Personal Library Decor

বাড়িতেই শৌখিন গ্রন্থাগার, বিপুল খরচ না করে ছোট্ট এক কোণে তৈরি হোক পড়ার ঘর, সঙ্গে কী কী লাগবে?

এক হাতের মুঠোয় চলে এসেছে বই। ফোনের স্ক্রিনে আঙুল বোলালেই উলটে যায় পাতা। ঠিক সে সময় বইয়ের গন্ধে ম ম করুক আপনার বাড়ি। ঘরের ছোট্ট কোণটিতে বানিয়ে নিন নিজের পড়ার ঘর।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২৫ ১৫:৪৩
Share:

বাড়িতে শৌখিন বইঘর তৈরি করুন কম খরচায়। ছবি: সংগৃহীত।

সকলের পক্ষে নিজের বাড়িতে শৌখিন গ্রন্থাগার বানানো সম্ভব নয়। তা বলে স্বপ্নের পড়ার ঘর থেকে বঞ্চিত থাকবেন কেন? বাড়ির ব্যক্তিগত গ্রন্থাগারের জন্য আলাদা ঘরের প্রয়োজন নেই। বাড়ির একটি কোণ, সিঁড়ির তলা, চিলেকোঠাকেই ব্যবহার করে পড়ার ঘর বানিয়ে নেওয়া যায়। এর জন্য নতুন আসবাব কেনার প্রয়োজন নেই। গ্রন্থাগারের জন্য বই কেনার দিকেই কেবল মন দিতে পারেন। তার বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই। বাড়ির পুরনো বইয়ের তাক, আলো, চেয়ার-টেবিল, মাদুর থাকলেই শৈল্পিক পড়ার ঘর হয়ে উঠতে পারে ঘরের কোনও এক কোনা। তবে ইচ্ছে হলে পুরনো বইয়ের তাক বিক্রি করে নতুন তাক কিনে নিতে পারেন। তাতেও খরচ কমবে খানিকটা।

Advertisement

গ্রন্থাগারের স্থান বাছাই

যেমন ধরা যাক, সিঁড়ির নীচের ত্রিকোণাকার জায়গাটিতে বই রাখার বন্দোবস্ত করলে খেয়াল রাখতে হবে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে বাইরের আলো এসে পড়ে। যদি তা সম্ভব না হয়, তা হলে ল্যাম্পশেড রাখার যথেষ্ট জায়গা থাকতে হবে। বাড়ির কোলাহল থেকে আপনার প্রিয় এই কোণটি যথাসম্ভব দূরে হলেই ভাল। তাতে পড়ায় মনোযোগে খামতি থাকবে না। আর চিলেকোঠার থেকে ভাল কী-ই বা হতে পারে! তবে গরমের সময়ে সে ঘরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র থাকা আবশ্যিক।

Advertisement

সিঁড়ির তলাকেই ব্যবহার করে পড়ার ঘর বানিয়ে নেওয়া যায়। ছবি: সংগৃহীত।

বই রাখার তাক

কাচের দরজা দেওয়া বইয়ের তাক পছন্দ? কিন্তু তার জন্য এক দিকে যেমন জায়গা বড় হতে হবে, অন্য দিকে সেটি বানানো বেশ ব্যয়বহুল। বাড়িতে আগে থেকেই যদি থাকে, তা হলে সেটি ব্যবহার করা যেতে পারে। কাঠের মিস্ত্রি ডেকে জায়গার আকার বুঝে কাটিয়ে নিতে হবে। তা ছাড়া মেঝে থেকে সিলিং পর্যন্ত লম্বা তাক থাকলে সেটিকেও ব্যবহার করা যায়। এতে অনেক বেশি পরিমাণে বই আঁটে। কিন্তু সে সব না থাকলে বাড়ির ছোট ছোট আলমারি (খাবার রাখার ছোট কাঠের আলমারি হোক বা সাজের জিনিস রাখার কাচের আলমারি) দিয়েই সুন্দর করে সাজানো যায়। যেটায় বই দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে, সেখানে সে ভাবেই সাজানো হবে বই। যেখানে শুইয়ে রাখলে আঁটানো যাবে, সেখানে সে ভাবেই। উপরন্তু আরও একটি কৌশল প্রয়োগ করতে পারেন। কাঠের মিস্ত্রি ডেকে পুরনো কাঠের আলমারির কাঠগুলি কেটে নিয়ে নতুন করে দেওয়ালে বসিয়ে নিতে পারেন৷ এতে জায়গার খরচ সবচেয়ে কম।

পুরনো আলমারির কাঠগুলি কেটে নতুন করে দেওয়ালে বসিয়ে নিতে পারেন বইয়ের তাকের জন্য৷ ছবি: সংগৃহীত।

বসার জায়গা

বইয়ের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটি কোণে বসে থাকার মতো আরামদায়ক করে তুলতে হবে পড়ার জায়গাটিকে। বাড়ির ওই কোনায় কি আপনি একাই সময় কাটাবেন? তবে কুশন দেওয়া আরামদায়ক চেয়ার বেছে নিতে পারেন। যদি পা ভাঁজ করে, বাবু হয়ে বসে অথবা পা সামনের দিকে ছড়িয়ে রেখে পড়াশোনা করতে পছন্দ করেন, তা হলে একটি সোফা এবং অটোম্যানের ব্যবস্থা করতে হবে। পড়ার সময় একই সঙ্গে পা এবং পিঠের বিশ্রাম প্রয়োজন। মেঝেতে বসার জায়গা করতে পারলে সবচেয়ে ভাল। কারণ এতে একাধিক মানুষ বসতে পারবেন একই সময়ে। মেঝেতে তোশক পেতে তার উপর নরম চাদর আর কুশন রেখে দিন। আরামদায়ক এবং নান্দনিক হয়ে উঠবে গৃহসজ্জা।

আলোকসজ্জা

কেবল অন্ধকার ঘুচিয়ে দেওয়া নয়, আলোর ক্ষমতা আরও অনেক। অন্দরমহলের সজ্জায় বড় ভূমিকা পালন করে রকমারি আলো। লণ্ঠন, ঝাড়বাতি থেকে শুরু করে টুনি বালবও কিনে নিতে পারেন। যাঁর যেমন সামর্থ্য, জায়গার যেমন চাহিদা, তা বুঝে আলো বেছে নিতে হবে। বই পড়ার জায়গায় তো বটেই, তা ছাড়াও বই রাখার জায়গাতেও আলোর খেলা প্রয়োজন। বই দেখেশুনে বেছে নেওয়ার পাশাপাশি সজ্জাতেও অন্য মাত্রা যোগ করতে পারবে।

এমন এক যুগে যখন এক হাতের মুঠোয় বই চলে এসেছে, ফোনের স্ক্রিনে আঙুল বোলালে উলটে যায় পাতা, সে সময়ে বইয়ের গন্ধে ম ম করুক আপনার বাড়ি। আকর্ষণীয় হয়ে উঠুক শখের কোণ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement