প্রথমে ভাগাড়। এখন নিপা। মাংসের পর কোপ ফলে। আরও মারাত্মক ভাবে। কপাল খারাপ হলে এক কামড়ে চলে যেতে হতে পারে পরপারে! প্রাণ বাঁচাতে শহরবাসী তাই মাংসের পাশাপাশি ফলকেও পাঠাচ্ছেন নির্বাসনে। কে জানে, কখন কোন সংক্রামিত বাদুড়ের দৌলতে ফল সংক্রামিত হয়ে পড়ে!
হ্যাঁ, আমরা বলছি নিপা ভাইরাসের কথা। যাকে নিয়ে দেশ এখন উত্তাল। যাকে নিয়ে কেরলে জারি হয়েছে হাই অ্যালার্ট। হওয়ারই কথা। সেকানে জ্বরে মৃত ১০ জন মানুষের মধ্যে তিন জনের শরীরেই যে পাওয়া গিয়েছে এই ভাইরাসের হদিশ। গত ২০ বছরে যার সংক্রমণে গোটা পৃথিবীতে প্রায় ৫০০ জন মারা গিয়েছেন। তার মধ্য়ে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, বাংলাদেশ, কেরল, এমনকী, শিলিগুড়ি, নদিয়াও আছে।
২০ বছরে ৫০০ জন! এমন কোনও বড় সংখ্যা তো নয়! তা হলে কেন এত হইচই?
হইচইয়ের কারণ নানাবিধ। প্রথমত, এই রোগ ঠেকানোর কোনও রাস্তা এখনও নেই। চিকিৎসা নেই। সর্বোপরি এই ভাইরাস নতুন বলে, এর বিরুদ্ধে মানুষের শরীরে সে ভাবে প্রতিরোধও গড়ে ওঠেনি। ফলে, মৃত্যুর হার বিশ্বে গড়ে প্রায় ৭৫ শতাংশ। আর সবচেয়ে বড় কথা, ফলের মধ্যেই যে মৃত্যুবাণ লুকিয়ে রয়েছে, তা বোঝারও তো কোনও রাস্তা নেই!
আরও পড়ুন- নিপা ভাইরাসে মৃত্যু বেড়ে ১০, তীব্র হচ্ছে আতঙ্ক
আরও পড়ুন- ভয়াবহ নিপা ভাইরাসের হানা কেরলে, মৃত ৬
রোগের উপসর্গ প্রথম অবস্থায় অন্য যে কোনও ভাইরাস সংক্রমণের মতোই। জ্বর, মাথাব্যথা, বমি। কিন্তু এর পরের ধাপেই ভাইরাস তার খেলা দেখাতে শুরু করে। মাথায় পৌঁছে যায় সংক্রমণের রেশ। শুরু হয় খিঁচুনি। মানুষ অজ্ঞান হয়ে যান। হাসপাতালে আক্রান্তকে ভর্তি করিয়ে রোগের উপসর্গ কমানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ রোগী মস্তিষ্কের (ব্রেন) প্রদাহে মারা যান। তার আগে তিনি যে কত জনকে সংক্রামিত করেন, তার ঠিক নেই। কারণ, তাঁর শরীর নিঃসৃত তরলের মধ্যেই থাকে মৃত্যুবাণ। সংক্রামিত পশু, বিশেষ করে শুয়োরের শরীর নিঃসৃত তরলের সংস্পর্শে এলেও এই রোগ হতে পারে।
• রোগ ঠেকাতে চাইলে পশুপাখির উচ্ছিষ্ট ফল খাবেন না, বিশেষ করে যে এলাকায় রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছে।
• সংক্রামিত মানুষের সংস্পর্শে আসার পর হাত ভাল করে ধুয়ে নেবেন।
• এই ধরনের রোগীকে চিকিৎসা বা সেবা করার সময় গ্লাভস ও মাস্ক পরে নেবেন।
• যে এলাকায় প্রচুর বাদুড়, সেখানকার খেঁজুরের রস বা তাড়ি খাবেন না।