গ্রাফিক— আনন্দবাজার ডট কম।
ভাই-বোনেরা হল বিনা আয়াসে পাওয়া বন্ধু। সম্পর্ক রক্তের হোক বা মনের, তুতো হোক বা সহোদর-সহোদরা— এদের বাঁধনে কঠিন শর্ত কম। আপনি যেমনই হোন, ভাই-বোনেদের কাছে আপনি ‘কাছের মানুষ’। বিপদে পড়লেই হয়তো তাদের কাছে ছুটে যাওয়া হয় না। কিন্তু মনে মনে জানা থাকে, আর কেউ না থাকলেও এরা থাকবে। অসময়ে জান-প্রাণ লড়িয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার সুযোগ হয়তো সবাই পায় না। কিন্তু দেখা হলে মুখ দেখে প্রশ্ন করতে পারে, “কিছু হয়েছে?” বড় পরিবার ভেঙে ছোট হওয়ার পরে ভাই-বোনেদের একজোট হওয়ার সুযোগ কমেছে। কিন্তু অনুষ্ঠানে, উৎসবে আজও বহু পরিবারে কাকা-জ্যাঠা-পিসি-মাসি-মামার সন্তানেরা পরস্পরের দেখা পাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকে। একসঙ্গে মিলে চুটিয়ে আড্ডা দেয়। এ দেশে ভাই-বোনেদের দেখা হওয়ার দু’টি উৎসবের একটি ভাইফোঁটা, আর অন্যটি রাখিবন্ধন। এই দ্বিতীয় উৎসবটি দু’দিন পরেই। আগামী শনিবার, ৯ অগস্ট রাখিপূর্ণিমা। বিশেষ দিনে ভাই-বোনেদের সঙ্গে নিয়ে কয়েক ঘণ্টার আড্ডা দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলে মুখ চালানোর জন্য কী থাকবে? পরিকল্পনা করে ফেলুন এখনই।
ফুচকা
বাড়ি শহরে হোক বা শহরতলি, কিংবা কোনও গ্রাম। এক জন চেনা ফুচকাওয়ালা থাকবেনই, যেখানে ছোটবেলাতেও ফুচকা খেতে যেতেন। হয়তো একসঙ্গে নয়। কিন্তু প্রত্যেকেরই ওই ফুচকাওয়ালার সঙ্গে কোনও না কোনও স্মৃতি জুড়ে আছে। তেমন কোনও ফুচকাওয়ালার কাছে ফুচকা খেতে যাওয়া যেতে পারে রাখি উদ্যাপনের সন্ধ্যায়। পুরনো, নতুন গল্প মিলিয়ে অন্য অভিজ্ঞতা তৈরি হবে।
তেলেভাজা-পকোড়া
বর্ষার যে কোনও সন্ধ্যাতেই সঙ্গী হতে পারে মুচমুচে চপ, তেলেভাজা-পকোড়া। রাখির দিনই বা তারা বাদ যায় কেন! বাড়িতে আড্ডা বসলে গরম চায়ের সঙ্গে থাক এলাকার জনপ্রিয় তেলেভাজার দোকান থেকে কিনে আনা চপ-শিঙাড়া-পকোড়া। যার সঙ্গে হয়তো জুড়ে রয়েছে ছোটবেলার স্মৃতি। সঙ্গে মুড়িমাখা থাকলে তো কথাই নেই। ঘরোয়া আড্ডায় রং লাগবে নস্ট্যালজিয়ার।
পিৎজ়া
ভাই-বোনেদের খাবার ভাগ করে খেতে শেখানো হয় এ দেশে। সেই ভাগ নিয়ে ছোটবেলায় ঝগড়াঝাঁটি কিংবা অভিমানও হয়নি কি? বড়বেলায় সেই ঝুঁকি না থাকলেও ভাগাভাগির ঝক্কি এড়াতে অর্ডার করতে পারেন পিৎজ়া। এ খাবারের সুবিধা হল, এটি দোকান থেকেই ভাগ হয়ে আসে। তবে তা ছাড়াও পিৎজ়া আধুনিক প্রজন্মের আড্ডার সুস্বাদু অনুষঙ্গ হিসাবেও জনপ্রিয়।
রোল
চাউমিন-চিলি চিকেন, বিরিয়ানি-চাঁপের রমরমা যখন হয়নি তখন একা এগরোলই ছিল বাঙালির পছন্দের ‘জাঙ্ক ফুড’। বাইরে বেরিয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার যে ‘গিল্টি প্লেজ়ার’, তা হয় রোল খেলে। এলাকার পছন্দের রোলের দোকানে সদলবলে চড়াও হোন সে দিন। কলকাতায় হলে পার্ক স্ট্রিটের হট কাঠি রোল হতে পারে ঠিকানা। অবশ্য এখন নানা ধরনের ফিউশনও রোল পাওয়া যায়। সে সবও খেতে পারেন।
মোমো
ভাই-বোনেরা যদি পাহাড়প্রেমী হন, তবে আড্ডায় থাকুক পাহাড়ি খাবার মোমো। যে কোনও আড্ডায় ফিঙ্গার ফুড সবচেয়ে জমাটি। অর্থাৎ যে খাবার দু’আঙুলে ধরে খাওয়া যায়। মোমোও সেই পর্যায়ে পড়ে। ঝাল ঝাল চাটনি সহযোগে মোমোতে যেমন তেলমশলা কম, তেমন সুস্বাদুও। তা ছাড়া কে বলতে পারে, পাহাড়ি খাবার খেতে খেতে দার্জিলিং কিংবা কোনও পাহাড়ি গ্রামে দু’দিনের বেড়ানোর প্ল্যানই করে ফেললেন সকলে মিলে!
ফ্রায়েড চিকেন
ওপরে মুচমুচে আর ভিতরে রসালো। ভাই-বোনের বন্ধুত্বও তো সে রকমই। তবে হাতের কাছে একটি কাগজের পাত্রভরা ফ্রায়েড চিকেন থাকলে এত ভাবনাচিন্তার অবকাশ থাকে না। থমকে যায় আড্ডাও। তবে যে ভাল লাগাটুকু থাকে, তার সঙ্গে স্বাদে পাল্লা দেওয়ার ক্ষমতা কম খাবারেরই আছে।
আইসক্রিম
সামনে পুজো, তাতে কী? রাখি উপলক্ষে ডায়েটিংয়ের নিয়ম এক দিন ভাঙা যেতেই পারে। এখন তো পাড়ায় পাড়ায় আইসক্রিম পার্লার। তেমন একটি বেছে নিয়ে ঢুকে পড়ুন সবাই মিলে। আবার চাইলে আইসক্রিমের সাদা-লাল ঠেলাগাড়ি দাঁড় করিয়ে মেনু কার্ড মিলিয়ে এক এক জন এক এক রকমের আইসক্রিম অর্ডার করতে পারেন।