অভিনেত্রী জাহ্নবী কপূর। নায়িকাদের মতো সুন্দর রূপটান পেতে হলে কী কী করতে হবে? ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
শীতের মরসুম মানেই পার্টি, বিয়েবাড়ি। আর এমন অনুষ্ঠান নিখুঁত সাজগোজ ছাড়া অসম্পূর্ণ। তবে সেই সাজই যদি মাটি হয়ে যায়, তা হলে কি আর ভাল লাগে? শীতের মরসুমে রূপটানের পরে অনেকেরই মুখে ফাউন্ডেশন খানিক পরে ছোপের মতো ফুটে ওঠে। ত্বক ভীষণ শুষ্ক দেখায়। স্পষ্ট বোঝা যায়, মুখে ফাউন্ডেশনের পরত রয়েছে। অথচ একই ফাউন্ডেশন গরমে বা বর্ষায় ব্যবহার করলে এমনটা হয় না।
রূপটান শিল্পীরা বলছেন, সমস্যার মূল কারণই হল আবহাওয়া। শীতের দিনে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কমে যায়। ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে। সঠিক কৌশল না জানলে, রুক্ষ ত্বকের কারণেই, ফাউন্ডেশন ব্যবহারের পর মুখে ছোপ দেখা দিতে পারে। মুখের মসৃণ ভাবটুকুও উধাও হতে পারে। কোনও কোনও রূপটানশিল্পী বলেন, সেই কারণে, শীতের মেকআপের প্রসাধনীতেও বদল দরকার। বিশেষত রুক্ষ ত্বক যাঁদের, তাঁদের ক্রিম বেসড বা লিকুইড ফাউন্ডেশন বেছে নেওয়া দরকার।
দিল্লির রূপটান শিল্পী দৃশিত মদনানি এক সাক্ষাৎকারে বলছেন, ‘‘দীর্ঘস্থায়ী মেকআপের জন্য বেস তৈরি করাটা খুব জরুরি। ভাল মানের ফাউন্ডেশন, প্রসাধনীর পাশাপাশি প্রয়োজন সঠিক কৌশলে ধাপে ধাপে তা প্রয়োগ করা।’’
ক্যানভাস
শিল্পীদের যেমন আঁকার জন্য ক্যানভাস লাগে, রূপটান শিল্পীদেরও তেমনই। মুখ সেই ক্যানভাস। রঙের ক্ষেত্রে যেমন ক্যানভাসে কাগজের মানটি গুরুত্বপূর্ণ, মেকআপেও তা-ই। ত্বক কতটা সুন্দর, তার উপর নির্ভর করে জেল্লা। ফাউন্ডেশনের আগে দরকার প্রাইমার। মুখের ছোটখাঁটো খুঁত, ব্রণের ফলে হওয়া গর্ত, অসমান ত্বক সমান করে জেল্লা আনতে সাহায্য করে প্রাইমার। শীতের দিনে যেহেতু ত্বক রুক্ষ হয়ে ওঠে, তাই হাইড্রেটিং প্রাইমার বেছে নিন।
মেকআপ শুরুর আগে ঠোঁট স্ক্রাব করে লিপ বাম মাখাটাও জরুরি। কারণ, এই মরসুমে কারও ঠোঁট ফেটে যায়, কারও আবার ছাল উঠতে শুরু করে।
চোখের মেকআপেও জরুরি হল উপরের পাতায় আইশ্যাডো প্রাইমার ব্যবহার করার পর আইশ্যাডো ব্যবহার করা। এতে আইশ্যাডোর রং খুব ভাল ভাবে ফুটে ওঠে।
চোখের তলার বা ত্বকের কালচে অংশ, দাগ ঢাকতে ব্যবহার করুন কনসিলার।
স্থায়িত্ব বাড়ানোর কৌশল
প্রাইমার ব্যবহারের পরে ত্বকের উপযোগী ফাউন্ডেশন ব্যবহার জরুরি। শীতের দিনে ব্যবহার করতে হলে লিকুইড বা ক্রিম বেসড ফাউন্ডেশন বেছে নিন। খুব মোটা পরত না দিয়ে হালকা পরত তৈরি করুন। ব্রাশ বা ব্লেন্ডিং স্পঞ্জের সাহায্যে মেকআপ ভাল করে ত্বকে মিশিয়ে দেওয়া আবশ্যক। স্পঞ্জ ব্যবহারের আগে জলে ডুবিয়ে নিংড়ে নিন। তা হলে ব্লেন্ডিংয়ে সুবিধা হবে।
ফাউন্ডেশনের পরে ক্রিম বেসড ব্লাশ ব্যবহার করে উপর থেকে মুখে ব্যবহারের গুঁড়ো পাউডার (ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার) হালকা করে লাগিয়ে নিন।
মেকআপ ধরে রাখার উপায়
কারও যদি ত্বকের কোনও বিশেষ অংশ তৈলাক্ত হয়, সেই জায়গাগুলিতে ব্রাশের সাহায্যে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডারের পরত দিয়ে দিন। যেমন নাকে বা কপালে। মেকআপ করার পরে সেটিং স্প্রে জরুরি।
জলনিরোধী
স্মাজপ্রুফ অর্থাৎ চট করে ঘেঁটে যাবে না, এমন কাজল কিনুন। ওয়াটারপ্রুফ বা জলে নষ্ট হয় না এমন মেকআপও মেলে। কাজল, আইলারইনারের ক্ষেত্রে এমন বৈশিষ্ট্য থাকা জরুরি। বিয়েবাড়িতে চড়া আলোর প্রভাবে কখনও কখনও ঘাম হয়। তবে এ ক্ষেত্রে চোখের মেকআপ ঘাঁটবে না।
বিশেষ ছোঁয়া
সঙ্গে লিপস্টিক, কাজল, পাউডার, ব্লাশ রাখতে ভুলবেন না। অনেক ক্ষণ ধরে বিয়েবাড়ি বা পার্টিতে থাকলে মেকআপ ঘেঁটে যেতে পারে। খাওয়ার সময় লিপস্টিক খানিক উঠেও যেতে পারে। তাই ‘টাচ-আপ’ জরুরি।