Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Lifestyle News

অতিরিক্ত রূপ সচেতনতাও এক ধরনের অসুস্থতা

আগে বেশ কয়েক জায়গায় পড়েছি। শ্রীদেবীর মৃত্যুর পরেও কোথাও কোথাও কথাটা উঠেছিল। উনি নাকি বহু বার কসমেটিক সার্জারি করিয়েছিলেন। ফেসবুকে বলিউড পরিচালক রামগোপাল বর্মার একটা লেখা পড়লাম। সেখানেও তিনি এই কসমেটিক সার্জারির কথা উল্লেখ করেছেন একটা জায়গায়।

ফিল্ম ‘সদমা’-র স্ক্রিন গ্র্যাব।

ফিল্ম ‘সদমা’-র স্ক্রিন গ্র্যাব।

কেদার বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ
শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৯:২৯
Share: Save:

অভিনেত্রী শ্রীদেবীর মৃত্যু একটা ভাবনা তৈরি করে দিয়ে গেল। যেটা নিয়ে প্রায় আলোচনাই হল না কোথাও। অথচ হওয়াটা ১০০ শতাংশ উচিত ছিল বলে আমার মনে হয়।

কী সেই ভাবনা? এক কথায় বলতে গেলে তার নাম ‘অবসাদ’।

আগে বেশ কয়েক জায়গায় পড়েছি। শ্রীদেবীর মৃত্যুর পরেও কোথাও কোথাও কথাটা উঠেছিল। উনি নাকি বহু বার কসমেটিক সার্জারি করিয়েছিলেন। ফেসবুকে বলিউড পরিচালক রামগোপাল বর্মার একটা লেখা পড়লাম। সেখানেও তিনি এই কসমেটিক সার্জারির কথা উল্লেখ করেছেন একটা জায়গায়। শ্রীদেবীকে নিয়ে ওই লেখায় তিনি লিখেছেন, ‘সবাই বলতেন উনি সুন্দরী। নিজে কি তাই ভাবতেন? হ্যাঁ, ভাবতেন। সব অভিনেত্রীর দুঃস্বপ্ন হল বয়স। তিনিও ব্যতিক্রম নন। কসমেটিক সার্জারি করান, যার প্রভাব স্পষ্ট দেখা গেল। নিজের চারপাশে দেওয়াল তুলে দিয়েছিলেন, যাতে কেউ বুঝতে না পারে, ভিতরে কী চলছে। ওঁর নিরাপত্তাহীনতা যে কেউ বুঝে ফেলবে— আতঙ্কে ভুগতেন।...’

এর পরেই রামগোপাল মোক্ষম একটি বাক্য লিখেছেন, ‘আসলে শ্রীদেবী প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার শরীরে বন্দি এক শিশু!’

আরও পড়ুন
'খাঁচায় বন্দি এক পাখি শ্রীদেবী'

রামগোপাল এক্কেবারে ঠিক কথা লিখেছেন। কোনও এক জন মহিলা, তিনি এক বার নাক ঠিক করাচ্ছেন, এক বার চিবুক, এক বার ঠোঁট! আসলে নিজের ‘বডি ইমেজ’ নিয়ে এই মহিলারা একেবারেই সন্তুষ্ট হতে পারেন না। এটা একটা কমপালসিভ ফিচার। এর থেকে অবসাদ আসে। আর অবসাদের জায়গা থেকেই এক জন মহিলা নিজেকে গুটিয়ে নেন। তাঁদের ‘মুড’ বার বারই বদল হতে থাকে।

তবে, শ্রীদেবীর ক্ষেত্রে ঠিক এমনটা হয়েছে কি না জানি না। কারণ ওঁর কোনও পুরনো রেকর্ড আমার জানা নেই। সেই রেকর্ড ঘাঁটলে হয়তো দেখা যাবে, তিনিও অবসাদে ভুগতেন।

আরও পড়ুন
বাথটাবে ডুবে মৃত্যু বিরল নয় জাপানে বা আমেরিকায়

এই যে এক জন নিজের শরীর বা নিজেকে যেমনটা দেখতে তা নিয়ে সন্তুষ্ট নন, একে মনোবিজ্ঞানের ভাষায় ‘বডি ডিসমরফিক সিনড্রোম’ বলে। এটা মেয়েদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। বয়ঃসন্ধি থেকেই এটা আরও বেশি করে বাড়তে থাকে। যদি না ঠিক মতো চিকিৎসা হয়।

আমাদের চার পাশে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এমন ভাবনার শিকার অনেকেই। আমার কাছে অনেকে আসেন। নিজের চেহারা নিয়ে যাঁরা একেবারেই খুশি নন। নিজেকে পাল্টাতে চান। আসলে এটা মানসিক অসুস্থতা। এর চিকিৎসা প্রয়োজন। না হলে, অবসাদ এক দিন মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE