ছবি : সংগৃহীত।
বাতাসে ধীরে ধীরে টান ধরছে। কমছে আর্দ্রতা। ঠিক এই সময় থেকেই চুলের যত্ন নেওয়া শুরু করে দেওয়া উচিত। না হলে শীতে যখন চুলের গোড়া শুষ্ক এবং আলগা হয়ে হুড়মুড়িয়ে চুল উঠতে শুরু করবে, তখন আর সামলানোর পথ পাওয়া যাবে না।
শীতে এমনিতেই খুশকির কারণে চুল পড়ার সমস্যা বাড়ে। তার উপর যদি মাথার ত্বকে যথেষ্ট পুষ্টি না পৌঁছোয় এবং চুলের গোড়ার আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে যায়, তা হলে চুল পড়ার সমস্যা বাড়বে বই কমবে না। দিল্লির এক ট্রাইকোলজিস্ট তথা মেডিসিনের চিকিৎসক সুরুচি পুরী জানাচ্ছেন, শীতে চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য মাস খানেক আগে থেকেই খাওয়া যেতে পারে একটি বিশেষ পানীয়। যা চুলকে শীতের শুষ্ক আবহাওয়া থেকে বাঁচাবে। জোগান দেবে প্রয়োজনীয় পুষ্টিরও। সুরূচি বলছেন, ‘‘আমলকি, আদা, আর কারিপাতা দিয়ে তৈরি একটি পানীয় যদি প্রতি দিন কেউ খেতে পারেন, তবে তা মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখার পাশাপাশি চুলকে ভিটামিন এবং প্রয়োজনীয় খনিজের জোগান দেবে।’’
কী ভাবে বানাতে হয় ওই পানীয়?
যা লাগবে: ৬-৮টি তাজা কারিপাতা, ১ টেবিল চামচ কুরে নেওয়া আদা, ১টি গোটা আমলকি, এক চিমটে গোলমরিচ আর এক কাপ ঈষদুষ্ণ জল।
প্রণালী: একটি পাত্রে জল চাপিয়ে গরম হতে দিন। ফুটে ওঠার ঠিক আগেই নামিয়ে ফেলুন। এ বার ওই জলে কারিপাতা হালকা থেঁতো করে দিয়ে দিন। সঙ্গে দিন কুরিয়ে নেওয়া আদা। ১০ মিনিট ঢাকা দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন।
এ বার একটি ব্লেন্ডারে একটি আমলকি টুকরো করে কেটে দিয়ে দিন এবং বেটে নিন। বেটে নেওয়া আমলকি ছাঁকনিতে ছেঁকে রস বার করে নিন। এ বার আদা এবং কারি পাতা ভেজানো জলটি ছেঁকে তার মধ্যে মিশিয়ে নিন আমলকির রস এবং এক চিমটে গোলমরিচ। ভাল ভাবে গুলে নিয়ে খালি পেটে এই পানীয় খান। তবে এই পানীয় সঙ্গে সঙ্গে খাওয়াই ভাল। ফ্রিজে রেখে বা ঠান্ডা করে খেলে উপকারিতা কমতেও পারে।
কেন উপকারী?
১। সুরুচি জানাচ্ছেন, শীতে চুলের যত্ন নিতে কারিপাতা খুবই উপকারী। তাঁর কথায়, ‘‘দক্ষিণের মহিলাদের চুল দেখবেন খুব সুন্দর হয়। ওঁরা নিয়মিত কারিপাতা খান।’’ সুরুচি-র সংযোজন, কারি পাতায় রয়েছে আয়রন। যা শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলে চুলের চাকচিক্যও বজায় থাকে।
২। আমলকি সারা বছরই চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে কাজে লাগে। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। যা দৈনিক ভিটামিন সি-এর প্রয়োজন মেটাতে পারে। ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালনেও সাহায্য করে।
৩। আদায় থাকা জিঞ্জারল শরীরের প্রয়োজনীয় উষ্ণতা বজায় রাখে। মাথার ত্বকের তাপমাত্রা বজায় রেখে সেখানে রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে। যার ফলে চুলের গোড়ায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি পৌঁছোয়। এর প্রদাহনাশক এবং ব্যাক্টেরিয়া রোধক উপাদান মাথার ত্বকে ব্যাক্টেরিয়া জনিত সংক্রমণ কমাতেও সাহায্য করে দূরে রাখে খুশকি।