হাতুড়ের কাছে দাঁত তুলতে গিয়ে মৃত্যু

দাঁত তুলতে গিয়ে হাতুড়ের হাতে প্রাণ খোয়াতে হল এক বালককে। ধূপগুড়ি শহরের নয় নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। সেখানেই বাড়ি সেখানেই বাড়ি রাজু দাসের (৬)। বাড়ির কাছে পরিমল সরকার ও তার সহকারী বিমল সরকার দাঁতের ডাক্তারের পরিচয় দিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে চেম্বার খুলে বসেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৫ ০২:৩৮
Share:

মৃত শিশু। —নিজস্ব চিত্র।

দাঁত তুলতে গিয়ে হাতুড়ের হাতে প্রাণ খোয়াতে হল এক বালককে। ধূপগুড়ি শহরের নয় নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। সেখানেই বাড়ি সেখানেই বাড়ি রাজু দাসের (৬)। বাড়ির কাছে পরিমল সরকার ও তার সহকারী বিমল সরকার দাঁতের ডাক্তারের পরিচয় দিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে চেম্বার খুলে বসেছিলেন। হাতুড়ে দু’জনের বাড়ি ধূপগুড়ি ব্লকের বারোঘড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকায়। ঘটনার পর চেম্বার বন্ধ করে উধাও তারা। মৃত বালকের বাবা কুয়েতে শ্রমিকের কাজ করেন।

Advertisement

কয়েক দিন ধরে রাজু দাঁতের ব্যথায় অস্থির হয়ে পড়েছিল। রবিবার দুপুরে তাঁর মা, ঠাকুরদা গ্রামের ওই হাতুড়ের কাছে নিয়ে যায় তাকে। পরিমলবাবু পরামর্শ দেন রাজুর দাঁত তোলা ছাড়া উপায় নেই। তিনটি দাঁত তোলা হলে যন্ত্রণা কমবে বলে পরিবারের লোকজনকে তিনি জানান। দুপুর ১২টা নাগাদ ইনজেকশন দিয়ে প্রথম দাঁতটি তোলার পর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। সংজ্ঞাহীন হয় যায় সে। এক ঘণ্টা ধরে হাতুড়ে ও তাঁর সহযোগী মিলে চেষ্টা চালালেও ফল না মেলায় পরিবারের লোকজন কার্যত জোর করে বালকটিকে সেখান থেকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা মৃত বলে পরিবারের লোকজনকে জানালেও চিকিৎসকদের কথা বিশ্বাস না করে তাকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানেও চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন রাজু আর বেঁচে নেই। জলপাইগুড়িতে ময়নাতদন্ত করা হয় বালকের। ধূপগুড়ি হাসপাতালের বিএমওএইচ সব্যসাচী মণ্ডল বলেছেন, ‘‘হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে বালকটি মারা গিয়েছিল। কোনও ভাবেই পরিবারের লোকজনকে বোঝানো যাচ্ছি না। হাতুড়ে ইনজেকশনের গলদে ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে হচ্ছে।’’

সন্ধ্যায় ধূপগুড়িতে দেহ নিয়ে আসার পর উত্তেজনা দেখা দেয়। মৃত বালকের ঠাকুরদা অর্জুন দাসের কথায়, ‘‘আমরা প্রথমে তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম আপনি দাঁত তুলতে পারবেন কিনা। কোনও সমস্যা হবে না বলে জানিয়ে দেন পরিমল ও বিমল। মাড়িতে ইনজেকশন দেবার পর থেকেই ছটফট করছিল সে। একটি দাঁত তুলতেই ও জ্ঞান হারায়। ওদের ওদের দু’জনের কঠোর শাস্তি যাতে হয় সে আবেদন করছি।।’’

Advertisement

ধূপগুড়ি থানার আইসি যুগল চন্দ্র বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘অভিযোগ জমা পড়েনি। তবুও আমরা খোঁজ চালাচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন