Sabyasachi Mukherjee

ক্ষমা চাইছি, এ ভাবে বলতে চাইনি, ইনস্টাগ্রামে খোলা চিঠি সব্যসাচীর

সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের শাড়ি সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে প্রবল বিতর্কের মুখে পড়েন ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়। সব্যসাচীর বক্তব্যের পর বিতর্ক এবং সমালোচনার ঝ়়ড় ওঠে সব মহলে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৬:১০
Share:

ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়।

সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের শাড়ি সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে প্রবল বিতর্কের মুখে পড়েন ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়। সব্যসাচীর বক্তব্যের পর বিতর্ক এবং সমালোচনার ঝ়়ড় ওঠে সব মহলে। তাঁর বক্তব্যকে নারীবিদ্বেষী ও পুরুষতান্ত্রিক বলে গর্জে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া।

Advertisement

আর এ বার নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতেও সেই সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য নিলেন সেলিব্রিটি ডিজাইনার। ইনস্টাগ্রামে তিনটি খোলা চিঠির মাধ্যমে দুঃখপ্রকাশ করেন বি-টাউনের ফেভারিট সব্যসাচী।

খোলা চিঠির প্রথম ভাগে তিনি লিখেছেন, ‘‘শুরুতেই বলছি, আমাকে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলনে পড়ুয়াদের প্রশ্নের উত্তর দিতে মহিলাদের শাড়ি পরতে পারার বিষয়ে আমি ‘লজ্জা’ শব্দটি ব্যবহার করেছি। আমি অনুতপ্ত যে আমার কথা অনেকেরই নারীবিদ্বেষী, পুরুষতান্ত্রিক মনে করেছেন। আমার কথার উদ্দেশ্য অবশ্যই তা ছিল না।’’ এর পর সে দিনের প্রশ্নোত্তর পর্বের সেই বিশেষ অংশ তুলে দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

খোলা চিঠির দ্বিতীয় ভাগে তিনি লিখেছেন, ‘‘টানা ১৬ বছর ধরে আমি শাড়ি নিয়ে কাজ করছি। এই সময়ের মধ্যে বহু সর্বভারতীয় মঞ্চে, বিভিন্ন বয়সের, বিভিন্ন আয়ের মহিলাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শা়ড়ি পরার বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব দেখেছি। হার্ভার্ডে শাড়ির ঐতিহ্যের বিষয়ে কথা বলার সময় আমার মধ্যে জমে থাকা সেই হতাশাই প্রকাশ পেয়েছে। যা দুর্ভাগ্যবশত সব মহিলাদের প্রতি নির্দেশ করেছে। যারা শাড়ি পরতে চান এবং ভালবাসেন তাঁদের প্রতি ‘শেমিং’ বন্ধ হওয়ার উদ্দেশ্যে আমার বক্তব্য পেশ করা উচিত ছিল। ভারতীয় ঐতিহ্য এবং টেক্সটাইল আমাকে অসম্ভব টানে। আমি দুঃখিত যে, হতাশার বশে আমার এই টান আমি ভুল ভাবে ব্যক্ত করে ফেলেছি। আমি এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছি। যেই মহিলারা শাড়ি পরেন তাঁদের ব্যাপারে ‘আন্টি জি’ জাতীয় যে সব বডি শেমিং ব্যবহার করা হয় তা আমি অত্যন্ত নোংরা মনে করি। এই ভাবে তারা শাড়িকে ছোট করে দেখে। এই সব মন্তব্যের মাধ্যমে শাড়ি ও ভারতীয় ঐতিহ্যকে বিদ্রুপ করা হয়।’’

আরও পড়ুন: শাড়ি-বিতর্কে সব্যসাচী

খোলা চিঠির তৃতীয় ভাগে সব্যসাচী লিখেছেন, ‘‘আমার লেবেলে প্যাটার্ন মেকার, ডিজাইনার, পাবলিসিস্টস, আইটি কনসালট্যান্ট, ডিপার্টমেন্ট হেড, স্টোর ম্যানেজার প্রতিটা বিভাগেই মহিলারা রয়েছেন যারা সর্বোচ্চ বেতন পান। মহিলা বলে নন, তাঁরা এটা অর্জন করেছেন বলে। এঁরা প্রত্যেকেই এবং পুরুষরাও প্রত্যেক শুক্রবার সব্যসাচীর ভারতীয় পোশাক পরেন। ভারতীয় ঐতিহ্য এবং টেক্সটাইলকে উদযাপন করতে। আমার সে দিনের বক্তব্য ছিল সেই মহিলাদের উদ্দেশ্যে যারা শাড়ি পরতে পারেন না বলে গর্ব বোধ করেন এবং যারা শাড়ি পরেন সেই মহিলাদের বুড়ি, সেকেলে বলে কটাক্ষ করেন।’’

প্রসঙ্গত, হার্ভার্ড ইন্ডিয়া কনফারেন্সে ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের সব্যসাচী বলেন, ‘‘যদি কেউ আমাকে বলেন যে, আপনারা জানেন না কী ভাবে শাড়ি পরতে হয়, তা হলে বলব, আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত। এটা সংস্কৃতির অংশ। প্রত্যেকেরই উচিত নিজেদের সংস্কৃতির পাশে দাঁড়ানো।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন