস্তাব শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে পেশ করল সহারা, তার হিসেব দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৭,৪০০ কোটির। বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির আইনজীবীর মুখে এই অভিযোগ শোনামাত্র এ দিন টাকা ফেরতের নয়া পরিকল্পনা পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে, তাদের বিশেষ বেঞ্চের সামনে এমন এক বিভ্রান্তিকর ভুল প্রস্তাব পেশ করার বিষয়টিকে অপমানজনক আখ্যা দিয়ে সংস্থাকে তীব্র ভর্ৎসনাও করেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সুব্রত রায়ের গোষ্ঠীর প্রতি সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের নির্দেশ, আগামী মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানিতে যেন একটি ‘সম্মানজনক’ পরিকল্পনা দাখিল করা হয়। আর তত দিন পর্যন্ত সহারা কর্তাকে থাকতে হবে তিহাড় জেলের কুঠুরিতেই।

Advertisement

শুক্রবার অবশ্য দিনের শুরুটা হয়েছিল কিছুটা অন্য মেজাজে। সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ শুনানি শুরু হওয়ার পরই বিচারপতি রাধাকৃষ্ণন সহারা গোষ্ঠীর জমা দেওয়া লগ্নিকারীদের টাকা ফেরানোর নতুন পরিকল্পনাটি দেখেন। যেখানে বলা হয়েছিল, গোষ্ঠী আগামী তিন দিনের মধ্যে নগদ ২,৫০০ কোটি টাকা জমা দিতে তৈরি। বাকি ১৪,৯০০ কোটি ২০১৫-র জুলাইয়ের মধ্যে পাঁচ কিস্তিতে মেটানো হবে।

আইনি চাপের কাছে মাথা নত করে মাত্র ১৬ মাসেই টাকা ফেরানোর এই প্রস্তাব সম্ভবত কিছুটা আশ্বস্ত করে রাধাকৃষ্ণনকেও। যে কারণে সেটি পড়ার পরেই তাঁর প্রথম মন্তব্য, “প্রথম কিস্তির অঙ্ক বেশ আকর্ষণীয়।’’ এর পর সহারার আর্জি মাফিক, বিশেষ বেঞ্চ বসিয়ে প্রস্তাবের পর্যালোচনা করতেও রাজি হয়ে যান তিনি।

Advertisement

এর পরই দুপুর দেড়টা নাগাদ সহারা-সেবি মামলার শুনানির জন্য বসে বিচারপতি রাধাকৃষ্ণন ও জে এস খেহরের বিশেষ বেঞ্চ। আর সেই সঙ্গে বদলাতে থাকে সকালের দিকে তৈরি হওয়া প্রাথমিক স্বস্তির আবহটা। সংস্থার পরিকল্পনায় ফেরত দিতে চলা টাকার অঙ্কটাই অনেক কম দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন সেবির আইনজীবী। যা শুনে তৎক্ষণাৎ প্রস্তাবটি বাতিল করে দেয় ক্ষুব্ধ বেঞ্চ। সংস্থাকে এক হাত নিয়ে তারা বলে, “বিষয়টি শুনানির জন্য আমাদের কাছে বিশেষ বেঞ্চ বসানোর আর্জি জানালেন। অথচ একটা যথাযথ পরিকল্পনা পেশ করতে পারলেন না! এটা উচিত হয়নি। যা শীর্ষ আদালতের পক্ষে অত্যন্ত অপমানজনক।”

এ ক্ষেত্রে অবশ্য আত্মপক্ষ সমর্থনে অর্থের অভাবের বিষয়টি তুলে ধরেছেন সহারার তরফে হাজির আইনজীবীরা। তাঁরা জানান, সুব্রতবাবুই সব টাকা-পয়সা সামলান। প্রয়োজনে তহবিল জোগাড়ের ক্ষমতা একমাত্র তাঁরই আছে। সুতরাং এর থেকে বেশি অর্থ এই মুহূর্তে অন্য কারও জোগাড় করা সম্ভব নয়। আর এখন সহারা কর্তা বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকায় তাঁর সঙ্গে কেউ দেখাও করতে পারছেন না। যা শুনে বেঞ্চের ক্ষুব্ধ প্রশ্ন, “গত দেড় বছর ধরে তো সুব্রতবাবু জেলে ছিলেন না। মাত্র কয়েক দিন আছেন। তা হলে?” তবে এ সমস্যার সমাধান করেছে বেঞ্চ। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সুব্রতবাবুর আর্থিক উপদেষ্টা ও আইনজীবী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন বলেও এ দিন নির্দেশ দিয়েছে তারা। অবশ্য একই সঙ্গে সহারার প্রতি বিচারপতিদের স্পষ্ট বার্তা, “যা-ই কিছু হোক না কেন, টাকা ফেরত দেওয়া ছাড়া আর অন্য কোনও পথই এখন খোলা নেই সহারার সামনে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন