পুরুষের ত্বকের সমস্যা ও সমাধানের উপায় রইল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
কাঠফাটা রোদ, বাড়তে থাকা আর্দ্রতা, ধুলোবালি, শুষ্কতা, সবই ত্বকের জেল্লা চুরি করে নেয়। একটু অবহেলা করলেই ত্বক ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ দিকে অনেক পুরুষ আজও ত্বকচর্চা নিয়ে উদাসীন। ত্বকের যত্ন নিয়ে গড়িমসি করার কারণে ছেলেদের ত্বক রুক্ষ ও জেল্লাহীন হয়ে পড়ে সহজেই। ত্বকে ব্রণ, র্যাশের আধিক্য হয়। অকালবার্ধক্যের ছাপও পড়ে। এখন বিপণিগুলিতে পুরুষের ত্বকের পরিচর্যার সামগ্রীর সম্ভার সহজলভ্য। তবে সেগুলিও যে ত্বকের জন্য ভাল, তা-ও নয়। যাঁরা সেগুলিতে অভ্যস্ত এবং যাঁরা এখনও ত্বকচর্চা নিয়ে ওয়াকিবহাল নন, তাঁদের জন্য রইল কিছু পরামর্শ।
পুরুষের ত্বকের কী কী সমস্যা নয়? সমাধানই বা কিসে?
লালচে ব্রণ
অনেক ছেলেরাই ভোগেন এই সমস্যায়। বয়ঃসন্ধির সময়ে তো বটেই, প্রথম দাড়ি কামানো শুরু করার পর পরই ত্বক ভরে যায় লালচে ব্রণয়। যাঁরা খুব বেশি ক্ষণ রোদে ঘোরাঘুরি করেন বা ধুলো-ধোঁয়া রয়েছে এমন জায়গায় থাকেন, তাঁদের ত্বকের এই সমস্যা বেশি হয়। ব্রণ সারাতে মহিলারা নানা রকম ফেসপ্যাক, ফেস-মাস্ক ব্যবহার করেন। পুরুষের জন্যও কিন্তু উপায় আছে। দিনে অন্তত দু’বার ঠান্ডা জলে মুখ ধুতে হবে। এমন ক্রিম বা জেল ব্যবহার করতে হবে, যাতে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ও বেঞ্জয়েল পারঅক্সাইড রয়েছে। ঘরোয়া উপায়ে হলুদ-মধু ও কাঁচা দুধের প্যাক সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করলেই ব্রণ কমবে।
রেজ়র বাম্প
দাড়ি কামালে স্বাভাবিক ভাবেই লোমকূপের গোড়াগুলি উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। সেই উন্মুক্ত স্থানে বিভিন্ন জীবাণু সংক্রমণ ঘটায়। অনেকেরই দাড়ি কামানোর পরেই ত্বকে জ্বালা করে, লোমকূপের জায়গা ফুলে ফোঁড়াও হয়। সে ক্ষেত্রে রোজ দাড়ি না কামিয়ে, বরং দু’দিন অন্তর দাড়ি কামান। এবং যে দিন দাড়ি কামাবেন, তার অগের রাতে ত্বকে ক্রিম মেখে নিতে পারেন। কামানোর সময় ভাল করে শেভিং জেল বা ক্রিম লাগিয়ে নিন। এতে সংক্রমণ এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কম হবে।
খুশকি থেকে ত্বকের সংক্রমণ
চুল যতই ছোট করে কাটা থাক, খুশকির সমস্যা হবেই। যদি সঠিক শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার না করেন, তা হলে খুশকি থেকে কপালের উপরের অংশে, গালে অথবা ঘাড়ে র্যাশ, চুলকানি হতে পারে। খুশকির সমস্যা থেকে কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিসও হয় অনেকের। খুশকি রোধ করতে রসুনের তেল, লেবুর রস বা টি-ট্রি অয়েল মালিশ করতে পারেন চুলে। খাবার সোডা এবং দই, দু’টিই খুশকি দূর করার সহজতম ঘরোয়া উপায়। দই, এক চিমটে খাবার সোডা ও পুদিনা পাতার কুচি দিয়ে একটি মিশ্রণ বানিয়ে মাথায় মাখুন। কিছু ক্ষণ রেখে হালকা কোনও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
সোরিয়াসিস
মহিলারাই শুধু নন, পুরুষেরাও ভোগেন ত্বকের এই রোগে। কপালে, ঘাড়ে, হাতে, কনুইতে চামড়া খসখসে হয়ে গিয়ে আঁশের মতো উঠতে শুরু করে। সেই জায়গায় প্রচণ্ড জ্বালা, চুলকানি হয়। সোরিয়াসিসের গোড়ার দিকে লালচে গুটির মতো প্যাচ দেখা যায়। ধীরে ধীরে ত্বকের এই অংশগুলি পুরু হয়ে ওঠে। কখনও আবার তা অত্যন্ত শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে থাকে। মাথাতেও সোরিয়াসিস হয়। এমন হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। এই রোগে বেশি ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয়। গ্লিসারিনযুক্ত সাবান বা বেবি সোপ ব্যবহার করা যেতে পারে। ময়শ্চারাইজ়ার বা নারকেল তেলও এ রোগে বেশ উপকারী। পোশাক ফুলস্লিভ এবং সুতির হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কারণ, সিন্থেটিক জাতীয় পোশাক এই রোগ বৃদ্ধি করে।