ছানি কাটাতে গিয়ে দৃষ্টিশক্তি হারালেন ৫ জন

ছানি কাটার অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে দৃষ্টিশক্তি হারালেন পাঁচ বয়স্ক রোগী। গুয়াহাটির মহেন্দ্রমোহন চৌধুরি হাসপাতালে এই কাণ্ড ঘটেছে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্সকে সাসপেন্ড করে তদন্ত ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:২৫
Share:

ছানি কাটার অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে দৃষ্টিশক্তি হারালেন পাঁচ বয়স্ক রোগী। গুয়াহাটির মহেন্দ্রমোহন চৌধুরি হাসপাতালে এই কাণ্ড ঘটেছে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্সকে সাসপেন্ড করে তদন্ত ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সরকারি খরচে ওই পাঁচ রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে নকল চোখও লাগানো হয়। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট নন রোগীদের আত্মীয়েরা। তাঁদের দাবি, পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও দোষী চিকিৎসকের সাজা দিতে হবে।

Advertisement

ঘটনার শুরু শুক্রবার। সপ্তাহে ছ’দিন পানবাজারের মহেন্দ্রমোহন চৌধুরি হাসপাতালে বিনামূল্যে ছানি কাটা হয়। শুক্রবার মোট ২৭ জনের চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক বিন্দু শিঙলা। এদের মধ্যে গঙ্গারাম কলিতা (৭৫), ধর্মেশ্বর রামচিয়ারি (৬৫), পরবানু বিবি (৬৫), রূপচন্দ্র মণ্ডল (৬০) ও তারিণীকান্ত মেধি (৬২)-র চোখে ব্যথা হতে থাকে। অভিযোগ, তাঁদের কথায় পাত্তাই দেননি কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স। পরদিন তাঁরা বাড়ি ফিরে আসেন। যন্ত্রণা বাড়তেই থাকে।

সোমবার ফের ওই পাঁচ রোগী হাসপাতালে আসেন। চোখের অবস্থা দেখে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁদের একটি বেরসরকারি হাসপাতালে পাঠান। সেখানে ‘বিটা স্ক্যান’ করে দেখা যায় সকলের চোখেই মারাত্মক সংক্রমণ হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল ফের রোগীদের সরকারি হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে আরও দু’দিন পরীক্ষার পরে ডাক্তাররা জানান, সকলেরই অস্ত্রোপচার হওয়া চোখটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। সংক্রামিত চোখে আর দৃষ্টি ফিরবে না।

Advertisement

এই ঘটনায় গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ একটি তদন্ত কমিটি গড়েছে। কাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী নজরুল ইসলাম হাসপাতালে গিয়ে বিষয়টির খোঁজ নেন। তিনি চিকিৎসক বিন্দুদেবী ও অস্ত্রোপচারে সহকারী নার্সকে সাসপেন্ড করে পৃথক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব এম জি ভি কে ভানু বলেন, ‘‘বিভিন্ন কারণে চোখে সংক্রমণ হতে পারে। এর পিছনে ডাক্তার ও নার্সের অবহেলা থাকতে পারে, অন্য কারণেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। তদন্তে দোষী প্রমাণ হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের প্রকল্প অধিকর্তা পি অশোক বাবু সরকারি তদন্তে নেতৃত্ব দেবেন। গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ কাবুলচন্দ্র শইকিয়া জানান, চার সদস্যের তদন্তকারী দল নিয়ে তিনি এ দিন হাসপাতালে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখেছেন।

দৃষ্টিশক্তি হারানো ওই পাঁচ জনের আত্মীয়েরা হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে বলেন, ‘‘আরও ভাল দেখতে পাওয়ার আশায় সরকারি হাসপাতালে এসেছিলেন রোগীরা। বদলে পেলেন নকল চোখ। এর ক্ষতিপূরণ চাই। দোষী ডাক্তার ও নার্সদের শাস্তি দেওয়া হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন