‘গৃহলক্ষ্ণী’ ম্যাগাজিনের ফ্রন্ট কভারের সেই ছবি।- টুইটারের সৌজন্যে।
নিন্দেমন্দ হচ্ছে। তবে বন্যা বয়ে যাচ্ছে প্রশংসারও। কার্পণ্য হচ্ছে না সমর্থনের।
ফেসবুক, টুইটার সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন ফেলে দিয়েছে সেই ছবি। শুরু হয়ে গিয়েছে চাপানউতোর। তুমুল বিতর্ক।
কোনও লজ্জা-সংকোচের পরোয়া না করে একেবারে সরাসরি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে একটি শিশুকে স্তন্যপান করাচ্ছেন জনপ্রিয় মডেল গিলু জোসেফ। সেই ‘সাহসী’ ছবি মালয়লম ম্যাগাজিন ‘গৃহলক্ষ্ণী’ তাদের ফ্রন্ট কভারে ছাপিয়েছে। ১ মার্চ সংখ্যায়। সঙ্গে ক্যাপশন- ‘কেরলের মানুষকে মায়েরা বলছেন, অযথা তাকাবেন না আমাদের দিকে, আমাদের স্তন্যপান করানো প্রয়োজন’’।
ভারতে এই প্রথম কোনও ম্যাগাজিন তাদের ফ্রন্ট কভারে এমন ছবি ছাপল।
আরও পড়ুন- অতিরিক্ত রূপ সচেতনতাও এক ধরনের অসুস্থতা
আরও পড়ুন- বৃন্দাবনে হোলি, বৈধব্যের শ্বেতবস্ত্র ঢেকে দিল ফাগে
তাই প্রত্যাশিত ভাবেই ‘এটা কী হচ্ছে’ বলে তুমুল হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, স্তন্যপানের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে কেন জনপ্রিয় মডেল গিলু জোসেফকে ব্যবহার করা হল? কারও প্রশ্ন, বিবাহিত বা মা না হওয়া সত্ত্বেও শিশুকে স্তন্যপানের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে কেন গিলুকেই বেছে নেওয়া হল? এমনও প্রশ্ন উঠেছে, কত টাকার বিনিময়ে ওই ছবি তুলতে রাজি হয়েছেন গিলু?
তবে নিন্দেমন্দের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসাও কিছু কম হচ্ছে না। সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারতে ইউনিসেফের শাখা ‘ইউনিসেফ ইন্ডিয়া’। প্রশংসা করেছেন সেলিনা জেটলির মতো সেলিব্রিটিরাও।
কেন প্রকাশ্যে স্তন্যপান করানোর ছবি তুলতে রাজি হলেন তিনি?
এই প্রশ্নের জবাবে গিলু বলেছেন, ‘‘আমাদের সমাজই মায়েদের সেই পরিবেশ দেয়নি, যাতে তাঁরা শিশুকে প্রকাশ্যে স্তন্যপান করাতে না পারেন, এ ক্ষেত্রে যাতে তাঁদের কোনও সংকোচে না পড়তে হয়। স্তন্যপান করানোর সময় যাতে তাঁরা নিরাপদ বোধ করতে পারেন। এটা তো মায়েদের অধিকার। এর জন্য মায়েরা যেন আর ভয় না পান। যেন আর সংকোচ বোধ না করেন।’’
গিলু এও বলেছেন, এটাকে তিনি তাঁর কর্তব্য বলে মনে করেছেন বলেই ওই ছবি তুলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি। নিজে বিবাহিত বা মা না হওয়া সত্ত্বেও।
‘গৃহলক্ষ্ণী’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক মনসি জোসেফ বিবিসি-কে জানিয়েছেন, মাসখানেক আগে শিশুকে তাঁর স্ত্রীর স্তন্যপান করানোর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন এক ভদ্রলোক। তার পর স্বামী, স্ত্রী দু’জনকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। মনসির কথায়, ‘‘তার পরেই আমরা আমাদের ম্যাগাজিনের ফ্রন্ট কভারে এমন ছবি ছাপানোর সিদ্ধান্ত নিই।’’