ছবি: সংগৃহীত।
উমার বাড়ি ফেরার পালা। তাঁকে সিঁদুরে বরণ করে বিদায় জানাতে হবে। সেই বিদায়বেলায় সিঁদুরখেলার উৎসবে পুজোর সেরা সাজটি সাজেন বঙ্গললনারা। পরনে থাকে লাল কিংবা সাদা-লাল। যত্ন করে বেছে নেন গয়না। এই দিন গয়না কিছু বেশি পরাই দস্তুর। কারণ সাজ হতে হবে জমকালো। সোনা হোক বা রূপো কিংবা জাঙ্ক জুয়েলারি— সবেতেই নজরকাড়া সাজে সাজা যায়। এ বছর বিজয়া দশমীর দেবীবরণে কেমন গয়না পরে সিঁদুর খেলায় মাতবেন? দেখে নিন নায়িকাদের থেকে।
রানি মুখোপাধ্যায় এ বছরের দুর্গাপুজোর অষ্টমীর সকালে এই সাজটি সেজে হাজির হয়েছিলেন তাঁদের বাড়ির দুর্গাপুজোয়। লাল শাড়ির সঙ্গে মাসাবার তৈরি গয়না পরেছিলেন রানি। হাতে চওড়া বালা। গলায় হাঁসুল আর ছোট ছোট চার্ম আটকানো অল্প ঝোলা একটি হার। কানে একটি দুল না পরে ছোট ছোট অনেকগুলি দুল পরেছেন রানি, যা তাঁর সাজকে দিয়েছে অন্য মাত্রা।
কাজল পরেছেন দুধে-আলতা রঙের টিস্যুর শাড়ি। তার সঙ্গে খুব অল্প গয়না পরেছেন। হাতে লাল কাচের চুড়ি, কুন্দনের কানপাশা।
বিদ্যা বালন বরাবরই অল্প সাজেন। তবে এই সাজে তাঁর গয়না আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তিনি পরেছেন সোনালি রঙের বড় একটি ইয়ারকাফ।
কেতাদুরস্ত সাজে ভারী গয়নার সঙ্গে কানটানা পরার চল বহুকালের। জাহ্নবী কপূর তাঁর নবরাত্রির সাজে সেই পুরনো সাজ ফিরিয়ে এনেছেন। পরেছেন রুপোর উপর নানা পাথর গাঁথা কাটানা। সঙ্গের দুলটিও কানের অর্ধেকটা ঢেকে তৈরি করেছে অন্য রকম লুক।
লাল শাড়ির সঙ্গে শেফালি শাহের ছিমছাম গয়নার সাজও দেখাচ্ছে জমকালো। ভারী গয়না পরেননি। তবে সোনার সুতোয় গাঁথা কুন্দনের ছোট ছোট বিডসে তাঁর সাজ অন্য মাত্রা পেয়েছে।
মুম্বইয়ে মুখার্জি বাড়ির দুর্গাপুজোয় আলিয়া এসেছিলেন এই দুলটি পরে। সোনালি রঙের ঢাকাই, ফুলস্লিভ ব্লাউজ় আর গাঢ় বাদামি খোলা চুলে আলিয়ার ওই দুলই চোখে পড়ছিল বেশি করে। এও এক ধরনের কানটানা দুল। তবে কানের উপর দিয়ে না গিয়ে এর লহরী চেন বা মালা গিয়ে আটকায় চুলে। কানের দুলটি ছোট্ট। তবে কানের টানা অংশটিতে কয়েক লহরের মুক্তোগাঁথা মালা এক লহমায় জমকালো করে তুলেছে তাঁর সাজকে।
ক্লাসিক সাজ। লাল কিংবা দুধে-আলতা রঙের বেনারসি শাড়ির সঙ্গে দীপিকা পাড়ুকোন পরেছেন চওড়া সোনার চিক। তাতে কোনও পাথর গাঁথা নেই। কোনও রঙের কারুকাজ নেই। শুধুই সোনার জালি কাজের নকশা। আর কানে একই ধাঁচের কানপাশা।
সাদা লালের সঙ্গে কি অক্সিডাইজ়ড গয়না দিয়ে সাজা যায়? সোনম একটি সাজেই সে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিয়েছেন। লালপাড় সাদা শাড়ির সঙ্গে তাঁর প্রায় কালো হয়ে যাওয়া অক্সিডাইজ়ড হাসুলি কেতার হার তাঁকে করে তুলেছে মোহময়ী। সঙ্গে একই রঙের ড্যাঙ্গলার ইয়ার রিং পরেছেন নায়িকা।
লাল শাড়ির সঙ্গে বিদ্যা পরেছেন গলা পর্যন্ত ঝোলা রুপোর দুল। তাতে লাল রঙের পলা বসানো। মোগলাই প্রাসাদের জাফরির আদলের এই নকশাটি গোল ধাঁচের মুখের সঙ্গে মানাবে ভাল।
লাল শাড়ির সঙ্গে বিকিনি ব্লাউজ় আর ঝকঝকে সাদা কুন্দনের চিক পরেছেন শ্রিয়া শরন। কপালে সেই হারের সঙ্গে মিলিয়ে পরেছেন কুন্দনের টিপ। এমন সাজে মণ্ডপে সিঁদুর খেলতে গেলে আপনাকে ছাড়া আর কারও দিকে চোখ পড়বে কি?
করিনা কপূর এই সাজটি সেজেছিলেন তাঁর ভাইয়ের বিয়েতে। টুকটুকে লাল শাড়ির সঙ্গে করিনা পরেছিলেন রূপো দিয়ে গাঁথা দু’লহরী পান্নার নেকলেস। টম্যাটো লাল রঙের উপর পান্না সবুজ যে এমন ভাল খুলতে পারে, তা কে জানত!
করিশ্মা কপূর আবার নেকলেস নয়, সেজেছেন ভারী ঝুমকোয়। পরনে লালচে মেরুন আর সোনালি রং মিলন্তির শাড়ি। গলা বন্ধ জমকালো ব্লাউজ় পরেছেন বলে হার বাদ দিয়েছেন। পরেছেন মিনাকারী কুন্দনের ঝুমকো। যার উপরের অংশটি বড় কানপাশার আদালের। ঝুমকোটি লম্বাটে ধাঁচের। তা থেকে ঝুলছে ছোট ছোট সোনার পাতা।
মৌনী রায় লাল শাড়ির সঙ্গে এই সাজটি সেজেছিলেন নবমীর সকালে। মুখার্জি বাড়ির পুজোয় তাঁকে দেখা গেল ফুলস্লিফ ব্লাউজ়ের সঙ্গে লাল অরগ্যাঞ্জা শাড়িতে। আর তার সঙ্গে মৌনী কানে পরেছিলেন এই দুল। সোনা আর মুক্তোয় গাঁথা চাঁদবালির সঙ্গে বাহুবলীর দেবসেনার স্টাইলের ঝুমকো বসানো কান লহর। যাকে বলা হয় সাইড চেন ইয়াররিং। এই একটি গয়না থাকলেই সাজ হিট!
একটু অন্যরকম সাজতে চাইলে সাদা নেট, অরগ্যাঞ্জা বা শিফন শাড়ির সঙ্গে পরতে পারেন শ্রদ্ধা কপূরের মতো স্যান্ডেলিয়র ইয়াররিং।
বাঙালি বনেদি বাড়িতে দুর্গাপুজোয় বাড়ির মহিলারা নাকে নথ পরেন। সেই ঐতিহ্য মেনে সিঁদুরখেলায় নথ পরতে পারেন আপনিও। তবে ধ্রুপদী বাঙালি নথ না পরে বেছে নিতে পারেন মহারাষ্ট্রের মহিলাদের স্টাইলের নোজ়পিন। যেমনটি পরেছেন জেনেলিয়া ডিসুজ়া।
বাঙালি বিয়েতে কনেকে যেমন নথ পরানো হয়, তেমন নথও পরতে পারেন দেবীবরণে। যেমনটি বঙ্গতনয়া বিপাশা বসু পরেছিলেন তাঁর বিয়েতে। বড় সোনালি নাকবালায় মুক্তোর আনাগোনা। সঙ্গের টানা অংশটিতেও গাঁথা রয়েছে ছোট ছোট মুক্তোর পুঁতি।