Durga Puja 2022

‘শু’ সংবাদ

পুজোর সময়ে নতুন জুতো পরে পায়ের ফোস্কা নিয়ে নাজেহাল হন অনেকেই। কী ভাবে এর থেকে মুক্তি পাবেন, কেমন জুতো বাছবেন, জেনে নিন

Advertisement

নবনীতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি।

পুজোয় নতুন জুতো কেনার সময়ে বেশ কয়েকটা দিকে নজর রাখা জরুরি। জুতোর চামড়া, কাট সব কিছুর উপরেই নির্ভর করে তা আপনার পায়ের জন্য জুতসই হবে কি না। যদি তা না হয়, তা হলে পায়ে ফোস্কা পড়ে। আর একবার পুজোর মাঝে পায়ে ফোস্কা পড়া মানে, পুজোর বাকি দিনগুলোয় ঠাকুর দেখা মাটি। তাই কী কী বিষয়ে সতর্ক হবেন, জেনে নিন...

Advertisement

পায়ে ফোস্কা কেন পড়ে?

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সন্দীপন ধর বললেন, “নতুন জুতোয় কেন ফোস্কা পড়ে, সেটা বুঝতে হবে। প্রথমত নতুন জুতোর সারফেস রাফ থাকে, সেটা পরতে-পরতে পায়ের সঙ্গে মানিয়ে যায়। কারণ আমাদের সকলের পায়ের কন্টুর আলাদা হয়, মুখের মতো। তাই পায়ে জুতোটা বসতে সময় লাগে। দ্বিতীয়ত, জুতোর পালিশে কিছু কেমিক্যাল থাকে। এর থেকে যাঁদের অ্যালার্জি হয়, তাঁদের পায়ে ফোস্কা পড়ে। আর পুজোর সময়ে অনেকেই বিশেষত কলেজ, স্কুলের ছেলেমেয়েরা অনেক ঘুরে-ঘুরে ঠাকুর দেখে। একে তো গরমে ঘাম হয়। তার পরে দূষণ, ব্যাকটিরিয়া, ফাঙ্গাস.... সব মিলিয়ে ফোস্কার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।” তাই নতুন জুতো পরার পর সমস্যা হচ্ছে মনে হলে টানা সেটা পরবেন না। বরং ঘুরিয়েফিরিয়ে পরুন। প্রথম দিন আধ ঘণ্টা পরুন। একদিন বাদ দিয়ে আবার এক ঘণ্টা পরুন। এ ভাবে আস্তে-আস্তে সইয়ে নিন।

Advertisement

ফোস্কা পরলে কী করবেন?

ফোস্কার আকারের উপরে তার চিকিৎসা নির্ভর করবে। ডা. সন্দীপন ধরের কথায়, “যদি বড় ফোস্কা পড়ে, তা হলে প্রথমে একটি স্টেরাইল নিডল দিয়ে ফোস্কা গালিয়ে দিয়ে জলটা বার করে দিতে হবে। কারণ ওই জল জমে থাকলে তা থেকে পরে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে। তাই জলটা বার করে দিয়ে সেখানে মলম লাগাতে পারেন। অনেক অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম পেয়ে যাবেন, সেটা লাগাতে পারেন। আবার স্টেরয়েড ও অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিমের সংমিশ্রণ পাওয়া যায়। রাতে শোয়ার সময়ে সেটা লাগিয়ে রাখতে পারেন।” তা হলে রাতে পায়ের ক্ষত অনেকটা শুকিয়ে যাবে। আর ফোস্কার উপরে জুতো পরবেন না। একটা ব্যান্ডেড লাগিয়ে তার পরে পরবেন। তবে এ ধরনের ওষুধ কখনওই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার চলবে না।

জুতো কেনার সময়ে কী কী বিষয় খেয়াল রাখবেন

* অনেক ক্ষেত্রেই জুতোর মানের উপরে নির্ভর করে তা থেকে পায়ে ফোস্কা পরবে কি না। কারণ জুতোর ভাল কোম্পানি কোয়ালিটি কন্ট্রোল করে। সেই মান নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অর্থ ব্যয় করে। তার জন্য অনেক সময়ে কিছু কোম্পানির জুতোর দাম হয়তো বেশি হয়, কিন্তু তাতে এই ধরনের সমস্যা হয় না। তাই জুতো কেনার সময়ে যেই ব্র্যান্ড বা কোম্পানির জুতো কিনছেন, তারা কোয়ালিটি কন্ট্রোল করছে কি না, সে দিকে নিশ্চিত হতে পারলেও এ ধরনের সমস্যার সম্ভাবনা থাকবে না।

তবে ডা. ধর বললেন, “ভাল কোম্পানির জুতো পরেও অনেকের পায়ে ফোস্কা পড়ে। কারণ কারও ত্বক স্পর্শকাতর হলে সেই ত্বকে অল্প চাপ পড়লেই ফোস্কা পড়বে।”

* ফুট পাউডার কিনতে পাবেন বাজারে। জুতো পরার আগে পায়ে সেটা ছড়িয়ে নিতে পারেন। এতে পায়ে ঘাম কম হবে। জুতোর ঘষা লাগবে না। ফোস্কাও এড়ানো যাবে।

ব্যাগে সব সময়ে দুটো ব্যান্ডেড রেখে দেবেন। রাস্তাঘাটে যখনই বুঝবেন পায়ে ফোস্কা পড়েছে বা ব্যথা করছে, তখন পরিষ্কার জল দিয়ে সেই জায়গাটা ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিন। তার পর ব্যান্ডেড লাগিয়ে জুতো পরুন।

* পুজোর ঠিক মুখে-মুখে নতুন জুতো কিনে পুজোর দিন সকালে পরা শুরু করবেন না। অন্ততপক্ষে পুজোর এক মাস আগে নতুন জুতো কিনে পরা অভ্যেস করুন। তা হলে এই জাতীয় সমস্যা হবে না। দরকারে পুরনো জুতো পরেই ঠাকুর দেখুন।

* আর একটা দিকও খেয়াল রাখতে হবে, সেটা হল জুতোর গড়ন ও হিল। জুতো পয়েন্টেড টো হলে সেই জুতোয় বুড়ো আঙুল ও কড়ে আঙুলেও চাপ পড়ে। আপনার পায়ের পাঞ্জা যদি চওড়া হয় আর তার মধ্যে যদি পয়েন্টেড টো জুতো পরেন, তা হলে দু’পাশের চাপে কড়ে আঙুল ও বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের পাশে ফোস্কা পড়তে পারে। বেশির ভাগ ফোস্কা পায়ের গোড়ালিতে পড়ে। তবে জুতোর গড়ন পয়েন্টেড হলে আঙুলের পাশেও ফোস্কা পড়তে পারে। আবার ধরুন হঠাৎ হাই হিল জুতো পরতে শুরু করলেন বা জুতোর সাইজ় ঠিক ফিট হল না, সে ক্ষেত্রেও কিন্তু ফোস্কা পরার সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছে। তাই এই ধরনের জুতো কেনার সময়ে সাবধান।

মনে রাখবেন, জুতো কিন্তু পায়ের বর্ম। তাই আগে পায়ের কমফর্টের কথা ভাবুন। যে জুতো পরে আরাম পাবেন, তেমন জুতো বাছুন। তার মধ্যেই না-হয় স্টাইল বজায় থাকুক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন