দামে ভারী হয়েও দেশিকে টেক্কা দিচ্ছে ডাচ গোলাপ

বাঁকুড়ার মাচানতলায় ডাচ গোলাপ কিনে লালবাজারের বাসিন্দা ছোটন হালদার বলেন, “বিয়ের পাকা-কথা হয়ে গিয়েছে। সাংসারিক জীবনে প্রবেশ করার আগে এটাই শেষ প্রেম দিবস। তাই সবথেকে সুন্দর গোলাপটাই কিনছি।” দেশি গোলাপের দাম এ দিন যেখানে ছিল ৫-১০ টাকার মধ্যে, সেখানে প্রতিটি ডাচ গোলাপ বিক্রি হয়েছে প্রায় ৩০ টাকায়। 

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩৭
Share:

দিকে-দিকে: (বাঁ দিকে) বাঁকুড়া এবং (ডান দিকে) পুরুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

যেমন বাহার, তেমন দরও। লম্বা ডাঁটার উপরে ফুটে এত্ত বড় লাল গোলাপ। পাপড়ির গায়ে জমে বিন্দু বিন্দু জল। ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে তাই দেশি গোলাপকে টেক্কা দিল ‘ডাচ গোলাপ’। সেই গোলাপ কিনতে বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার ফুলের দোকানগুলিতে ভিড় জমালেন প্রেমিক-প্রেমিকারা। তারপর শহর ও আশপাশের নিভৃত জায়গায় সেই গোলাপ হাত-বদল হয়ে গেল।

Advertisement

বাঁকুড়ার মাচানতলায় ডাচ গোলাপ কিনে লালবাজারের বাসিন্দা ছোটন হালদার বলেন, “বিয়ের পাকা-কথা হয়ে গিয়েছে। সাংসারিক জীবনে প্রবেশ করার আগে এটাই শেষ প্রেম দিবস। তাই সবথেকে সুন্দর গোলাপটাই কিনছি।” দেশি গোলাপের দাম এ দিন যেখানে ছিল ৫-১০ টাকার মধ্যে, সেখানে প্রতিটি ডাচ গোলাপ বিক্রি হয়েছে প্রায় ৩০ টাকায়।

বিক্রি বাড়ায় খুশি ফুল বিক্রেতারাও। মাচানতনার ফুল ব্যবসায়ী বরেন সরকার দাবি করেন, “বেঙ্গালুরু থেকে ডাচ গোলাপ আমদানি করেছি। ১৫০টা গোলাপ কিনেছিলাম। দুপুরের মধ্যেই প্রায় সব শেষ হয়ে গিয়েছে। দাম কম হলেও তুলনায় দেশি গোলাপের চাহিদা এ বার তেমন ছিল না।”

Advertisement

পুরুলিয়া শহরেও গোলাপের চাহিদা ছিল তুঙ্গে। এই বিশেষ দিনের জন্য হাজারের বেশি বিদেশি দামি লাল গোলাপ এনেছিলেন পুরুলিয়া শহরের বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকার ফুল ব্যবসায়ী তাপস অধিকারী। দিনের শেষে মাত্র কয়েকটি পড়েছিল তাঁর দোকানে। রঘুনাথপুরে থানার সামনের ফুল ব্যবসায়ী সনাতন রেওয়ানি এ দিন বিক্রি করেছেন প্রায় চারশো গোলাপ। দু’জনেই বলছেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে লাল গোলাপের চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে। দামও বেড়েছে। কিন্তু, কুছ পরোয়া নেই— মেজাজেই প্রিয়জনদের জন্য গোলাপ কিনছে তরুণরা।”

প্রেমের দিন উদ্‌যাপনে রাজ্যের অন্য জেলার থেকে খুব একটা পিছিয়ে নেই পুরুলিয়াও। এ দিন সকাল থেকেই পুরুলিয়া শহরের নেতাজি সুভাষ উদ্যানে জোড়ায় জোড়ায় তরুণ-তরুণীরা ভিড় জমিয়েছিলেন। পার্কের বাইরে হাজির ফুচকা থেকে শুরু করে আইসক্রিমের ঠেলাগাড়ি। বেলা গড়াতেই বাতাসে তেতে ওঠে। তাই, পার্ক থেকে অনেকেই বেরিয়ে এসে আইসক্রিমে শরীর জুড়োলেন।

রঘুনাথপুর শহরে পার্কের অভাবে অনেকের আক্ষেপ রয়েছে। তাই অনেকেই বেছে নিয়েছিলেন জয়চণ্ডী পাহাড়কে। পাহাড় গিয়ে দেখা গিয়েছে সদ্য বিবাহিত দম্পতি থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণীরা অনেকেই ভিড় জমিয়েছেন সেখানে।

তবে, এ বছর এই দিনের কার্ডের বিক্রি খুব একটা বেশি হয়নি বলে জানাচ্ছেন পুরুলিয়া শহরের ব্যবসায়ী ক্যাপ্টেন সাউ। তিনি জানাচ্ছেন,অনেকেই উপহার কিনছেন, কিন্তু কার্ড কেনার দিকে তরুণ প্রজন্মের ঝোঁকটা অনেকটাই কম।

ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে বিশেষ ভাবে সাজানো হয়েছে পুরুলিয়া শহরের কয়েকটি শপিংমল। সন্ধ্যায় খোলা ছাদে বিনোদনের বিশেষ ব্যবস্থাও তারা করেছেন বলে জানাচ্ছেন শপিংমল পরিচালনা করেন এমন একটি সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক অমিত বিদ্যার্থী। পুরুলিয়া শহরের সাহেববাঁধের পাশে একটি হোটেল ও রেস্তোরাঁর তরফে রোহিত লাটা বলেন, ‘‘ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে রাতে রেস্তোরাঁয় বিশেষ ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের আয়োজন করা হয়েছে। সঙ্গে থাকছে নব দম্পতিদের জন্য গিফট কুপনের ব্যবস্থা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন