ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক।
ভারতে টিনএজারদের মধ্যে ক্রমশই বাড়ছে ধূমপানের প্রবণতা। আর অল্পবয়সের এই প্রবণতাই পরবর্তীতে ডেকে আনছে স্ট্রেস, শারীরিক সমস্যা। কেন এই প্রবণতা বাড়ছে কৈশোরে? সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে তার উত্তর।
দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, চণ্ডীগড় ও কলকাতা। ভারতের এই ৬টি শহরে ১ হাজার ৯০০ জন টিনএজার-এর উপর সমীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা জানাচ্ছেন, ভারতের ৫০ শতাংশ টিনএজার মনে করে ধূমপান করলে তাদের স্ট্রেস কমবে এবং তাদের বন্ধুদের কাছে নিজেদের ‘কুল’ ইমেজ তৈরি করতে পারবে। আবার ৫২ শতাংশ টিনএজার মনে করে, ধূমপান তাদের মনোসংযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে। এদের মধ্যে ৯০ শতাংশ টিনএজারই তাদের ধূমপানের অভ্যাস বজায় রাখতে চায়।
অন্য দিকে, ৮০ শতাংশ মনে করে জীবনে অন্তত একবার ধূমপানের অভিজ্ঞতা হওয়া উচিত। ৮৭ শতাংশ টিনএজারের কাছে টেলিভিশন, সিনেমায় অভিনেতাদের ধূমপান করতে দেখলে ধূমপানের ঝোঁক বাড়ে বলে জানিয়েছে। ৭৮ শতাংশ মনে করে সেলিব্রিটিরা যদি ধূমপান বিরোধী প্রচারে অংশ নেন তা হলে তা ধূমপানের অভ্যাস কমাতে সাহায্য করবে। ৬০ শতাংশের উপর টিনএজারের মতে, ধূমপান রুখতে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণের উপর আরও জোর দেওয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ঠান্ডা পানীয়ের এই ব্যবহারগুলি জানতেন?
সমীক্ষার রিপোর্টের পর মনোবিদ ও বিহেভিয়ারিয়াল সায়েন্টিস্ট সমীর পারেখ বলেন, ‘‘ধূমপান প্লেগের মতোই ক্ষতিকারক। যে অভ্যাসের সূত্রপাত কৈশোরে হয় এবং শারীরিক সমস্যা শুরু হয় বয়স বাড়তে বাড়তে।’’
আরও পড়ুন: এইচআইভি সম্পর্কে প্রচলিত কিছু ভ্রান্ত ধারণা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, বিশ্বে প্রতি বছর ৭০ লক্ষ মানুষ মারা যান ধূমপানের কারণে। ল্যান্সেট জার্নালে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৫ সালে বিশ্বের ৬৪ লক্ষ মৃত্যুর মধ্যে ১১ শতাংশই ছিল ধূমপানজনিত অসুস্থতার কারণে। যার মধ্যে ৫২.২ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে চিন, ভারত, রাশিয়া ও ব্রিটেনে। ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ৯০ শতাংশই হয় ধূমপানের কারণে, ক্রনিক পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডি-তে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ৮০ শতাংশের ক্ষেত্রেই মূল কারণ ধূমপান। অন্য দিকে, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুতেও ১৭ শতাংশ ক্ষেত্রে ধূমপানকেই দায়ী করেছেন গবেষকরা।