বাচ্চা বায়না করছে, শান্ত করতে হাতে তুলে দিয়েছেন ওর প্রিয় চকোলেট। এমনটা কত বার করেছেন আপনি? বাবা, মায়েরা প্রায়শই ছেলে, মেয়েদের ঠান্ডা করতে এমনটা করে থাকেন। হয়তো আমাদের ছোটবেলাতেও বাবা, মায়েরা এমনটাই করে এসেছেন। বাচ্চার কান্না থামানো সাময়িক উপায় হিসেবে এই কাজ করলেও এ প্রভাবটা কিন্তু অনেক গুরুতর। এর ফলেই আপনার বাচ্চা শিখে যাচ্ছে ইমোশনাল ইটিং। খিদে পেলে নয়, আবেগের বশে খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হচ্ছে ওর।
নরওয়েতে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে বাবা, মায়েরা তাদের বাচ্চাদের কান্না বা নেগেটিভ ইমোশনের মোকাবিলা করার জন্য তাদের পছন্দের খাবার খেতে দিয়েছেন, সেই শিশুরাই পরবর্তীতে ‘ইমোশনাল ইটার’-এ পরিণত হয়েছে। বুঝতে পারছেন তো কেন মন খারাপ হলেই বা অবসন্ন লাগলেই আপনার চকোলেট বা ফুচকা খেতে ইচ্ছা হয়? চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট জার্নালে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
আবার নরওয়েইয়ান ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, কিঙ্গস কলেজ লন্ডন, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন ও ইউনিভার্সিটি অব লিডস-এর গবেষকরা জানাচ্ছেন, যে বাবা, মায়েদের নিজেরা আবেগের বশে খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তারাই তাদের সন্তানদের সঙ্গে এমনটা করে থাকেন। আর এতেই বাড়ছে অতিরিক্ত ওজন ও ইটিং ডিজঅর্ডারের ঝুঁকি। যে খাবারগুলো আমরা মন ভাল করতে খাই, সেই খাবারগুলো স্বাভাবিক ভাবেই হাই ক্যালরি যুক্ত খাবার হয়ে থাকে। তাই আবেগের বশে খেলে বেশি ক্যালরি খাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: শিশুর মোটা হওয়া রুখতে বেঁধে দিন রুটিনে
নরওয়ের ৮০১ জন ৪ বছর বয়সী স্কুল পড়ুয়াকে নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। ৬, ৮ ও ১০ বছর বয়সে তাদের খাদ্যাভ্যাস পরীক্ষা করে দেখা হয়। সন্তানদের ইমোশনাল ইটিং নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন দিতে বলা হয় অভিভাবকদের। দেখা যায় ৬৫ শতাংশ শিশুর মধ্যেই আবেগের বশে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠেছে। গবেষণার মুখ্য গবেষক সিলিজে স্টেইনসবেক বলেন, “বাচ্চারা কাঁদলে বা রাগ করলে খাবার দিয়ে খুশি করার বদলে ওদের সঙ্গে কথা বলে, জড়িয়ে ধরে শান্ত করার চেষ্টা করুন। এক ফলে ওদের আবেগের বশে খাওয়ার অভ্যাস যেমন হবে না, তেমনই মানসিক স্থিরতাও বাড়বে।”