এ বার হাজির এনসেফ্যালাইটিস, মৃত্যু বাঁকুড়ায়

সোয়াইন ফ্লু নিয়ে উদ্বেগ আর বিভ্রান্তি কাটতে না-কাটতেই রাজ্যে এ বার অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোম বা এইএস-এর রক্তচক্ষু। আতঙ্ক জাগিয়ে ওই রোগ ফিরে এসেছে বাঁকুড়ায়। এইএসে আক্রান্ত হয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে একটি শিশুর। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মৃত শিশুটির নাম মনসা লোহার (৩)। তার বাড়ি পাত্রসায়র থানা এলাকায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে জ্বর নিয়ে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মারা যায় সে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৩১
Share:

সোয়াইন ফ্লু নিয়ে উদ্বেগ আর বিভ্রান্তি কাটতে না-কাটতেই রাজ্যে এ বার অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোম বা এইএস-এর রক্তচক্ষু। আতঙ্ক জাগিয়ে ওই রোগ ফিরে এসেছে বাঁকুড়ায়।

Advertisement

এইএসে আক্রান্ত হয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে একটি শিশুর। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মৃত শিশুটির নাম মনসা লোহার (৩)। তার বাড়ি পাত্রসায়র থানা এলাকায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে জ্বর নিয়ে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মারা যায় সে। হাসপাতালের সুপার পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “শিশুটি যখন এসেছিল, তখনই তার অবস্থা ছিল অত্যন্ত সঙ্কটজনক। তার জ্ঞান আর ফেরানো যায়নি। পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোমেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।”

এমনিতেই এনসেফ্যালাইটিস-প্রবণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত বাঁকুড়া। ২০১২-তে ওই জেলায় ১৩১ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মারা যান ২৫ জন। ২০১৩-য় ১৬০ জন আক্রান্তের মধ্যে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৪-তে মৃত্যু হয় ১৩ জনের। চলতি বছরে এখনও আক্রান্তের সংখ্যা অন্যান্য বারের থেকে কম বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। তবে শালতোড়া, মেজিয়া, গঙ্গাজলঘাঁটি, সিমলাপাল, পাত্রসায়র, রাইপুর, রানিবাঁধ এবং বাঁকুড়া পুর এলাকা থেকেও ফি-বছর এনসেফ্যালাইটিসের রোগী মিলেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার বলেন, ‘‘এই সময় সাধারণত মশাবাহিত রোগ দেখা যায় না। তাই এই ঘটনা উদ্বেগের।’’ এইএস ছাড়াও ভাইরাল ফিভার এবং ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যাও নেহাত কম নয় ওই জেলায়।

Advertisement

গত বছর বাঁকুড়ার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ আকার নিয়েছিল এনসেফ্যালাইটিস। মৃত্যু হয় ১৬৫ জনের। তাঁদের মধ্যে ৩৭ জন মারা যান জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে। সে-বার জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও দার্জিলিঙে রীতিমতো দাপিয়ে বেড়িয়েছিল ওই রোগ। তার প্রকোপ বেশি ছিল জলপাইগুড়িতে। ঠিক সময়ে তথ্য না-দেওয়ায় সাসপেন্ড করা হয়েছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সুপার, অধ্যক্ষ এবং দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। এ বার তাই আর কোনও জেলাতেই তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে দেরি করার ঝুঁকি নিচ্ছেন না স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্তারা। শুয়োর ধরা এবং শুয়োরদের টিকাকরণের কাজের সঙ্গে সঙ্গে জলাধারগুলি পরিষ্কার করার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। এলাকায় প্রচার চালানোর জন্য স্বাস্থ্য ভবন থেকে নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে। সেই সঙ্গে কারও জ্বর হলেই দ্রুত রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে শুক্রবার জানান, বছরের প্রথম দিকে এইএসের প্রকোপ কম থাকে। প্রকোপ বাড়ে মে মাসের পরে। ‘‘আমরা শুরু থেকেই প্রস্তুত আছি। সময়মতো রক্তপরীক্ষার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। পরীক্ষার কিট পেতে যাতে কোনও রকম সমস্যা না-হয়, সে-দিকেও নজর রাখা হচ্ছে,’’ আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন