Life Style news

করোনা মোকাবিলার উপায় আগামী ১৫ দিন বাড়িতে থাকা

নাক মুখ চাপা দিয়ে হাঁচি-কাশি ছাড়াও অযথা নাকে, মুখে বা চোখে  হাত দেওয়া আমাদের অনেকেরই অভ্যেস।

Advertisement

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০ ১৩:১২
Share:

ছবি: পিটিআই।

করোনাভাইরাস রুখতে সচেতনতাই সব থেকে জরুরি— এ কথা জানানো হচ্ছে সমস্ত স্তরেই। সরকারি নির্দেশ থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটাই পরামর্শ— আগামী কিছু দিন অন্তত বাড়িতে থাকা প্রয়োজন।

Advertisement

এই বিষয়ে কনসালট্যান্ট পালমোনলজিস্ট সৌম্য দাস বলেন, “ইটালির ভয়াবহ পরিস্থিতি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, নভেল করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ কে অবহেলা করলে কী মারাত্মক ফল হতে পারে। অবিবেচকের মতো কাজ করলে অন্যরাও ঘোর বিপদে পড়তে পারেন। অনেকের ধারণা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে বা মাস্ক পরে স্বাভাবিক কাজ করায় কোনও বাধা নেই। কিন্তু দোকানে এ দু’টি বস্তুই অমিল। এ ক্ষেত্রে সব থেকে বুদ্ধিমানের কাজ, নিতান্ত দরকার না পড়লে বাড়ির বাইরে না যাওয়া।”

সৌম্যবাবুর কথায়: “সবার ক্ষেত্রে এই বিধি পালন সম্ভব না-ও হতে পারে। তাই ভাইরাসের থাবা থেকে মুক্তি পেতে মুখে রুমাল বেঁধে রাখতে পারেন। হাঁচি-কাশি হলে অবশ্যই মুখে চাপা দেওয়া উচিত, এই বোধ আশা করি সকলেরই আছে।” এটা ঠিক, সচেতনতা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। শুধু কোভিড -১৯ই নয়, অন্যান্য ফ্লু ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার একমাত্র উপায় এটিই। আসলে সার্স-কোভ-২ করোনা ভাইরাসের চরিত্রের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে এখনও আমরা অনেক কিছুই জানি না। তাই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত হারে। তবে একটা বিষয় নিশ্চিত যে, ড্রপলেট অর্থাৎ হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাতাসবাহিত হয়ে অসুখটা ছড়িয়ে পড়ে। নাক মুখ চাপা দিয়ে হাঁচি-কাশি ছাড়াও অযথা নাকে, মুখে বা চোখে হাত দেওয়া আমাদের অনেকেরই অভ্যেস। এই বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনা-ভয় ঠেকাতে জিমে যাওয়ায় নিষেধ করল ‘হু’! শরীরচর্চার সময় সংক্রমণ এড়াতে মেনে চলুন এ সব

পালমোনলজিস্ট সৌম্য দাস বললেন, “কোভিড -১৯ করোনাভাইরাস সব থেকে ক্ষতি করে ধূমপায়ীদের। তাই এই সুযোগে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। বাড়িতে বসে ঘন ঘন সিগারেট টানলে নিজের ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের অন্যরাও অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কোনও ভাবে সার্স-কোভ-২ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হলে রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে।’’ তাঁর অভিমত, এই ভাইরাস সরাসরি শ্বাসনালী ও ফুসফুসকে আক্রমণ করে অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম বা এআরডিএস হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। রোগীকে ভেন্টিলেশনে দিয়েও অনেক সময় শেষরক্ষা করা যায় না। এই অসুখ আটকাতে সচেষ্ট হতে হবে সবাইকে। শুধুমাত্র চিকিৎসক বা সরকার কিন্তু এই অতিমারী আটকাতে পারবেন না। সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভাইরাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে এখনই।

আরও পড়ুন: মাল্টিভিটামিন খেলেই কি করোনা-সংক্রমণ এড়ানো যাবে?

হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা মাস্ক না থাকলে যে সব নিয়ম মেনে চলতে হবে সে বিষয়ে একে একে জেনে নেওয়া যাক।

• মুখে রুমাল চাপা দিয়ে হাঁচি-কাশি বাধ্যতামূলক।

• নাক, মুখ বা চোখে হাত দেওয়া মানা। দিলেও হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। বাড়িতে থাকলে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেওয়া উচিত।

• করমর্দন বা জড়িয়ে ধরে অভ্যর্থনা নয়, দূরত্ব বজায় রেখে নমস্কার জানান।

• দরজা খুলতে হাতের বদলে কনুই ব্যবহারে করুন।

• কোভিড-১৯ ভাইরাস থুতু বা কফের মধ্যে বেশ কয়েক ঘণ্টা বেঁচে থাকে। তাই যেখানে সেখানে থুতু ফেলবেন না।

• বাইরে থেকে ফিরে সোজা বাথরুমে পোশাক ছেড়ে গরম জলে ভিজিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে সাবান দিয়ে কাচা পোশাক পরে তবেই ঘরে ঢুকুন।

সার্স-কোভ-২ করোনাভাইরাসকে আটকে দেওয়ার একমাত্র রাস্তা স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি থাকা। আশা করা যায়, এই ভাবেই সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় কোভিড ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত রুখে দেওয়া সম্ভব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন