কী ভাবে বাঁচলে আপনার পরিবারও অক্ষুণ্ণ থাকবে, আবার মুগ্ধতার মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্বটুকু থাকবে?
কথায় বলে, না বুঝে মজো না পিরীতে। কিন্তু কে শোনা কার কথা! চোখের চাতুরি, হাঁটাচলা, ব্যক্তিত্ব কোনটা যে মনকে ভিজিয়ে দেবে, কেউ আগে থেকে বলতে পারবে না। অফিসে এমন ঘটনা ঘটতেই পারে। তৈরি হতেই পারে নতুন কোনও বন্ধুত্ব বা ক্রাশ।
সাত-পাঁচ না ভেবেই আমরা ধীরে ধীরে মুগ্ধতার জালে ধরা দিই। তুমুল মগ্ন দৃষ্টিতে দেখি পছন্দের মানুষের পারফরম্যান্স। কখনও সখনও করে ফেলি কিছু বাড়াবাড়িও। হিতাহিত জ্ঞানটুকুও থাকে না। অনেক সময় টনক নড়ে বিপদ ঘটে যাওয়ার পর।
তবে ঠান্ডা মাথায় তলিয়ে ভাবলে মুগ্ধতা কোনও খারাপ ব্যাপার নয়। তবু যাঁদের মন খুঁতখুঁত— কেন এমন হল, তাঁদের জন্য মনোবিদ অনন্যা বন্দোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘আমাদের দশটা-পাঁচটার রুটিন জীবনের ফলেই প্রিয়জনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে। অথচ এই সময়েই অফিসে আপনি রুটিন আট ঘন্টা পাচ্ছেন। কাজ, ফুরসত দুই-ই ভাগ করে নেওয়া যাচ্ছে। এখানে সাধারণ আগ্রহ থাকলে পছন্দ তৈরি হওয়া কোনও অস্বাভাবিক কিছু না। একই সঙ্গে সমস্ত সম্পর্কের পরিণতিগুলি সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল থাকাও জরুরি।’’
আরও পড়ুন: নামমাত্র দামে মাইক্রো প্ল্যান্টেশন, একচিলতে ঘরেও সবুজের হাতছানি
অনন্যা দেবীর মতে, ‘‘স্বচ্ছতা না থাকলে জীবনকে বহন করাই কঠিন। কাজেই আপনার পরিজন সম্পর্কে আপনার নতুন বন্ধুকে জানান। দরকারে আপনাদের বন্ধুত্বের কথাও আগাম জানান বাড়িতে। স্বামী বা স্ত্রী-র সঙ্গে তাঁর আলাপ করিয়ে দিন। মাঝে মাঝেই বাড়িতে সকলের সঙ্গে সময় কাটাতে ডাকুন। তা হলে সম্পর্কের স্বচ্ছতা নিয়ে দুর্ভাবনা থাকবে না।’’
খুব সত্যি বললে, আধুনিক জীবনে এই ধরনের জটিলতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া মুশকিল। তবে পুরো বিষয়টাই নির্ভর করে এক ধরনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও ম্যানেজেরিয়াল স্কিলের ওপর। কী ভাবে বাঁচলে আপনার পরিবারও অক্ষুণ্ণ থাকবে, আবার মুগ্ধতার মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্বটুকু থাকবে? রইল মনোবিদের পরামর্শ—
আরও পড়ুন: গরমে ত্বকে জেল্লা আনতে কোন রঙের ক্লে মাস্ক আপনার দরকার? কী ভাবেই বা বানাবেন?
প্রথমেই জীবনসঙ্গীর সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখুন। দাম্পত্যে যে ঘাটতিগুলি শূন্যতা তৈরি করে তাকে মিটিয়ে ফেলাই শ্রেয়। পরিবারের মানুষটির সঙ্গে সম্পর্ক যত সহজ হবে, তত অন্য বন্ধুত্ব নিয়ে সরাসরি কথা বলতে পারবেন। কাজের ব্যস্ততার সময় পরিবারের জন্য সময় বার করুন। প্রয়োজনে ছুটি নিন। পরিবারের আগে অফিসের মুগ্ধ বন্ধুত্বকে এগিয়ে রাখবেন না কখনওই। খোলাখুলি কথা বলুন, নিজের মু্গ্ধতার জায়গাটা কী এবং কোথায় তার সীমানা সেটা নিজে পরিষ্কার বুঝুন ও বুঝিয়ে দিন স্বামী বা স্ত্রীকেও। আপনার পার্টনারের জায়গাটা যে অনন্য, সেটাও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বুঝিয়ে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
অফিসে এই ধরনের ভাল সম্পর্ক তৈরি হওয়া খারাপ নয়। তবে প্রত্যাশার লাগামটা যেন আপনার হাতেই থাকে। না হলে মাশুল গুণতে হতে পারে। কোনও সম্পর্কই প্রতিযোগিতা নয়। তাই কার গুরুত্ব বেশি, কার কম এ সব অন্তঃসারশূন্য ভাবনা ভাববেন না। বরং নতুন বন্ধুত্বে নিজের সীমানা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকুন।