আধুনিক সময় আর ব্যস্ত জীবনযাত্রার কবলে পড়ে শৈশব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেই। তার সঙ্গে বদলে যাচ্ছে টিন এজারদের ভাবনা, মনস্তত্ত্বও। তাদের জগতেও হতাশার নানা রসদ লুকিয়ে থাকে। আপনার সন্তানও কি টিন এজে পা দিয়েছে? তার মধ্যেও কি খিটখিটে স্বভাব বা হতাশার ছাপ দেখতে পান? তা হলে জেনে নিন তার কারণ ও সমাধান। ছবি: শাটারস্টক।
বেশির ভাগ মনোবিদের মতে, সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণি থেকেই আপনার সন্তানের ব্যবহারিক কিছু পরিবর্তন আসে। সন্তানের ব্যবহারের বদলের মধ্যেই তার ভাবনা, বেড়ে ওঠা ও সঙ্গ সম্পর্কে ধারণা করা যায়। তাই তার মনের হদিশ জানতে আগে তার ব্যবহারের প্রতি নজর রাখুন। ছবি: শাটারস্টক।
ব্যবহারিক বদল সাধারণত পারিপার্শ্বিক নানা কারণে আসতে পারে। বয়সজনিত বদলের মূলে যেমন তার স্বাধীন চিন্তা-ভাবনা গড়ে ওঠার একটা ছাপ থাকে, তেমনই পড়াশোনা বা নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া, বন্ধুসঙ্গ ইত্যাদি নানা কারণেই তা হতে পারে। এমন হলে সন্তানের সঙ্গে বসুন। তাকে সময় দিন। তার সঙ্গে ভাগ করুন তার সমস্যা। ছবি: শাটারস্টক।
কেবল মনের উপর চাপ থেকেই নয়, অনেক সময় শারীরিক কোনও সমস্যা থেকেও এই হতাশা জন্মায়। মনোবিদদের মতে, অনেক সময়ই দেখা যায় বন্ধুরা একটু বেশি লম্বা হয়ে যাচ্ছে বা তারা স্লিম থাকলেও আপনার সন্তান পারছে না— এমন নানা জটিলতা এই বয়সে সহজেই থাবা বসায়। এমন হলে প্রয়োজনে তাকে শারীরিক সমস্যা মেটাতে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। ছবি: শাটারস্টক।
পড়াশোনার জন্য সন্তানকে কি খুব চাপ দিচ্ছেন? এমন যদি করেন, তা হলে এ স্বভাব বদলান। সন্তানের কেরিয়ারের চেয়ে তার জীবন আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হওয়াই বাঞ্ছনীয়। মেধা বা বুদ্ধির উপর কারও হাত নেই এই সহজ সত্যি মেনে তাকে উৎসাহ দিন। তাতে বরং সে অনেক সহজ হয়ে বাঁচতে শিখবে। ছবি: শাটারস্টক।
ছোটবেলায় কোনও ভাবে কি গুরুতর কোনও শারীরিক বা যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিল সে? আপাত দৃষ্টিতে সে সময় পেরিয়ে এসেছে বলে মনে হলেও তা কিন্তু সন্তানের অবচেতনে প্রভাব ফেলতেই থাকে। এমন ঘটনার শিকার হলে তার সঠিক চিকিৎসা ও পারিবারিক সাহায্যের যেন কোনও অভাব না হয়। এতেই কাটবে তার হতাশা। —নিজস্ব চিত্র।
পরিবারের কোনও খারাপ ঘটনার সাক্ষী হতে হয়েছে সন্তানকে? দাম্পত্য বা পারিবারিক কলহের কুপ্রভাব এড়াতে পারে না সে। সেই হতাশার প্রকাশ মূলত শুরু হয়ে যায় টিন এজ থেকেই। তাই তাকে সুস্থ রাখতে আগে নিজেরা ভাল থাকুন। একান্ত তা সম্ভব না হলে নিত্য অশান্তি এড়িয়ে আলাদা থাকুন, কিন্তু তাকে একটা সুস্থ জীবন দিন। ছবি: শাটারস্টক।
বন্ধুদের সঙ্গে তার মিশতে কোথাও অসুবিধা হচ্ছে কি? তেমন হলে তার সঙ্গে কথা বলুন। যদি দেখেন, এতে তার কোনও ভূমিকা নেই, তা হলে তাকে বোঝান, বন্ধুর সংখ্যা নয়, বরং ভাল মানের বন্ধুর দরকারই বেশি। আর যদি বোঝেন, এতে সন্তানের কোনও ভূমিকা রয়েছে, তা হলে কথা বলুন। প্রয়োজনে নিন চিকিৎসকের পরামর্শ। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
পরীক্ষার রেজাল্ট হোক বা প্রেম— সন্তানকে সব কিছুই খুব বাস্তব ও সহজ ভাবে দেখতে শেখান। ওর উপর অকারণ কোনও চাপ যেমন নিজেরাও দেবেন না, তেমন যে কোনও পরিস্থিতিকে শান্ত মাথায় ও শক্ত মনে মোকাবিলা শিক্ষা দিন ছোটবেলা থেকেই। আপনিও হয়ে উঠুন ওর বন্ধু। তাতে সে ভাগ করতে পারবে সব। হতাশার অবকাশ থাকবে না। ছবি: শাটারস্টক।