Routine for Busy Students

উঁচু ক্লাসের ওঠার সঙ্গে সন্তানের ব্যস্ততাও দ্বিগুণ হয়েছে? কী ভাবে সময় ভাগ করলে কাজ সহজ হবে?

পড়াশোনার চাপ, খেলাধুলা, গৃহশিক্ষকের কাছে পড়া— ব্যস্ত দিনগুলি সহজ হতে পারে সঠিক কৌশলে সময় ভাগ করে নিলে। উঁচু ক্লাসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কী ভাবে সন্তানের জন্য দিনলিপি তৈরি করবেন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৫ ১৪:৫০
Share:

পড়াশেনানা, স্কুলের চাপ সামলানো সহজ হবে সময় অনুযায়ী কাজ ভাগ করে নিলে। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

উঁচু ক্লাসে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সন্তানের ব্যস্ততা? স্কুল, নিজস্ব পড়াশোনার পাশাপাশি, গৃহশিক্ষকের কাছেও পড়তে হচ্ছে। নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই? যেটুকু সময় পাচ্ছে, রাত জেগে মোবাইলে চোখ রাখছে?

Advertisement

অতিরিক্ত ব্যস্ততায় অনেক সময় কোনটা পড়া দরকার, কোনটা নয়, তাতে ভুল হয়ে যায়। কখনও ঘুমের ঘাটতি হয়। বাদ পড়ে খাওয়া-দাওয়া। তবে সুস্বাস্থ্যের জন্য কোনওটাই সঠিক নয়।

অতীতে একাধিক সাক্ষাৎকারে পেরেন্টিং কনসালট্যান্ট পায়েল ঘোষ, মনোবিদ অনন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেছেন, সবচেয়ে ভাল হয় যদি রুটিন তৈরি করা যায়। সন্তান যদি ৪-৫ বছরের হয়, তার জন্যও সঠিক রুটিন যেমন জরুরি, তেমনই বোর্ডের পরীক্ষা দেবে বা জয়েন্ট এন্ট্রান্সের পড়ুয়ার জন্যও নিয়ম জরুরি। বিশেষত বর্তমান সময়ে পড়ুয়াদের অনেকটা সময় মোবাইলের জগতে কেটে যায়। সবটাই যে পড়াশোনার স্বার্থে, তা নয়। বরং ইন্টারনেট আসক্তি বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পড়ায় মন দেওয়াও সমস্যাজনক হয়ে যায়।

Advertisement

মনোবিদদের মতে, সেই কারণেই রুটিন জরুরি। কারণ, জীবন রুটিনে চললে অভ্যাস তৈরি হয়। সঠিক সময়ে পড়া, ঘুমনো, বিশ্রামের অভ্যাস। যা পড়ুয়ার জীবনে ছন্দ আনে।

প্রয়োজন অনুযায়ী এক মাসের জন্য রুটিন তৈরি করে নিন।

১। সকালটা শরীরচর্চার জন্য রাখা দরকার। ভোরের হাওয়া শরীরে লাগলে, একটু হাঁটাহাঁটি করলে শরীরের পাশাপাশি মনও সতেজ হয়। যদি হাঁটাহাঁটি না করা যায়, তা হলে অন্তত বাড়িতে মিনিট দশেক প্রাণায়ামের অভ্যাসও সন্তানের পড়াশোনার স্বার্থেই জরুরি।

২। দিনের কখন কোন কাজ করতে হবে, সেটি আগে থেকে ঠিক করে রাখলে কাজ সহজ হয়। কোন ক্লাসটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, কোন পড়াটি বা প্র্যাক্টিক্যালের কাজটি জরুরি, সেটি নির্ধারণ করে রুটিন সাজাতে হবে। একমাসের রুটিন করা থাকলেও, প্রয়োজনে নির্দিষ্ট দিনের রুটিনে বদল করা যেতে পারে।

৩। কখন কোন কাজটি করতে হবে মনে করানোর জন্য ডিজিটাল ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা যায়। গুরুত্বপূর্ণ কাজটি যাতে ভুলে না যান, সেই জন্য ডিজিটাল ক্যালেন্ডারে নির্দিষ্ট অংশ রঙিন করে রাখার সুবিধা থাকে, তা ছাড়া প্রয়োজন মতো তা বদলে দেওয়া যায়।

৪। মনোবিদেরা বলেন, পড়ার একটি নির্দিষ্ট সময় স্থির করা দরকার। প্রতি দিন একই সময়ে পড়তে বসলে অভ্যাস তৈরি হয়। সেই সময় হলেই, নিজের থেকে পড়ার তাগিদ তৈরি হবে। তবে কোন দিন কোন বিষয় পড়া হবে, কোনও বিষয়ে পিছিয়ে থাকলে, সেটি বাড়তি সময় নিয়ে পড়ার জন্য রুটিন তৈরি করা যেতে পারে।

৫। টানা পড়াশোনা ক্লান্তিকর। সে কারণে বিরতি এবং ঘুম— দুই-ই খুব জরুরি। মনোরোগ চিকিৎসক শর্মিলা সরকার জানাচ্ছেন, ঘুমের সময় ‘শর্ট টার্ম’ স্মৃতি ‘লং টার্মে’ রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ একজন পড়ুয়া যা দেখছে, শুনছে এবং পড়ছে, সেটাই দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে পরিণত করার জন্য ঘুমের দরকার হয়। পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত নেওয়া এই ধরনের মস্তিষ্কের কার্যাবলি সঠিক ভাবে সম্পাদনের জন্য ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমের দরকার।

৬। স্ক্রিন টাইম নির্দিষ্ট করে দেওয়া খুব জরুরি বলেন পেরেন্টিং কনসালট্যান্ট পায়েল ঘোষ থেকে মনো-সমাজকর্মী মোহিত রণদীপ। ইন্টারনেটের আকর্ষণ এতটাই যে ওটিটি সিরিজ, রিল, ভিডিয়ো দেখতে একবার ডুবে গেলে, বেরনো যায় না। দীর্ঘ মেয়াদে তা অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে যায়। পড়ুয়াদের আসক্তি তৈরি হয়। সেই কারণে, পড়া, বিশ্রামের জন্য সময় ভাগের পাশাপাশি কত ক্ষণ মোবাইলে নিজের পছন্দের বিষয় দেখতে পড়ুয়া বা গেম খেলবে, তারও সময় নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন।

৮। পড়াশোনার পাশাপাশি ‘এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি’-র জন্যও সময় নির্দিষ্ট করা দরকার। কারও ঝোঁক আঁকায়, কেউ গান গাইতে ভালবাসে, কারও আবার খেলাধূলা পছন্দর। পড়ার পাশাপাশি এমন শখগুলিও কিন্তু মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। এগুলির জন্য সময় নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন।

৭। এক সপ্তাহ নির্দিষ্ট ছন্দে কাটানোর পর কোথাও কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না, কোন বদল হলে সুবিধা হয় তা দেখে নেওয়া যেতে পারে। প্রয়োজন মতো তা বদলানো যেতে পারে।

মনোবিদেরা বলছেন, পড়াশোনার পাশাপাশি পড়ুয়ারা যাতে বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটায়, পরিবারের সঙ্গে অবসর সময় যাপন করতে পারে— এই বিষয়গুলিও জরুরি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement