রোগী-মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে ভাঙচুর ও চিকিৎসক, কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠল রোগীর পরিজনদের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে, ঘুসুড়ির টি এল জায়সবাল হাসপাতালের ঘটনা। হাসপাতালের তরফে বেলুড় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পাশাপাশি, পরিজনেরাও চিকিৎসায় গাফিলতির জেরেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশে আভিযোগ জানিয়েছেন।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত কাল দুপুরে বেলুড়ের অভয় গুহ রোডের বাসিন্দা সুবল শেঠ (৬২) প্রবল জ্বর, ফুসফুসে সমস্যা (সিওপিডি) ও পেটে যন্ত্রণা নিয়ে জায়সবাল হাসপাতালে ভর্তি হন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরেই চিকিৎসার গাফিলতি এবং অক্সিজেন সিলিন্ডারে গ্যাস ছিল না বলে অভিযোগ তুলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অরূপ দাসকে রাস্তায় ফেলে মারধর করেন সুবলবাবুর পরিজনেরা। হাসপাতালের তরফে দাবি, প্রাণে বাঁচতে দৌড়ে রাস্তায় পালিয়ে যান ওই চিকিৎসক।
হাসপাতালের কর্মীদের অভিযোগ, নার্স ও অন্য কর্মীদেরও মারধর করা হয়। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে অভিযোগে করে সুবলবাবুর ময়নাতদন্তের দাবিতে জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালান পরিজনেরা। পরিস্থিতি সামলাতে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আসে পুলিশ। অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গেও রোগীর পরিজনদের হাতাহাতি হয়। শেষে পুলিশকে মৃদু লাঠিচার্জ করতে হয়। অরূপবাবু বলেন, ‘‘গাফিলতির কোনও প্রশ্নই নেই। ওঁরা আমাকে অহেতুক হেনস্থা ও অপমান করেছেন।’’
সুবলবাবুর ছেলে মানিক শেঠের দাবি, ‘‘অক্সিজেন মাস্ক পরানো হলেও সিলিন্ডারে গ্যাস ছিল না। বিকেলে বাবার অবস্থা ভাল ছিল। তা হলে রাতে মারা গেলেন কি ভাবে? এটা খুন। তাই ময়নাতদন্ত করতেই হবে।’’ সারা রাত হাসপাতালে দেহ রেখে বসে থাকেন সুবলবাবুর পরিজনেরা। সোমবার পুলিশ তা বার করে আনে।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার তপন পালিতের দাবি, ‘‘অক্সিজেন সিলিন্ডার ফাঁকা ছিল না। এটা মিথ্যা অভিযোগ।’’ তিনি জানান, আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই রোগীকে ভর্তি করা হয়েছিল। বিকেলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনের সুবিধা রয়েছে এমন হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। তপনবাবুর আরও দাবি, ‘‘হাওড়া জেলা হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের জন্য চিকিৎসকেরা লিখে দিলেও ওই রোগীর বাড়ির লোকেরা তা করেননি।’’ তবে সুপারের দাবি অস্বীকার করেছেন সুবলবাবুর পরিজনেরা।