দেশ জুড়ে লোকসভা ভোটের প্রচার চলছে পুরোদমে। তার মধ্যেই জিএমআর সংস্থার ১১ জন পাইলট এবং ছ’জন বিমানকর্মীকে বসিয়ে দিল দেশের বিমান পরিবহণের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। এতে ধাক্কা খাচ্ছে ভোটের প্রচারও। কেননা অনেক প্রার্থীই ছোট বিমানে প্রচারে যান। কিন্তু পাইলটের অভাবে অনেক ছোট বিমানই বসিয়ে রাখতে হচ্ছে।
নরেন্দ্র মোদী, সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধীরা প্রধানত জিএমআরের ছোট বিমানে চেপেই নির্বাচনী প্রচারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে সংস্থা সূত্রের খবর। মঙ্গলবার রাতে ডিজিসিএ-র ওই নির্দেশের পরে বুধবার দিনভর ভোটের প্রচার মার খেয়েছে। কারণ, বিমান প্রস্তুত থাকলেও পাইলটের অভাবে তা উড়তে পারেনি। বুধবার রাতে সংস্থার তরফে জানানো হয়, যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। মিটে গিয়েছে। সংস্থার দাবি, বুধবার রাতেই ছ’জন পাইলটকে কাজে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ডিজিসিএ হঠাৎ এত জন পাইলট ও বিমানকর্মীকে বসিয়ে দিল কেন?
পাইলট ও বিমানকর্মীদের মদ্যপান সংক্রান্ত পরীক্ষা এবং তার রিপোর্ট নিয়েই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। ডিজিসিএ-র নিয়ম অনুযায়ী ককপিটে বসার ১২ ঘণ্টা আগে থেকে পাইলটদের মদ্যপান নিষিদ্ধ। দেশের সব বিমান সংস্থার সব পাইলটই নিয়ম মানতে বাধ্য। তা সে নিয়মিত যাত্রী নিয়ে উড়ে বেড়ানো বিমান সংস্থার পাইলটই হোন বা ছোট বিমান ভাড়া দেওয়া ছোটখাটো সংস্থার পাইলট। বিমানকর্মীদের ক্ষেত্রেও ওই নিয়ম প্রযোজ্য। পাইলট-বিমানকর্মীরা সেই নিয়ম মেনে চলছেন কি না, প্রতিটি উড়ানের আগে এক ধরনের মেশিনে ফুঁ দিয়ে তার পরীক্ষা দিতে হয়। সেই যন্ত্রকে বলে ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’। সব বিমান সংস্থার কাছেই সেই মেশিন ও পাইলটদের পরীক্ষার জন্য চিকিৎসক থাকা বাধ্যতামূলক। ওই পরীক্ষার রিপোর্ট না-মেলায় কিছু পাইলট ও বিমানকর্মীকে বসিয়ে দেওয়া হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট অমিল কেন?
ব্রেথ অ্যানালাইজারে পরীক্ষার পরে প্রিন্ট-আউটে রিপোর্ট পাওয়া যায়। জিএমআরের কাছে থাকা ব্রেথ অ্যানালাইজার মেশিনে পরীক্ষা ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু প্রিন্ট-আউট বেরোচ্ছিল না। সংস্থার কর্তারা বলেন, “তা বলে পরীক্ষা হচ্ছিল না, এমনটা ভাবার কারণ নেই। ভিভিআইপি-দের নিয়ে ওড়ার আগে সংশ্লিষ্ট পাইলট বা বিমান সংস্থা নিয়ম মানবে না, এমন ধারণার কারণ নেই।” বুধবার রাতেই ডিজিসিএ-কে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে সংস্থার দাবি।