রোগীর চাপে অসুস্থ মেডিক্যাল কলেজই

রোগীর চাপ অনুয়ায়ী উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি এবং শিশুদের চিকিৎসার যে পরিকাঠামো রয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। রবিবার তাই ওই পরিষেবার দিকগুলি পরিদর্শনে এসে পরিকাঠামো বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা জানালেন-ও রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স-এর শিশু এবং মাতৃকল্যাণ বিষয়ের চেয়ারম্যান ত্রিদীব বন্ধ্যোপাধ্যায়। হাসপাতালের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিটে যেখানে গড়ে ৪০ জনের মতো রোগীর চাপ রয়েছে সেখানে শয্যা রয়েছে মাত্র ২৪টি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০২:৩৯
Share:

রোগীর চাপ অনুয়ায়ী উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি এবং শিশুদের চিকিৎসার যে পরিকাঠামো রয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। রবিবার তাই ওই পরিষেবার দিকগুলি পরিদর্শনে এসে পরিকাঠামো বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা জানালেন-ও রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স-এর শিশু এবং মাতৃকল্যাণ বিষয়ের চেয়ারম্যান ত্রিদীব বন্ধ্যোপাধ্যায়। হাসপাতালের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিটে যেখানে গড়ে ৪০ জনের মতো রোগীর চাপ রয়েছে সেখানে শয্যা রয়েছে মাত্র ২৪টি। সাম্প্রতিক অতীতে একই শয্যায় ওই ইউনিটে একাধিক শিশু রাখা এবং তাদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানো নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তা ছাড়া লেবার ওর্য়াডে ৩টি মাত্র অপারেশন টেবল রয়েছে। তবে এ বার এই সমস্ত সমস্যা অনেকটাই দূর হতে চলেছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ত্রিদীববাবু।

Advertisement

তিনি এ দিন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই রাজ্যের সর্বত্র হাসপাতালগুলিতে পরিকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের দিকে তাঁর বিশেষ নজর রয়েছে। চাপ শুধু এই হাসপাতালে নয় অন্যান্য অনেক জায়গাতেই রয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে এসএনসিইউ’র শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। ওই বিভাগ সম্প্রসারন করা হচ্ছে। লেবার ওয়ার্ডও উন্নয়ন করা হচ্ছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যে এই কাজ হওয়ার কথা।’’ সেই সঙ্গে নিকু (নিউনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট), পেডিয়েট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট, আউট বর্ন কেয়ার ইউনিটের মতো ইউনিটগুলিতেও শয্যা সংখ্যা বাড়োনের কথা জানান তিনি। হাসপাতালেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, অ্যান্টিনেটাল ওয়ার্ডে প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসার জন্য মাত্র ৯ টি শয্যা রয়েছে। তা অন্তত ২০-২৫টি বাড়ানো প্রয়োজন। ৩টি লেবার ওটি’র জায়গায় ১০ টি ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এই দুটি কাজের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ইতিমধ্যেই মিলেছে।

নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ৩টি, পেডিয়েট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ৭টি শয্যা রয়েছে। অথচ রোগীর চাপ অনেক। সে সব শুনে এ দিন শিশু বিভাগের প্রধানের সঙ্গে কথা বলে ভবিষ্যতের পরিকল্পনার প্রস্তাবও চেয়েছেন ত্রিদীববাবু। হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস জানান, লেবার ওয়ার্ড এবং অ্যান্টিনেটাল ওয়ার্ড সম্প্রসারণের টাকা ইতিমধ্যেই এসে গিয়েছে। সেই কাজের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

Advertisement

সদ্যোজাতদের চিকিৎসায় পরিকাঠামোর অভাব শিশু মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে চিকিৎসকদের একাংশ মনে করেন। তবে এ দিন ত্রিদীববাবু জানান, রজ্যে সাড়ে তিন বছর আগে যেখানে এসএনসিই’তে ৬০ টি শ্যা ছিল এখন সেখানে ৩৬০০ শয্যা হয়েছে। ইউনিট রয়েছে ৫৭টি। এত বিপুল পরিকাঠামো রেকর্ড। তিনি বলেন, ‘‘শুধু সদ্যোজাতদের চিকিৎসার পরিকাঠামোর উপর মৃত্যুর হার হ্রাস-বৃদ্ধি নির্ভর করে না। সেই সঙ্গে অল্প বয়সে বিবাহ, আর্থসামাজিক অবস্থা ভাল না হওয়া, পুষ্টির অভাবের মতো বিষয়গুলিও রয়েছে। রাজ্যে শিশু মৃত্যুর হার ৩১ (প্রতি ১০০০ জন সদ্যোজাতের মধ্যে। এই সংখ্যা কমাতে অন্যান্য বিষয়গুলির দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, অসমে শিশু মৃত্যুর হার ৫৯, গুজরাতে ৪২। সেই তুলনায় এ রাজ্যে কম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন