COVID-19

Covid hero: কোভিড হয়েছে? দ্রুত আপনার বাড়িতে দুধ-ফল-সব্জি নিয়ে পৌঁছবেন পৃথ্বীশ

বাড়িতে কোভিড রোগী মানেই গোটা পরিবার ঘরবন্দি। অথচ আলু-পেঁয়াজ-ফল-দুধ লাগবেই। অ্যাপ অকেজো হলেও আপনার মুশকিল আসান করতে রয়েছেন এই ব্যক্তি।

Advertisement

পৃথা বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২১ ০৯:০৭
Share:

কোভিড-রোগীদের দুধ-ফল-সব্জি পৌঁছে দেন পৃথ্বীশ মাইতি।

বাড়িতে কোভিড রোগী মানেই গোটা পরিবার ঘরবন্দি। এদিকে রোজকার শাক-সব্জি, দুধ, ফল তো লাগবেই। উপায় একমাত্র বিভিন্ন বিপণির ডেলিভারি অ্যাপ। এই লকডাউনে এত মানুষ সেগুলি ব্যবহার করছেন, যে মাঝে মাঝেই তারা নতুন অর্ডার নিতে পারছে না। কিংবা কিছু অর্ডার করতে পারলেও বাড়ি পৌঁছতে প্রায় ৩ থেকে ৪ দিন লেগে যাচ্ছে। অথচ বাড়িতে কোভিড-রোগীকে সারাক্ষণ স্বাস্থ্যকর খাবার জোগান না দিলে অসুস্থতা রয়ে যাবে বহু দিন। এই বিপদে অনেকেই পড়ছেন। আর তাঁদেরই পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছেন পৃথ্বীশ মাইতি। তাঁর ফোনে জরুরি জিনিসের তালিকা হোয়াট্‌সঅ্যাপ করলে তিনি এক বেলার মধ্যে সব কিছু পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

Advertisement

গত ১০ বছর ধরে প্রিন্স আনওয়ার শাহ রোডের এক নামকরা বিপণির জন্য বিভিন্ন বাড়িতে জিনিস পৌঁছনোর দায়িত্বে রয়েছেন পৃথ্বীশ। এমনিতে অ্যাপ থেকে অর্ডার করতে হয় প্রয়োজনীয় জিনিস। তবে সেগুলি পেতে ৩ থেকে ৮ দিন সময় লেগে যায়। কিন্তু পৃথ্বীশের চেনা পরিচিত গ্রাহকেরা বিপদে পড়লে তাঁকেই হোয়াট্‌সঅ্যাপ করেন। দক্ষিণ কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় বহু বাড়ির কোভিড রোগীদের সাহায্য করেছেন তিনি। ‘‘অনেক বাড়িতে আসলে বয়স্ক মানুষ থাকেন। এই করোনাকালে তাঁদের কেয়ারটেকারও হয়তো নিজের বাড়ি চলে গিয়েছে। কোনও রকমে রান্না করে খান ওঁরা। তাঁদের মধ্যে কারও করোনা হলে বাজার করাই অসম্ভব। তাই আমরা চেষ্টা করি, মোটামুটি ৫-৬ কিলোমিটারের মধ্যে ঠিকানা হলে সেই বেলাই জিনিস পৌঁছে দিতে। মাঝে মাঝে একটু রাতে পৌঁছয়, কিন্তু মানুষ তাঁদের প্রয়োজনীয় জিনিস পেয়ে যান,’’ বললেন পৃথ্বীশ।

তবে পৃথ্বীশের জনপ্রিয়তা শুধু প্রয়োজনীয় জিনিস বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য নয়। তিনি প্রত্যেক গ্রাহকের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্তরে মিশে যান। কোভিড রোগীদের নিয়মিত খোঁজ রাখেন। কী করলে এই সময় মন ভাল থাকবে, তেমন কিছু টোটকা দেন। তাঁর সহানুভূতিশীল ব্যবহার মন জয় করেছে অনেকেরই। তাই তাঁরা সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর অনেকেই আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন পৃথ্বীশকে। ‘‘অনেক অদ্ভুত ঘটনাই ঘটে। এক বাড়িতে আমি শাক-সব্জি পৌঁছে দিতাম। তাঁরা এখন সুস্থ। একদিন ফোনে কথায় কথায় বলেছিলাম, কাজের খুব চাপ, তাই বেলা ৩টে বেজে গিয়েছে, কিন্তু পেটে কিছু পড়েনি। উনি ডেলিভারির সময় রুটি তরকারি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন আমার জন্য,’’ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন পৃথ্বীশ।

Advertisement

করোনা-রোগীদের সাহায্য করার তাগিদ কোথা থেকে পেলেন তিনি? প়ৃথ্বীশ বললেন, ‘‘আমার স্ত্রী পেশায় নার্স। সে যখন বাড়ির বাচ্চাদের রেখে প্রত্যেক দিন মানুষকে সাহায্য করতে পারছে, আমি কেন ভয়ে পিছিয়ে থাকব? প্রত্যেক দিন বিভিন্ন বাড়িতে জিনিস পৌঁছে দিই, আমি মনে করি আমরাও কোভিড-যোদ্ধা। এই সময়ে মানুষের পাশে না দাঁড়ালে কখন দাঁড়াব?’’

আরও পড়ুন:

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement