কী কী মিশিয়ে কেরাটিন করবেন বাড়িতেই? ছবি: ফ্রিপিক।
কখনও কোঁকড়ানো চুল সোজা করা, আবার কখনও সোজা চুলে ঢেউ খেলানো, তার উপর নানা রকম রঙের বাহার, চুলের উপর অত্যাচারের শেষ নেই। কিন্তু এই সব পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে চুলের স্বাভাবিক জেল্লা, মসৃণতা ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকে। তখনই মনে হয়, চুলে ‘স্পা’ করাবেন, না ‘কেরাটিন ট্রিটমেন্ট’? যা-ই করান, তার খরচ অনেক। আপনি পড়লেন দ্বিধায়! ভাবতে বসলেন, এই ট্রিটমেন্ট করানো ভাল না খারাপ? সালোঁতে যে ‘কেরাটিন ট্রিটমেন্ট’ করানো হবে, তাতে রাসায়নিক থাকবে না তো?
কোনও চিন্তা নেই। কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করে ফেলুন বাড়িতেই। চাল ধোয়া জল, অ্যালো ভেরা ও তিসি দিয়েই তা সম্ভব। কেবল ব্যবহারের পদ্ধতি জানতে হবে।
কেরাটিন কোনও রাসায়নিক নয়। স্বাভাবিক ভাবে চুলের মধ্যে থাকা একটি প্রাকৃতিক প্রোটিন। চুলে অতিরিক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার, হেয়ার ড্রায়ার বা স্ট্রেটনার ব্যবহার ও দূষণের জন্য এই প্রোটিন নষ্ট হয়ে যায়। ফলে চুল নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। তখন বাইরে থেকে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করানোর দরকার হয়। সালোঁতে ফরম্যালডিহাইড নামক একটি রাসায়নিকের সঙ্গে কন্ডিশনার ও কেরাটিন প্রোটিন মিশিয়ে চুলের পরিচর্যা করা হয়। এই প্রক্রিয়া রাসায়নিক ছাড়া বাড়িতেই করা যায়।
কোন তিনটি উপকরণ মেশাবেন?
চাল ধোয়া জল চুলের জন্য খুবই ভাল। এতে থাকে কার্বোহাইড্রেট, যা রুক্ষ ও শুষ্ক চুল নরম করতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি ও ই, যা চুলের জেল্লা ফেরায়, গোড়া থেকে চুল মজবুত করে এবং খুশকির সমস্যা দূর করে।
চুলের আর্দ্রতা ফেরাতে ও রুক্ষ চুল নরম করতে অ্যালো ভেরার জুড়ি মেলা ভার। এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট মাথার ত্বকেরও যত্ন নেয়।
তিসিতে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি-র প্রাকৃতিক উৎস হল তিসি। চুল মজবুত করতে এবং চুলের জেল্লা ধরে রাখতে ভিটামিন বি-এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করেন অনেকে। তবে ভিটামিন ই-র প্রাকৃতিক উৎস হল তিসি।
কী ভাবে মেশাবেন?
আধ কাপ চাল
আধ কাপ তিসির বীজ
১ কাপের মতো অ্যালো ভেরা জেল
পরিমাণ মতো জল
প্রথমে চাল ও তিসি একসঙ্গে মিশিয়ে ফোটাতে হবে। পরিমাণ মতো জল দিতে হবে। খুব বেশি জল দেবেন না। কম আঁচে ফুটতে দিন। চাল ও তিসি সেদ্ধ হয়ে এলে গ্যাস বন্ধ করে দিন। এ বার জল ছেঁকে আলাদা রাখুন। ঠান্ডা হলে সেদ্ধ চাল, তিসির সঙ্গে অ্যালো ভেরা মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এই মিশ্রণ মাথায় ভাল করে মেখে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা থাকতে হবে। এর পর হালকা শ্যাম্পু করে ওই ছেঁকে রাখা জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
সপ্তাহে এক দিন এই পদ্ধতিতে চুলের পরিচর্যা করলেই চুল পড়া বন্ধ হবে। চুলের ঘনত্ব ও জেল্লা, দুই-ই বাড়বে।