জল খাওয়ার কথা মনে করাবে কে? ছবি: শাটারস্টক।
পর্যাপ্ত জলের অভাবে শরীরে বাসা বাঁধে নানা অসুখ। শরীরের চাহিদা মতো জল না খাওয়া যতটা সমস্যার, অতিরিক্ত জল খেয়ে ফেলাও তেমনই মুশকিলের। তাই শরীরের চাহিদা জেনে সেই অনুপাতে জল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু কাজের ফাঁকে খুব তেষ্টা না পেলে জল খাওয়ার কথা অনেকেরই মনে থাকে না। গরমের সময় জল খাওয়ার প্রবণতা থাকলেও শীত ও বর্ষায় জল খাওয়া আরও অনেক কমে যায়। এখন বর্ষাকাল। তাপমাত্রার পারদ কিছুটা হলেও নীচের দিকে। ফলে গ্রীষ্মের চেয়ে এই সময়ে তৃষ্ণার অনুভূতি খানিক কম থাকে। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে জলের অভাবে নানা শারীরিক সমস্যাও দেখা দেয়। সারা দিনের হাজার ব্যস্ততার মধ্যে জল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলবেন কী ভাবে?
দিনের শুরুটা হোক জল দিয়ে: দিনের শুরুটাই করুন জল দিয়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে চা-কফিতে চুমুক দেওয়ার আগে, দু’গ্লাস জল খেয়ে নিতে পারেন। এই অভ্যাস শরীর থেকে সব টক্সিক পদার্থ বার করে দিতে পারে, হজমশক্তি বাড়ায়।
সঙ্গী হোক জলের বোতল: হাতের কাছে জলের বোতল রাখার সুবিধা অনেক। কতটা জল কত ক্ষণে খেলেন, তারও একটা হিসাব মেলে এতে। তাই যেখানেই যান, হাতের কাছে বোতল রাখুন। অনেক সময় জল তেষ্টা পেলেও সামনে জলের জোগান না থাকায় খাওয়া হয় না। এই কৌশল সেই সমস্যা থেকে রক্ষা করে। দিনের বেশির ভাগ সময়টাই অনেকে অফিসে থাকেন। তাঁরা অফিস ডেস্কে একটি বড় মাপের বোতল কিনে রাখতে পারেন।
তরলেই ভরসা: জলের অভাব পূরণ করতে পারে স্বাস্থ্যকর তরলও। স্বাদবদলের কারণে বার বার জলের বদলে ডাবের জল, দইয়ের ঘোল, সব্জি বা ফলের রস, স্যুপও খেতে পারেন। এর ফলে স্বাদের সঙ্গে পুষ্টিগুণও মিলবে। তবে জলের বদলে নরম পানীয় কিংবা কোনও প্রকার এনার্জি ড্রিঙ্ক খাবেন না। এগুলিতে অতিরিক্ত মাত্রায় চিনি থাকে, যা উল্টে শরীরের ক্ষতি করে।
অ্যালার্ম: সব সময় না হলেও কোনও কোনও সময়ে জল খাওয়ার জন্য অ্যালার্ম সেট করুন। এতে জল খাওয়ার সময়ে কখনও ভুল হবে না। জল খাওয়ার কথা ভুলে গেলেও অ্যালার্মের মাধ্যমে মনে পড়বে তা।
অ্যাপ: আপনি কি টেক স্যাভি? তা হলে জল খাওয়ার কথা মনে রাখতেও প্রযুক্তির শরণ নিতেই পারেন। দিনে জল খাওয়ার কথা মনে করানো থেকে শুরু করে সারা দিনে কত পরিমাণ জল খাওয়া উচিত ছিল, আর কতটা খেলেন সে সব মেপে জানিয়ে দেবে, এমন অনেক অ্যাপ আছে। ব্যবহার করতে পারেন তেমন অ্যাপও।
জলের স্বাদবদল: সাধারণ জল খেতে ইচ্ছে না করলে ‘ডিটক্স ওয়াটার’-এ ভরসা রাখতে পারেন। আগের দিন রাতে জলের মধ্যে শসা, পুদিনা, পাতিলেবুর টুকরো রেখে দিন। পরের দিন ওই জল বোতলে ভরে অফিসে নিয়ে যেতে পারেন। অফিসে কাজের মাঝে ‘ডিটক্স ওয়াটার’-এ চুমুক দিতে থাকুন।
না বলতে মানা: কেউ যদি আপনার জন্য জল নিয়ে আসেন, তাঁকে কখনওই ফেরাবেন না। হোটেলে গিয়েই হোক কিংবা কারও বাড়িতে, কেউ যদি জল নিয়ে আসেন, তা হলে সেই জল খাওয়ার অভ্যাস শুরু করুন। সামনে কাউকে জল খেতে দেখলে আপনিও খানিকটা জল খেয়ে নিতে পারেন। জলে কখনও না বলবেন না।