হাইপারপিগমেনটেশনের জন্য মুখের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে? ঘরোয়া টোটকাও কি দাগছোপ তুলতে কাজে আসতে পারে? ছবি: সংগৃহীত।
কারও মুখে ছিটছিট দাগ দেখা যায়। কারও আবার মুখের কোনও একটি অংশ জুড়ে কালচে বা বাদামি ছোপ তৈরি হয়। সেই দাগ তোলা যে কত কঠিন, তা বোঝেন যাঁদের হয় তাঁরাই।
মুখে কালো দাগছোপের এই সমস্যাকে বলা হয় হাইপারপিগমেন্টেশন। ত্বকে অতিরিক্ত মেলানিন তৈরি হলে বা জমতে থাকলে, এমন সমস্যা দেখা যায়। মেলানিন হল এক ধরনের পিগমেন্ট, যা ত্বকের বর্ণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তবে কোনও কারণে, মেলানিনের মাত্রা বেড়ে গেলে, ত্বকে কালচে দাগছোপ দেখা যায়। বয়স হলে এই সমস্যা কিছুটা স্বাভাবিক। তবে সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগনি রশ্মি বা অনেক সময় হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলেও হতে পারে মেলানোজেনেসিস, যার প্রভাবে মেলানিনের মাত্রা বাড়তে পারে।
মুখের কালো দাগ-ছোপ তোলার জন্য বাজারচলতি অনেক ধরনের প্রসাধনী রয়েছে। তবে রাসায়নিক উপাদান দীর্ঘ দিন ব্যবহার করলে ত্বকে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বদলে তিন উপকরণে তৈরি মাস্ক ব্যবহার করে দেখতে পারেন। প্রাকৃতিক উপাদানেরও নিজস্ব গুণাগুণ থাকে। ত্বকের যত্নে কাজে লাগাতে পারেন সেটাই।
অ্যালো ভেরা: ভিটামিন এ, সি, ই-তে ভরপুর অ্যালো ভেরায় রয়েছে পলিস্যাকারাইড, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এই সমস্ত উপাদানই ত্বকের সুরক্ষায় কাজ করে। কোনও কোনও ধরনের হাইপারপিগমেন্টেশন কমানোর ক্ষমতা রাখে এটি। রূপচর্চায় অ্যালো ভেরার ব্যবহার কিন্তু বেশ পুরনো। এতে থাকা প্রদাহনাশক উপাদান মেলানোসাইটিসের প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়। ফলে মেলানিন উৎপাদন বেড়ে যায় না। এতে থাকা অ্যালোয়েন নামক উপাদানও পরোক্ষ ভাবে অতিরিক্ত মেলানিন উৎপাদন তৈরিতে বাধা দেয়।
মুলেঠি বা যষ্টিমধু: ভেষজ হিসাবে পরিচিত যষ্টিমধু ত্বকের জন্যও খুব উপকারী। যষ্টিমধুতে রয়েছে গ্ল্যাবরাইডিন নামক একটি উপাদান, যা মেলানিন উৎপাদনকারী উৎসেচকের ক্ষরণে বাধা দেয়। ফলে মেলানিনের উৎপাদন কমে। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদান, যা ত্বকের জন্য ভাল।
ডাবের জল: ত্বকের কালচে দাগছোপ দূর করে ডাবের জলের ব্যবহার নতুন নয়। এতে থাকা সাইটোকাইনিন অকালবার্ধক্য রুখতে সাহায্য করে। যার ফলে ত্বকে থাকে তারুণ্যের ছোঁয়া। এ ছাড়া ত্বকের পিএইচ মাত্রা বজায় রাখতেও তা সাহায্য করে।
কী ভাবে তৈরি করবেন মাস্ক?
একটি পাত্রে ১ চা-চামচ অ্যালো ভেরা জেল, ১ চা-চামচ যষ্টিমধু এবং ১ টেবিল চামচ ডাবের জল মিশিয়ে নিন। পরিষ্কার মুখে মাস্কটি মাখতে হবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন অন্তত ১৫-২০ মিনিট। তারপর ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে ফেলুন। মাস্কটি রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মাখলেই ত্বকে উপকার মিলবে বেশি। ঘুমের সময় ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলি পুনরুজ্জীবিত হয়।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। ঘরোয়া টোটকার গুণ থাকা সত্ত্বেও যদি উপকার না মেলে, তা হলে দ্রুত ত্বকের চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার।