আলোর উৎসবে সামিল হতে মেনে চলুন কিছু সতর্কতা। ছবি: পিক্সঅ্যাবে
কালীপুজো মানেই বাজি পোড়ানোর দিন। আলোর উৎসবে সামিল হতে আতসবাজি অন্যতম উপাদান। কিন্তু একটু অসাবধান হলেই এই বাজি থেকে ঘটতে পারে ভয়ানক বিপদ। এ বছর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাত আটটা থেকে দশটার মধ্যেই বাজি পোড়ানোর কাজ সারতে হবে। নিষিদ্ধ হয়েছে শব্দবাজি। তবু উৎসবমুখর মানুষের ভিড়ের কমতি নেই বাজির দোকানে। বেছেবুছে শব্দহীন আলোর বাজি কিনতে হবে তো!
তা না হয় হল, কিন্তু বাজি পোড়ানোর মূল নিয়মগুলো না মেনে যেমন-তেমন করে এই কাজ সারতে গেলে কিন্তু বিপদ আপনারই। বিশেষ করে বাড়ির শিশুরা যখন বাজি পোড়াবে তখন বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা অবশ্যই উচিত।
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় ঘোষ জানালেন এমন কিছু নিয়মের কথাই, যা মেনে বাজি পোড়ালে বিপদের আশঙ্কা কমে অনেকখানি। দেখে নিন সে সব।
আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ ছেলেমেয়ে! আর দেরি নয়, বেঁধে দিন সময়
শিশুর হাতে বিস্ফোরণ সম্ভাবনাযুক্ত বাজি তুলে দেবেন না, মুখেও রাখুন মাস্ক । —নিজস্ব চিত্র।
প্রথমেই একটা বিষয়ে সতর্ক থাকুন। শিশুরা বাজি পোড়ালে অবশ্যই তাদের সঙ্গে থাকুন। কোনও অবস্থাতেই তাদের দিক থেকে নজর সরাবেন না। রংমশাল, তুবড়ি, রকেট— যে সব বাজিতে বিস্ফোরণ ঘটার সম্ভাবনা বেশি, সে সব ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন। সে সব বাজি সরাসরি হাতে তুলে দেবেন না। নিজেরা ব্যবহারের সময়ও পাটকাঠি ব্যবহার করে হাতের থেকে দূরত্ব বাড়ান। বাজি পোড়ানোর সময় অবশ্যই সুতির পোশাক পরুন। ফুলহাতা পোশাক পরে বাজি পোড়ানোর অভ্যাস আছে অনেকের। সে ধারণা ভুল। আগুনের ছোট ছোট ফুলকি অনেক সময় চামড়ায় লাগলেও সামান্য জ্বালা ব্যতীত তা কোনও প্রদাহ তৈরি করে না। কিন্তু ফুলহাতা জামার সুতোর সংস্পর্শে সে সব এলে আগুন লাগার সম্ভাবনা বাড়ে।
আরও পড়ুন: শীতকাতুরে? এর পিছনে এ সব কারণ নেই তো!
বাজি শুধু দাহ্য পদার্থে ঠাসা থাকে এমনই নয়, বরং এতে আছে সালফার, নানা রকম রং ও ক্ষতিকারক রাসায়নিক। তা থেকে শ্বাসকষ্ট ও র্যাশের শিকার হতে পারেন। তাই এ সব পোড়ানোর সময় অবশ্যই নাক-মুখ চাপা দিতে পাতলা সুতির কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করুন। রংমশাল ও রকেট ও ফুলঝুরির সঙ্গে পাটকাঠি যোগ করুন। এ সব বাজি যতটা সম্ভব হাতের থেকে দূরে রাখুন। বাজি পোড়ানোর সময় অবশ্যই পায়ে রাখুন জুতো। পোড়া বাজির অবশিষ্টাংশ, আগুনের ফুলকি এ সব থেকে পাকে বাঁচানো অবশ্যই জরুরি। পুড়ে যাওয়া বাজির আগুন পুরোপুরি না নিভিয়ে কখনওই যেখানে সেখানে ছুড়ে ফেলবেন না। অনেক সময় ভিতরে দাহ্য পদার্থ থেকে যায়। তা থেকে অন্যের বিপদ হতে পারে। তাই বাজি পুরো পুড়ে যাওয়া অবধি অপেক্ষা করুন এবং একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সব অবশিষ্টাংশ জড়ো করে এক সঙ্গে কোনও নিরাপদ জায়গায় ফেলুন।
(গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ)