চুল পড়ার জন্য হার্ড ওয়াটার কতটা দায়ী? ছবি: সংগৃহীত।
রাস্তার ধুলো-ধোঁয়া, দূষণ তো আছেই, খাওয়াদাওয়ায় অনিয়মও চুল পড়ার অন্যতম কারণ। এ ছাড়া জিনগত কারণে, হরমোনের সমস্যা হলে, মাথার ত্বকে সংক্রমণ ঘটলে, থাইরয়েড আর অ্যানিমিয়ার জন্য কিংবা মানসিক চাপের মতো বিবিধ কারণ চুল পড়ার নেপথ্যে রয়েছে। তবে অনেকেই বাড়ির জলকেই চুল পড়ার প্রধান কারণ বলে মনে করেন।
অনেকে ধরেই নেন, বাড়ির কলের জল যদি ‘হার্ড’ বা খর অর্থাৎ খনিজ সমৃদ্ধ হয়, তা হলে তো চুল পড়বেই। তাঁদের ধারণা, জলের মধ্যে থাকা ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম জাতীয় খনিজ চুলের গোড়ায় জমে গিয়ে গোড়া আলগা করে দেয়। এমন জল দিয়ে রোজ মাথা ধোয়ার কারণেই মাথায় টাক পড়ছে। মাথায় হাত দিলেই গোছা গোছা চুল উঠছে। এই ধারণা কি আদৌ ঠিক? চর্মরোগ চিকিৎসক কৌশিক লাহিড়ী বলেন, ‘‘হার্ড ওয়াটারের কারণে চুল পড়ে না। হার্ড ওয়াটার চুলকে রুক্ষ করে দিতে পারে, শ্যাম্পুর ফেনা কম হতে পারে, চুলের জেল্লা কমে যেতে পারে। তবে হার্ড ওয়াটার চুলের ফলিকল বা রুটের উপর কোনও প্রভাব ফেলে না।’’
অনেকেই আবার বলেন, জলে অত্যধিক আয়রন থাকলেও চুল পড়ে যায়। চিকিৎসক সন্দীপনের মতে, মাথার ত্বকে আয়রন সঞ্চিত হতে পারে, এর কারণে চুলের রঙে সামান্য বদল আসতে পারে তবে আয়রন ফলিকলের মধ্যে প্রবেশ করে না। তাই আয়রনের কারণেও চুল পড়ে না।
চুলের ক্ষতি রুখতে অনেকেই স্নানঘরে ওয়াটার ফিল্টার বসান। চিকিৎসকের মতে, এতে কেবল অর্থের অপচয় হয়। চুল প়ড়ার কারণ জল হতে পারে না। শ্যাম্পু করার দিনে অন্যা্য দিনের তুলনায় বেশি চুল পড়ে বলে অনেকেই মনে করেন, জলের কারণেই চুল পড়ছে। আসলে চুল ধোয়ার সময় দু’তিন দিনের জমে থাকা ‘টোলাজেন চুল’ অর্থাৎ যে সব চুল ফলিকলের সঙ্গে আলতো ভাবে লেগে রয়েছে, সেগুলি একসঙ্গে ঝরে যায়, তাই চুল পড়ার পরিমাণ বেশি দেখায়। চিকিৎসকের মতে, চুল ঝরার মূল কারণ জিন, হরমোন আর অন্যান্য অসুখ-বিসুখ। তাই অত্যধিক চুল পড়লে ওয়াটার ফিল্টার না লাগিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।