পুজোয় জেল্লা ফিরুক মা-ঠাকুরমার টোটকায়। ছবি: সংগৃহীত।
পুজো মানেই রোদ-জল উপেক্ষা করে মণ্ডপে ঘোরা। সাজের বাহার যতই থাক— রোদের তাপ কে ফাঁকি দেওয়া এতই কি সহজ? সানস্ক্রিন মাখার পরেও মুখে কালচে ছোপ পড়তে পারে। দিনভর ঘোরাঘুরির শেষে ভরসা রাখুন রূপচর্চার পুরনো টোটকায়।
বাজারচলতি স্ক্রাব, প্যাক ব্যবহার হয় এখন। কিন্তু যখন এই সব কিছু ছিল না, তখন রূপচর্চায় ব্যবহার হত দুধ থেকে নিমপাতা, হলুদ, চন্দন, কেশর, গোলাপ-সহ অনেক কিছুই। রূপচর্চায় ফেরাতে পারেন পুরনো সেই পন্থাই। হলুদ, চন্দন, কেশর বা জাফরানের মতো প্রাকৃতিক উপকরণেই মুখের যত্ন নিতে পারেন এখনও।
বর্ণ উজ্জল করে: রোদে বেরিয়ে কালচে হয়ে যাচ্ছে মুখ? লাবণ্যও যেন হারিয়েছে! সমস্যার সমাধান করতে পারে হলুদ,চন্দন এবং জাফরান। হলুদের অন্যতম উপাদানই হল কারকিউমিন। ত্বকে মেলানিনের মতো রঞ্জকের আধিক্য কমিয়ে ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে তা। ত্বকের কালচে ভাব দূর করতে চন্দনও কিন্তু কম গুণের নয়। মুখের কোনও অংশ একটু বেশি কালচে হয় কারও কারও। ত্বকের অসমান বর্ণ ঠিক করতে সাহায্য করে হলুদ, চন্দন এবং জাফরানের মিশ্রণ।
ব্রণ দূর করে: হলুদে রয়েছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। ব্রণ দূর করতেও এই ভেষজ কার্যকর। চন্দনেও রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং প্রদাহনাশক উপাদান। ত্বকে ব্রণ, ফুস্কুড়ি হলে যে জ্বালাভাব হয়, তা কমাতে সাহায্য করে চন্দন। ছোটখাটো সংক্রমণ সারাতেও এই উপাদান কাজের।
ত্বকের বর্ম: চন্দন এবং হলুদ, জাফরানে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যালের সঙ্গে কোষকে লড়তে সাহায্য করে। ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখে। হলুদের কারকিউমিন প্রদাহনাশক উপাদান। ছোটখাটো সংক্রমণ থেকে ত্বককে রক্ষা করতেও সাহায্য করে।
রূপচর্চার জগতে যথেষ্ট পরিচিতি শাহনাজ় হুসেনের। সকলে তাঁকে চেনে মহিলা উদ্যোগপতি হিসাবে। প্রাকৃতিক উপকরণে সৌন্দর্যচর্চার উপায় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চলেছেন তিনি দীর্ঘ দিন। শাহনাজ় অতীতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, চন্দন, হলুদ এবং জাফরানের মতো প্রাকৃতিক উপকরণ ত্বকের জন্য সব সময়েই ভাল। এই ধরনের উপকরণ ত্বকের জেল্লা ফেরাতে অনেকাংশেই সাহায্য করে।
কী ভাবে বানাবেন ঘরোয়া ফেসপ্যাক?
এক টেবিল চামচ চন্দনগুঁড়োর সঙ্গে ১ টেবিল চামচ গোলাপজল মিশিয়ে নিন। রোদের তাপে ত্বক জ্বালা করলে, বা মুখ গরম হয়ে গেলে এই প্যাক খুবই আরামদায়ক। মুখে মাখলেই আরাম হবে। কালচে দাগও তুলে দেবে।
৬-৭ চামচ ঈষদুষ্ণ দুধে অল্প একটু জাফরান ভিজিয়ে রাখুন। এতে যোগ করুন এক চামচ গুঁড়ো হলুদ এবং ১ চামচ চন্দনের গুঁড়ো। মুখ ভাল করে পরিষ্কার করার পরে মিশ্রণটি ১০-১৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে নিন।
পুজোর মরসুমে এক দিন অন্তর প্যাকটি ব্যবহার করুন। ত্বক ঝকঝকে থাকবে। কালচে ভাব উধাও হবে। তবে বছরভর জেল্লা ধরে রাখতে সপ্তাহ দু’দিন করে তা ব্যবহার করে যেতে হবে।