দুর্গাপুরের দ্য মিশন হাসপাতালে কর্মশালা। ছবি: বিকাশ মশান।
অপেক্ষাকৃত সরু ক্যাথিটার ব্যবহার করে এ বার কব্জিতে থাকা রেডিয়াল আর্টারির মাধ্যমে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা অনেক সহজ হবে বলে মনে করছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞেরা। দুর্গাপুরের ‘দ্য মিশন’ হাসপাতালে এই সরু ক্যাথিটার ব্যবহার করে ‘স্লেন্ডার ট্রান্সরেডিয়াল অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি’র কর্মশালা শুরু হয়েছে শনিবার থেকে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, পুরনো পদ্ধতিতে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হত কুঁচকিতে থাকা ফিমোরাল আর্টারি ব্যবহার করে। প্রচলিত এই পদ্ধতিতে রক্তপাতের সম্ভাবনা বেশি। অনেক সময় প্রস্রাবের সমস্যাও দেখা দেয়। ফলে কব্জির রেডিয়াল আর্টারি ব্যবহার করে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করানোর পক্ষে ছিলেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু পূর্ব ভারত-সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নানা দেশের রোগীদের আর্টারি জন্মগত কারণেই সরু। ফলে, সমস্যা ছিলই। এত দিনে সরু ক্যাথিটার ব্যবহারে তা দূর হল।
ওই হাসপাতালের চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বসু বলেন, “এই কর্মশালায় আগ্রহী চিকিৎসকেরা হাতেকলমে বিষয়টি শেখার সুযোগ পাচ্ছেন। রেডিয়াল আর্টারি ব্যবহার করে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি প্রায় যন্ত্রণাহীন। রক্তক্ষরণের ভয়ও নেই। বিশেষ করে স্থূলকায়দের ক্ষেত্রে মেদের গভীরে ডুবে থাকা ধমনী খুঁজে বের করতে গিয়ে রক্তপাত ঘটে। এ বার ‘স্লেন্ডার ট্রান্সরেডিয়াল অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি’তে সরু ক্যাথিটার ব্যবহারে তা এড়ানো যাবে। মাত্র কয়েক ঘণ্টায় রোগী অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি সেরে বাড়ি গিয়ে কাজে যোগ দিতে পারবেন।”
কর্মশালার উদ্বোধনে এসে জাপানের টোকাই বিশ্ববিদ্যালয় হাসিওজি হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ তাকাসি মাৎসুকেজ বলেন, ‘‘চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নততম পরিষেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাদের সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে।’’ মিশন হাসপাতালের চিকিৎসক সঞ্জয় চুঘ বলেন, ‘‘রেডিয়াল আর্টারি ব্যবহার করে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি প্রথম দিকে রোগীরা করাতে চাইতেন না। এখন মানসিকতায় বদল এসেছে। আমাদের হাসপাতালে একশো শতাংশ ক্ষেত্রে আমরা এই পদ্ধতি অনুসরণ করি। এ বার স্লেন্ডার ক্যাথিটার ব্যবহারে এই পদ্ধতি আরও ঝুঁকিহীন করা যাবে।’’