মুখের যত্নে মশলা! ছবি : সংগৃহীত।
ভারতের প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি আয়ুর্বেদ নিয়ে গবেষণা হচ্ছে বিদেশেও। তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে রূপচর্চার জগতে তৈরি হচ্ছে নানা পণ্য। তেমনই কিছু পণ্যে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় মশলাপাতি থেকে নিঃসৃত তেল ব্যবহার করা হচ্ছে মুখ পরিষ্কার করার জন্য।
ভারতীয় রূপচর্চায় মশলার ব্যবহার হয় না, তা নয়। বহু বছর ধরেই ত্বকের পরিচর্যায় ব্যবহার হয়ে আসছে হলুদ। অন্য দিকে স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য নানা ধরনের মশলার উপকারিতার কথা জানা গিয়েছে বিভিন্ন গবেষণায়। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাতেও মিলেছে লবঙ্গ, দারচিনি, আদা, গোলমরিচ, জায়ফল, জয়িত্রীর মতো মশলার ঔষধী গুণের প্রমাণ। কিন্তু মশলা ত্বকের জন্য কতটা উপকারী? ত্বক নিয়ে চর্চাকারী এক রূপচর্চাশিল্পী জরিফা আহমেদ জানাচ্ছেন, রান্নাঘরে থাকা কিছু মশলা সত্যিই ত্বকের উপকারে লাগতে পারে। তবে সেগুলির ক্ষমতা এতটাই জোরালো যে একটু বুঝেশুনে ব্যবহার করতে হবে। বেশি ব্যবহার করলে সংবেদনশীল ত্বকে তার উল্টো প্রভাবও পড়তে পারে। মূলত তিন ধরনের মশলার উপকারিতার কথা বলেছেন জরিফা।
লবঙ্গ
লবঙ্গতে ইউজেনল নামক একটি উপাদান থাকে, যা ব্যাক্টেরিয়াকে দূরে রাখে পাশাপাশি ত্বকে প্রদাহও হতে দেয় না। ফলে এটি ব্রণ, ফুস্কুড়ি বা র্যাশের সমস্যায় কাজে লাগতে পারে। দু’-এক ফোঁটা লবঙ্গের তেল এবং এক চা চামচ নারকেল তেল এক সঙ্গে মিশিয়ে সেই মিশ্রণে তুলো ভিজিয়ে ব্রণের উপরে হালকা করে লাগিয়ে দিন। যে সমস্ত ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণের জন্য ব্রণ হয়, সেই সমস্ত ব্যাক্টেরিয়াকে নষ্ট করে দিতে পারে এই তেল। আবার পাঁচ-ছ’টি লবঙ্গকে জলে ফুটিয়ে নিয়ে সেই জলকে টোনার হিসাবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। তাতে ত্বকে তারুণ্য আসবে বলে জানাচ্ছেন জরিফা।
দারচিনি
দারচিনিতেও শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে ব্যাক্টেরিয়া রোধ করার ক্ষমতাও। ত্বকে ঔজ্জ্বল্য আনতে সাহায্য করতে পারে দারচিনি। এক চা চামচ দারচিনির গুঁড়োর সাথে দুই চা চামচ মধু এবং এক চা চামচ নারকেল তেল এক সঙ্গে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে পুরো মুখে হালকা আস্তরনের মতো করে লাগিয়ে রাখুন ৫ মিনিট। তার পরে বৃত্তাকারে হালকা মাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করবে এবং ত্বককে উজ্জ্বল দেখাতে সাহায্য করবে।
গোলমরিচ
গোলমরিচে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ ত্বককে দূষণমুক্ত করতে সাহায্য করে। এক চিমটে গোলমরিচের গুঁড়ো, এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং সামান্য দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে ৫ মিনিটের বেশি রাখবেন না, তারপর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এর ব্যাক্টেরিয়ানাশক উপাদান ব্রণ ও ব্ল্যাকহেডস দূর করতে সাহায্য করতে পারে।
সতর্কতা
তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে। মশলাগুলি যেহেতু প্রকৃতিগতভাবেখুব শক্তিশালী, তাই সংবেদনশীল ত্বকে জ্বালা বা অ্যালার্জি হতে পারে। তাই এগুলি সরাসরি ব্যবহার না করে কোনও ফেস প্যাকের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলেই ভাল। এবং ব্যবহারের আগে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করে দেখে নেওয়া উচিত, যে তা থেকে ত্বকে কোনও সমস্যা তৈরি হচ্ছে কি না।