ফেলে দেওয়া জিনিসপত্রে গাছ লাগিয়ে সাজান বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
সবুজের অভাব সর্বত্র। আমাদের দিনযাপন ক্রমশ আরও ধূসর ও রুক্ষ হয়ে উঠছে। ক্লান্ত মানুষের জিরিয়ে নেওয়ার জন্য শহরে কোনও গাছের ছায়া নেই, শিশুর খেলার জন্য নেই ঘাসের মাঠ। বাড়ির সামনে বাগানের বিলাসিতা বহু আগেই ভুলতে হয়েছে। আর ফ্ল্যাট হলে তো কোনও কথাই নেই!
এমনকি নিজের চার দেওয়ালের ভিতরও এতটুকু জায়গার সঙ্কুলান হয় না। কিন্তু সবুজের থেকে মুখ ফিরিয়ে কতদূর যাবে মানুষ? কোনও ভাবেই কি সম্ভব নয় একচিলতে সবুজকে জীবনের অংশ করে তোলা?
এই প্রশ্নের উত্তরে সমস্ত ‘না’পেরিয়ে আরও একবার অন্য রকম করে ভাবার সুযোগ করে দিচ্ছেন শ্রীরামপুরের বাসিন্দা প্রদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়। দশ ফুট বাই দশ ফুট পায়রার খোপেও যাতে জায়গা পায় এক চিলতে সবুজ, তাই অভিনব মাইক্রো প্ল্যান্টেশনের পরিকল্পনা নিয়েছেন তিনি। খুব সহজ ভাষায় বললে, ছোট ছোট হাতের তালুর সাইজের পাত্রে গাছ লাগালেও কী ভাবে তাকে লালন করা যায়, এ তারই পাঠ।সযত্নে গাছগুলিকে বাঁচিয়ে তো রাখছেনই, আবার কেউ কিনতে এলে তাঁকেও প্রদীপ্ত শিখিয়ে দিচ্ছেন গাছ বাঁচানোর দাওয়াই।
আরও পড়ুন: পেটের মেদ বেড়েই চলেছে? এ সব জরুরি ব্যায়ামই ভুঁড়ি-সমস্যার সমাধান
গাছের টব হিসেবে বেছে নিচ্ছেন ফেলে দেওয়া চায়ের কাপ, নষ্ট হয়ে যাওয়া বাল্ব। কিন্তু হঠাৎ এমন পরিকল্পনা কেন? প্রদীপ্ত জানালেন, ‘‘এমন কিছু করতে চাই যা অনেক মানুষের উপকারে আসবে। আমি ফেলে দেওয়া জিনিসেই গাছ বসাই। এই রিসাইক্লিং থেকে যদি কেউ নিজের চারপাশের নিত্য ব্যবহারের জিনিসগুলি ফেলে না দিয়ে নতুন করে ব্যবহারের কথা ভাবেন আমার ভাল লাগবে। তা ছাড়া আজকাল ছোটরা না চাইতেই এত কিছু পেয়ে যায় যে তাদের মধ্য অপচয়ের মানসিকতা গড়ে ওঠে। আমার ছোট গাছগুলি যেমন ছোট ছোট জিনিসের যত্ন শেখাবে ছোটদের।’’
কী ধরনের গাছ লাগানো সম্ভব?‘‘ফার্ন, ক্যাকটাস, ইউফোরবিয়া মিলি, গম ইত্যাদি। খুব সহজে বললে, খুব বেশি যত্ন লাগে না এমন সব গাছই লাগানো যায়’’, জানালেন প্রদীপ্ত।গাছের দামও মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে। ১৫০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে নানা সুদৃশ্য বয়ামে রাখা গাছগুলি। জানলায়, স্টাডিতে, খাবার টেবিলে রাখলে গাছ না শো পিস বোঝার জো থাকবে না।
আরও পড়ুন: গরমে ত্বকে জেল্লা আনতে কোন রঙের ক্লে মাস্ক আপনার দরকার? কী ভাবেই বা বানাবেন?
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সযত্নে গাছগুলিকে বাঁচিয়ে রাখার উপায়ও বাতলেছেন প্রদীপ্ত। কেউ কিনতে এলে তাঁকেও শিখিয়ে দিচ্ছেন গাছ বাঁচানোর দাওয়াই।তাঁর মতে, সামান্য খেয়াল রাখলে, প্রতিদিন অল্প জল দিলে, বাড়তি পাতা ছেঁটে দিলে দুই বছর অনায়াসে বাঁচবে কাচের বোতলে বন্দি সবুজ।
এ বার এই মাইক্রো প্ল্যান্টেশনের হাত ধরে আপনার ঘরকেও করে তুলুন সবুজ উপত্যকা। যে প্রকৃতির নির্বাক ডাক আমরা আর শুনতে পাই না, তাকেই হাতের তালুতে বন্দি করে নিজের চিলতে ঘরেই বানিয়ে ফেলুন মনের মতো বাগান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy