হাউজ ওয়াইফ কনসেপ্টের সঙ্গে তো আমরা ভীষণ ভাবে পরিচিত। কিন্তু হাউজ হাজব্যান্ড কথাটা শুনলে হঠাত্ করেই বোধহয় সযত্নে লালিত বহু যুগের মেল ইগোতে জোরসে একটা ধাক্কা লাগে। সমাজের সেট করে দেওয়া অদ্ভুত কিছু নিয়মের জন্য কিছু দিম আগেও হাউজ হাজবেন্ড শব্দটাই প্রায় ব্রাত্য ছিল আমাদের কাছে। কিন্তু জানেন কি বদলে যাওয়া সময়ের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাউজ হাজব্যান্ডের সংখ্যাও। কুঁড়ে, কর্মবিমুখ বা অকিঞ্চিত্কর হলেই পুরুষরা বাড়িতে বসে থাকেন এই ভাবনা এখন অতীত।
হাউজ হাজব্যান্ড হওয়া লজ্জার নয়, বরং বেশ লাভজনক। জেনে নিন হাউজ হাজব্যান্ড হওয়ার সুবিধা কী কী।
১) সারাদিন বাইরে থাকার জন্য সন্তানদের সঙ্গে অদ্ভুত এক মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়। হাউজ হাজব্যান্ডদের কিন্তু সেই সমস্যাটা নেই। বাড়িতে ছেলে-মেয়ের সঙ্গে যতটা সময় কাটানো যাবে, ততই তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হবে। জানতে পারবেন তাদের ভাল লাগা, খারাপ লাগা গুলো বুঝতে পারবেন। নিজেদের মত করে তাদের তৈরি করতে পারবেন।
২) স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই যদি কর্মরত হন এবং পরিস্থিতির চাপে যে কোন এক জনকে যদি বাড়িতে থাকতেই হয়, সেক্ষেত্রে স্বামীর বাড়িতে থাকা আদতে অনেক বেশি লাভ জনক। সাধারণ ভাবে হাউজ ওয়াইফরা বেশ খানিকটা খুঁতখুঁতে হন। সংসারের জন্য তাঁরা সেরা জিনিসটা কিনতেই বেশি পছন্দ করেন। পছন্দ করেন সব সময় নিজের বাড়ি ঘর সাজিয়ে গুছিয়ে ঝাঁ চকচকে করে রাখতে। ফলে তাতে খরচও অনেক বেশি হয়। ছেলেদের ওসবের বালাই নেই। যে টুকু না হলেই নয় তার বাইরে বিশেষ কিছু ভাবতে ভালবাসেন না তাঁরা। ফলে আপসে কমে যায় মাসিক খরচ। বাড়ে সঞ্চয়ের পরিমাণ। বাড়িতে ছেলে মেয়ে থাকলে দরকার পরে না ন্যানির জন্য বাড়তি খরচেরও।
৩) ছোটবেলায় ইচ্ছা ছিল কবিতা লিখে মাত করবেন বা এমন ছবি আঁকবেন যা দেখে সব্বার চোখ ট্যারা হয়ে যাবে। কিন্তু সকাল আটটায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাত আটটায় ফেরার দৌলতে আপনার সেই সব শখই এখন অস্তাচলে। আপনি যেহেতু সাংঘাতিক খুঁতখুঁতে নন তাই বাড়ির কাজ কম্ম মেটাতেও বেশি সময় লাগবে না। যে সময় হাতে পাবেন হাউজ হাজব্যান্ড তখন আরাম করে সেই সব সুপ্ত প্রতিভাই ঝালিয়ে নিতে পারেন। টিভিতে মিস হবে না লা লিগার একটা ম্যাচও। বিকেল বেলা ইচ্ছা হলে ছেলে মেয়ের সঙ্গে চলে যেতে পারেন পার্কে। প্র্যাকটিস করতে পারেন ক্রিকেটটাও। যে বইগুলো সময়ের অভাবে পড়ে হয়ে ওঠা হয়নি, পড়ে ফেলতে পারেন সেই সব কিছুই।
৪) রান্নায় আপনার বুত্পত্তি প্রমাণ করুন। বুঝিয়ে দিন ভজহরি মান্নার থেকে আপনি কোনও অংশে কম নন। আপনি এত কিছু পারেন কাপড় কাচা, সেলাই-ফোঁড়াইয়েই বা পিছিয়ে থাকবেন কেন? প্রমাণ করে দিন, আপনি কিসিসে কম নেহি! বহুমুখী প্রতিভা প্রকাশের এমন সুযোগ আর পাবেন না। গর্ব করে বলুন, আপনি যেমন কঠিন কঠিন অ্যাসাইমেন্ট সল্ভ করতে পারেন তেমনই দক্ষতার সঙ্গে সামলাতে পারেন সংসারও।
আরও পড়ুন-