অভিনেত্রী সন্দীপ্তা সেন। —ইনস্টাগ্রাম।
পুজো মানেই আমার কাছে কলকাতা, বন্ধুবান্ধব, পরিবার, জমিয়ে খাওয়া আর দেদার আড্ডা। ভবানীপুরে বড় হয়েছি। বাড়ির পাশেই হরিশ পার্ক। যত আকর্ষণ ছিল ওখানেই। চোখ চলে যেত উঁচু নাগরদোলা, ময়ূরপঙ্খী নৌকোর রাইডের দিকে। দুর্গাপুজো মানে আমার কাছে ছিল, প্রতি দিন রাইড চড়া, উত্তেজনা, রোমাঞ্চ। আমি এত বার সেই সব রাইড চাপতাম, শেষের দিকে আমাকে ফ্রি-তে বাড়তি সময় চাপতে দেওয়া হত, কী যে ভাল লাগা ছিল সেই দিনগুলিতে!
পঞ্চমীর সাজে অভিনেত্রী সন্দীপ্তা সেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
এখনও ভীষণ মিস করি সেটা। সুযোগ পেলে সদ্বব্যহারও করি। গত বছরে পার্ক সার্কাসে গিয়ে ‘জায়ান্ট হুইল’, ‘ডিস্কো ডান্স’ চড়েছিলাম। তবে, এই বছর সময় হল না।
আসলে হিন্দি সিরিজ় ‘সম্পূর্ণা’র শুটিংয়ের জন্য চণ্ডীগড়-কলকাতা যাতায়াত করতে হচ্ছে প্রায়ই। ওয়েব সিরিজ ‘নষ্টনীড়’-এর অনুসরণে টেলি-সিরিজটি সম্প্রচারও শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই কারণে, পুজোয় কিছুটা ব্যস্ততা। তা বলে পুজোয় কলকাতায় থাকব না, তা হয় না।
পঞ্চমী, ষষ্ঠী— দু’দিনেই যতটা মজা করা যায়, করেছি। পঞ্চমীতে পুজো পরিক্রমার সময়েই ঠাকুর, মণ্ডপ দেখা হয়েছে বেশ কিছু। যদিও আগের মতো আর আলাদা করে ঠাকুর দেখতে যাওয়া হয় না। তবে, আবাসনে পুজো হয়, সকলে মিলে সেখানেও আনন্দ করি। পরিবারের সকলের জন্য কেনাকাটা, টুকিটাকি কাজ— আর দেদার আড্ডা এ ভাবেই কাটল এই বছরের শারদোৎসব। সপ্তমীটা কাটবে পরিবার, বরের সঙ্গে। বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।
পুজো মানেই নতুন পোশাক, আগে গুনতাম, কটা হল। এখন অবশ্য ততটা হয় না। কারণ, বছরভর কেনাকাটা চলেই। তবে দুর্গাপুজোয় নতুন জামার গন্ধের আলাদা ব্যপার থাকে। বাবা, মা, সৌম্য— সকলে কী পোশাক দিচ্ছে, আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি। মা যেমন এই বছর সালোয়ার-কামিজ দিয়েছে।
দুর্গাপুজো মানেই ঢাকের বোল, শরতের শিউলি আর জমিয়ে ভূরিভোজ। বাঙালি খাবার আমার খুবই পছন্দের। পুজোয় অবশ্য ডায়েট নয়। সকলে মিলে জমিয়ে ভূরিভোজ চলে। মায়ের হাতের মটন কারি খুব পছন্দের। তবে পুজোর দিনগুলিতে মা-কে রান্নাঘরে যেতে দিই না। বরং পছন্দের রেস্তরাঁয় গিয়ে একেক দিন একেক রকম খাওয়া-দাওয়া হয়।
দুর্গাপুজোয় বেড়াতে গিয়েছি মাঝেমধ্যে। শুরুর দিকটা কলকাতায় থাকতাম, তার পর অষ্টমীতে বেরিয়ে যেতাম। আসলে শারদোৎসবের সময় লম্বা ছুটি থাকে বলে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করি। তবে এই বছর সেটা হচ্ছে না। ছোটবেলা বা দুর্গাপুজো— কিছুটা বদলে গিয়েছে। কিছুটা রয়েছে আগের মতো। যেমন ফুচকা খাওয়া। তবে, আগের মতো কোনও জিনিস ফিরে পেতে ইচ্ছা হওয়ার প্রসঙ্গ উঠলে বলব, নাগরদোলা, রাইডস চাপার মজাটা ফেরত পেতে চাই। আবার যদি সেগুলি ফিরে পেতাম, চাপতে পারতাম, খুব ভাল লাগত। আর বার বার চাপছি বলেই যদি কিছুটা বাড়তি সময় নাগরদোলা চাপতে দেওয়া হত, বড্ড ভাল লাগত। আসলে এই মজাটা ঠিক ফুচকা খাওয়ার পরে শেষে ফ্রি পাওয়ার মতো। অনাবিল এক আনন্দ মিশে থাকে এতে।
(সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অনুলিখিত)