প্রতীকী চিতের।
আপনি কি সপ্তাহে ৬ দিন অফিস করেন? প্রতি সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টারও বেশি কাজ যদি আপনার সাপ্তাহিক রুটিন হয় তা হলে এখনই সাবধান হোন। আগামী দিনে বাড়তে পারে বিপদ। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত সময় অফিসে কাজ করার ফলে বাড়ছে অনিদ্রা, অবসাদ এমনকী হৃদরোগের সম্ভাবনাও। কাজের চাপে মানসিক অবসাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে সন্তানধারণ ক্ষমতা।
কী বলছেন গবেষকেরা?
পাঁচ বছর ধরে সমীক্ষা চালিয়ে আমেনিকান জার্নাল অফ এপিডেমোলজিতে একটি রিপোর্ট দিয়েছেন গবেষকেরা। বিভিন্ন অফিসে কাজের সময় এবং সেখানে কর্মীদের ‘আইকিউ টেস্ট’ করে দেখা গিয়েছে, যাঁরা সপ্তাহে ৬ দিন বা ৪০ ঘণ্টারও বেশি কাজ করেন (কোনও ক্ষেত্রে ৫৫ ঘণ্টা) তাঁদের বুদ্ধিমত্তার বিকাশ অনেক কম। যুক্তিতর্কের দিকেও এঁরা অনেক পিছিয়ে।
আরও পড়ুন: অবসাদ আরও গভীর করছে অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট?
মনোবিজ্ঞানী তাসা ইউরিখের কথায়, ‘‘প্রয়োজনের অতিরিক্ত কাজ করাটা বোকামি।’’ তাঁর মতে, সঠিক সময় কাজ এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিরতি নেওয়াটা জরুরি। পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটানো এবং মাঝেমধ্যেই কোথাও বেড়াতে যাওয়া আমাদের অনেক বেশি তাজা এবং কর্মক্ষম করে তোলে। ‘অল্টারনেট’ পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক সারা রবিনসন জানিয়েছেন, আট সপ্তাহ ধরে ৬০ ঘণ্টারও বেশি কাজ করার ফলে কাজের ইচ্ছা অনেকটাই চলে যায়। সেই সঙ্গে কাজের গতিও কমে। তাঁর কথায়, ‘‘পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, যাঁরা সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করেন তাঁদের থেকে যাঁরা ৭০-৮০ ঘণ্টা কাজ করে তাদের কাজের গতি অনেক কম। এমনকী কাজে ভুল ভ্রান্তির পরিমাণও অনেক বেশি।’’
গবেষকদের দাবি, যারা অতিরিক্ত সময় কাজ করেন তাঁদের বেশির ভাগই বাড়ি ফিরে এতটাই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন যে, কথা বলার ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলেন। এর ফলে একাকিত্ব বাড়তে থাকে। শুধু তাই নয়, সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টারও বেশি কাজ ভয়ঙ্কর রকম স্ট্রেস বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে দীর্ঘকালীন অনিদ্রা, ওজন বৃদ্ধি এবং হার্টের নানা সমস্যা বাড়তে থাকে।